Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪
West Bengal Panchayat Election 2023

মুর্শিদাবাদে সিপিএম নেতা আক্রান্ত, কংগ্রেস প্রার্থীকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করানোর অভিযোগ

মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে মুর্শিদাবাদের জায়গায় জায়গায় অশান্তির খবর। কোথাও সিপিএম নেতাকে মারধরের অভিযোগ, কোথাও কংগ্রেস নেতাকে ভয় দেখানোর অভিযোগ শাসকদলের বিরুদ্ধে।

Political Row over Nomination withdraw allegation against TMC in Murshidabad

আক্রান্ত সিপিএম নেতা (বাঁ দিকে)। কংগ্রেস প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার করানোয় বিডিও অফিসের সামনে উত্তেজনা (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
হরিহরপাড়া ও শমসিরগঞ্জ শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০২৩ ১৭:২০
Share: Save:

মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে মুর্শিদাবাদে বিরোধী প্রার্থীদের উপর ‘চাপ’ দেওয়ার অভিযোগ উঠল শাসকদলের বিরুদ্ধে। হরিহরপাড়ায় সিপিএম প্রার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। শমসেরগঞ্জে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কংগ্রেস প্রার্থীকে জোর করে প্রার্থিপদ প্রত্যাহারের অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অন্য দিকে, বড়ঞায় কংগ্রেস প্রার্থীর হাত থেকে ফর্ম ভর্তি ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।

স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার রাতে সিপিএম হুমাইপুর অঞ্চল কমিটির সভাপতি কামরুজ্জামান শেখ তাঁর এক আত্মীয়কে নিয়ে তাজপুর থেকে মহিষমারার দিকে যাচ্ছিলেন। অভিযোগ, হুমায়পুর অঞ্চলের রামপাড়া এলাকায় কামরুজ্জামানকে রাস্তায় আটকে মারধর করা হয়। আক্রান্তের অভিযোগ, হুমায়পুর অঞ্চলে সাতটি সিপিএম প্রার্থিপদ প্রত্যাহারের জন্য তাঁকে চাপ দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি তা অস্বীকার করায় তাঁর উপর চড়াও হন তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। যদিও এই হামলার ঘটনায় কোনও ভাবেই শাসকদল যুক্ত নয় বলে দাবি হরিহরপাড়া ব্লক তৃণমূলের। ব্লক তৃণমূল সভাপতি আতাবউদ্দিন শেখের অভিযোগ, ‘‘রাজনৈতিক নয়, ব্যক্তিগত আক্রোশের জেরেই স্থানীয়রা এই হামলা করেছেন।’’

আহত সিপিএম কর্মী কামরুজ্জামান শেখকে বহড়ান প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় চিকিৎসার জন্য। হরিহরপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন আহত কামরুজ্জামান। তাতে তিনি কয়েক জন তৃণমূল নেতার নাম করেছেন।

অন্য দিকে, মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জ ব্লকের গাজিনগর মালঞ্চা গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০৯ নম্বর বুথের কংগ্রেস প্রার্থী মিস্টার শেখকে জোর করে বিডিও অফিস তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে কংগ্রেসের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে। খবর ছড়াতেই বিডিও অফিসে পৌঁছে যান কংগ্রেস নেতাকর্মীরা। সেখানে তৃণমূল এবং কংগ্রেসের মধ্যে চলে বিতণ্ডা। পুলিশের শীর্ষকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছেন। কংগ্রেসের অভিযোগ, বিডিও অফিসে বসে তৃণমূল নেতারা তাদের প্রার্থীকে জোর করে মনোনয়ন প্রত্যাহার করার জন্য ফর্ম পূরণ করিয়েছেন। তবে তৃণমূলের যুক্তি, ‘ভুল বুঝতে পেরে’ মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে চাইছেন কংগ্রেস প্রার্থী। জঙ্গিপুরের তৃণমূল সংসদ খলিলুর রহমান বলেন, ‘‘প্রার্থী হতে চাওয়া যদি গণতান্ত্রিক অধিকার হয়, তবে প্রত্যাহার করতে চাওয়াযও সেই অধিকারের মধ্যে পড়ে।’’ কংগ্রেসের তরফে আইসিসির সদস্য অমিত তিওয়ারির দাবি, ‘‘আমাদের প্রার্থীকে বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে এসে বিডিও অফিসের ভিতরে ঢুকিয়ে জোর করে মনোনয়ন প্রত্যাহার করানো হচ্ছে।’’ শেষ পর্যন্ত পাওয়া খবরে ওই কংগ্রেস প্রার্থী বর্তমানে পুলিশের ঘেরাটোপে আছেন। এই সমস্ত অভিযোগ প্রসঙ্গে মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার সুপার সুরিন্দর সিংহ বলেন, ‘‘অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।’’

এর মধ্যে দলীয় প্রার্থীদের প্রতীক নিশ্চিতকরণের ‘বি-ফর্ম’ জমা দিতে যাওয়ার সময় কংগ্রেস মহকুমা সভাপতির হাত থেকে ফর্ম ভর্তি ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠল দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। ফর্ম ছিনতাইকারীরা প্রত্যেকেই তৃণমূল আশ্রিত বলে দাবি কংগ্রেসের। বাধা দিতে গেলে আক্রান্ত হন বড়ঞা কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি এবং মহকুমা সভাপতি। এই ঘটনার প্রতিবাদে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশবাহিনী।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE