খুচরো দিচ্ছেন ডাককর্মীরা। করিমপুরে। — নিজস্ব চিত্র
কানাঘুষোয় কথাটা শোনা যাচ্ছিল সকাল থেকে।
‘‘ধুস, এমনটা আবার হয় নাকি!’’ রিকশা থেকে সব্জি নামাতে নামাতে বলছিলেন করিমপুরের এক ব্যবসায়ী।
‘‘কী বলছেন মশাই! সত্যিই যদি এমনটা হয়, তাহলে বড় উপকার হবে।’’ শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে মন্তব্য এক প্রৌঢ়ের।
বুধবার দুপুরে সবাইকে চমকে দিয়ে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে এসে রোগীদের পাঁচশো ও এক হাজার টাকার নোট খুচরো করে দিলেন কৃষ্ণনগর মুখ্য ডাকঘরের কর্মীরা। বিকেলে করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালের রোগী ও বাজারের ব্যবসায়ীদেরও একই ভাবে টাকা
খুচরো করে দিয়েছেন করিমপুর ডাকঘরের কর্মীরা।
দিনকয়েক আগে ব্যক্তিগত উদ্যোগে চাপড়া গ্রামীণ হাসপাতালে গিয়ে রোগীদের এ ভাবেই টাকা খুচরো করে দিয়ে এসেছিলেন কৃষ্ণনগর মুখ্য ডাকঘরের কর্মী রাজু পাত্র। কিন্তু এ দিন ডাকঘরের কর্মীরা যে ভাবে হাসপাতাল ও বাজার ঘুরে টাকা খুচরো করে দিলেন তাতে রীতিমতো অবাক এলাকার লোকজন।
শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পাত্রবাজারের বাসিন্দা খাইরুল শেখ, করিমপুরের সব্জি ব্যবসায়ী রাজ্জাক শেখরা সমস্বরে বলছেন, ‘‘অবাক হব না? সকলের কাছে পাঁচশো ও এক হাজারের নোট। সে টাকা থাকার থেকে না থাকাই ভাল। ব্যাঙ্ক, ডাকঘরে দিনভর লাইনে দাঁড়িয়েও খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। সেই ডাকঘরের লোকজনই কি না এখন আমাদের কাছে এসে পাঁচশো-হাজারের নোট খুচরো করে দিচ্ছেন!’’
ডাক বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত ৫৭ জনকে প্রায় ৭৯ হাজার টাকা বদলে দেওয়া হয়েছে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেও একই ভাবে ক্যাম্প করে টাকা বদলে দেওয়া হবে। কোনও সরকারি নির্দেশিকা ছাড়া নিজেদের উদ্যোগে এমনটা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষ্ণনগর মুখ্য ডাকঘরের কর্মীরা।
করিমপুর উপ ডাকঘরের আধিকারিক সুখেন্দু বিকাশ নাথও জানান, একই ভাবে তাঁরাও স্থানীয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, বাজার ব্যবসায়ী সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের সহযোগিতায় রোগী ও স্থানীয় ছোট ব্যবসায়ী মিলিয়ে মোট ৩৫ জনকে প্রায় চল্লিশ হাজার টাকা খুচরো করে দেওয়া হয়েছে।
পড়শি জেলা, মুর্শিদাবাদে দিনকয়েক ধরে বেশিরভাগ ডাকঘরে কোনও টাকা পাচ্ছিলেন না গ্রাহকেরা। তবে সোমবার থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলে দাবি ডাক বিভাগের। জেলার ডাক অধিকর্তা জয়ন্ত ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘নদিয়া জেলার কথা শুনেছি। কিন্তু মুর্শিদাবাদ অনেক বড় জেলা হওয়ায় কিছু সমস্যা রয়েছে। তবে সমস্ত গ্রামীণ ডাকঘরগুলিতে লেনদেন স্বাভাবিক হয়ে গেলে আমরাও চেষ্টা করব জরুরি জায়গায় এ ধরনের পরিষেবা পৌঁছে দিতে।’’
এ দিন বিকেলে দু’টি পাঁচশো টাকার নোট খুচরো করতে পেরে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন সাহেবপাড়া থেকে করিমপুর হাসপাতালে আসা জেকের মণ্ডল ও জানেরা বিবি। তাঁদের
কথায়, “খুচরোর জন্য ক’দিন ধরে ওষুধ ও খাবার কিনতে খুব অসুবিধা হচ্ছিল। এ দিন খুচরো তো নয়, হাতে যেন চাঁদ পেলাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy