ছবি: সংগৃহীত
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে বহরমপুর পুরসভার চূড়ান্ত আসন সংরক্ষণের তালিকা প্রকাশ পেয়েছিল। সেই সংরক্ষণের গেরোয় উদ্বাস্তু হয়েছেন শাসক-বিরোধী সব দলের একাধিক কাউন্সিলর। আর তাঁদের পূনর্বাসন দিতে বিকল্প ওয়ার্ডের খোঁজ শুরু করেছে রাজনৈতিক দলগুলি। কাউকে কাউকে পড়শি ওয়ার্ডে প্রার্থী করার কথা যেমন ভাবা হচ্ছে, তেমনই কোনও কোনও কাউন্সিলের স্ত্রী বা স্বামীকে প্রার্থী করার কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। আর সেখানেই গেরো। বড় নেতার স্ত্রীকে জায়গা ছাড়তে নারাজ সেই ওয়ার্ডের নেতারা। সব দলেই এই সমস্যা রয়েছে। সম্প্রতি মহিলা কংগ্রেসের সভায় সেই ক্ষোভ সরাসরিই ফুটে উঠেছিল। অনেকেই বলেছিলেন, সারা বছর কাজ করেন যাঁরা, তাঁদের বাদ দিয়ে নেতাদের স্ত্রীদেরই প্রার্থী করা হয়!
তার সঙ্গে রয়েছে, স্বচ্ছ ভাবমূর্তির প্রার্থীর খোঁজ। অনেক নতুন মুখ ভোটে লড়বেন বলে আবেদন করেছেন। তাঁদের থেকে ভাবমূর্তি ভাল বলে কাউকে যদি বেছে নিতে হয়, তা হলে পুরনো কাউন্সিলরের জায়গা হবে না।
তবে এখনই প্রার্থী তালিকা নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ রাজনৈতিক দলগুলি। তাদের বক্তব্য, পূর্বতন বোর্ডের কাউন্সিলরদের দল অবশ্যই সম্মান জানাবে। তবে পুরভোটে প্রার্থী হওয়া নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
বহরমপুর শহর তৃণমূলের সভাপতি নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রার্থী হতে চেয়ে অনেকেই আবেদন করেছেন। সেই তালিকায় পূর্বতন বোর্ডের কাউন্সিলর যেমন রয়েছে, তেমনই সাধারণ মানুষও রয়েছে। সব কিছু দেখে প্রার্থী তালিকা ঠিক করা হবে।’’
গত পুর নির্বাচনে শহরের তিন নম্বর ওয়ার্ড থেকে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হয়েছিলেন কানাই রায়। এ বারে সেই ওয়ার্ড মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। তাঁকে পড়শি ৫ নম্বর ওয়ার্ডে টিকিট দেওয়ার ভাবনা চিন্তা হচ্ছে বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে। শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর হলেন শম্ভু ভকত। এ বারে ওই ওয়ার্ড মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। এবারে সেই ওয়ার্ডে শম্ভু স্ত্রীকে দাঁড় করাতে পারেন বলে দলে কানাঘুষো চলছে। ৮ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের কাউন্সিলর হলেন অপর্ণা শর্মা। ওই ওয়ার্ডটি তফসিলি জনজাতির মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। ফলে তিনি এ বারে সেই ওয়ার্ড থেকে লড়তে পারবেন না। তাঁর পড়শি ৭ নম্বর ওয়ার্ডে টিকিট মিলতে পারে।
দীর্ঘ দিন ধরে শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন পূর্বতন বোর্ডের চেয়ারম্যান তৃণমূলের নীলরতন আঢ্য। ২০১৩ সালে সেই ওয়ার্ড সংরক্ষিত হওয়ায় ১০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তিনি লড়াই করেছিলেন। এ বারে ১০ নম্বর ওয়ার্ড তফসিলি জনজাতির জন্য এবং ১১ নম্বর ওয়ার্ড মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। ফলে তিনি তাঁর পুরনো দু’টি ওয়ার্ড থেকে লড়তে পারবেন না। অন্য দিকে দলের সঙ্গে তাঁর মতবিরোধ শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তিনি কোন ওয়ার্ড থেকে লড়াই করেন, সেটাই দেখার।
অন্য দিকে শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে গত পুরভোটে লড়াই করে কংগ্রেস প্রার্থী হিরু হালদার হেরে গিয়েছিলেন। এ বারে সেই ওয়ার্ড মহিলাদের জন্য সংরক্ষণ হয়েছে। ফলে সেখান থেকে তিনি লড়তে পারবেন না। শহর কংগ্রেস সূত্রের খবর, হিরু হালদার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হতে চেয়ে দলের কাছে আবেদন করেছেন। ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেসের কাউন্সিলর সমর হাজরা। এ বারে সেই ওয়ার্ড মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। ২৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী হয়েছিলেন মইনুদ্দিন চৌধুরী ওরফে বাবলা। এ বারে সেই ওয়ার্ড মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। ফলে তাঁকে পড়শি কোনও ওয়ার্ড থেকে লড়াই করতে হবে। কংগ্রেস সূত্রের খবর মইনুদ্দিন চৌধুরী ও সমর হাজরা প্রার্থী হতে চেয়ে আবেদন করলেও কোনও ওয়ার্ডের কথা উল্লেখ করেননি। বহরমপুর শহর কংগ্রেসের সভাপতি কার্তিকচন্দ্র সাহা বলেন, ‘‘অধীর চৌধুরী কাউন্সিলরদের কথা ভাবছেন। কে কোথায় প্রার্থী হবেন, তা তিনি সময় মতো প্রকাশ করবেন।’’
শহরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী হয়েছিলেন কাঞ্চন মৈত্র। এবারে সেই ওয়ার্ড মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। কাঞ্চন কংগ্রেস থেকে ২০১৬ সালে তৃণমূলে নাম লিখিয়েছিলেন। ২০১৯ সাল থেকে তিনি বিজেপিতে রয়েছেন। সংরক্ষণের গেরোয় এবারে তিনি নিজের পুরনো ওয়ার্ড থেকে দাঁড়াতে পারবেন না। কাঞ্চন পড়শি ২৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে লড়াই করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কাঞ্চন বলেন, ‘‘২৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে এ বারে লড়াই করব বলে দলকে জানিয়েছি। দল অনুমোদন দিলে সেখান থেকে লড়াই করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy