Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
Ranaghat Murder

জোড়া খুনে ধরা পড়েনি কেউই

নিহত গাড়ির চালক রূপমের দাদা রূপক দাস বলেন, ‘‘ঘটনার দিন দুপুর ১২টা নাগাদ ভাইয়ের সঙ্গে শেষ বার ফোনে কথা হয়।

নির্মিয়মান এই বাড়িতেই ঘটে জোড়া খুনের ঘটনা।শুক্রবার। রানাঘাটের আনুলিয়াতে।

নির্মিয়মান এই বাড়িতেই ঘটে জোড়া খুনের ঘটনা।শুক্রবার। রানাঘাটের আনুলিয়াতে। ছবি:সুদেব দাস।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রানাঘাট শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪ ১০:৪১
Share: Save:

ভারী কিছু দিয়ে মাথায় একাধিক আঘাতের পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে শরীরে বিভিন্ন জায়গায় স্পিরিড ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় আততায়ীরা। মৃতদেহ ময়না-তদন্তের পর রানাঘাটে জোড়া খুনের ঘটনায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে। তবে খুনের ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও অধরা দুষ্কৃতীরা। খুনের কারণ নিয়েও শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশের তরফে নিশ্চিত করে কিছু জানানো হয়নি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার রানাঘাট থানার আনুলিয়া মনসাতলা এলাকায় একটি নির্মীয়মাণ বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় সুমন চক্রবর্তী (৪০) ও রূপম দাস (৩৮)-এর রক্তাক্ত দেহ। সুমন রানাঘাট শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তিনি জমি, বাড়ি কেনাবেচার কাজ করতেন। রূপম ছিলেন সুমনের গাড়ির চালক। তাঁর বাড়িও ওই একই ওয়ার্ডে। মৃত সুমনের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ বাড়ি থেকে বার হন তিনি। দুপুর থেকে তাঁর সঙ্গে আর ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। যদিও স্বামীর মৃত্যুর পর সংবাদ মাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাননি সুমনের স্ত্রী।

নিহত গাড়ির চালক রূপমের দাদা রূপক দাস বলেন, ‘‘ঘটনার দিন দুপুর ১২টা নাগাদ ভাইয়ের সঙ্গে শেষ বার ফোনে কথা হয়। ভাইয়ের সঙ্গে কারও কোনও শত্রুতা ছিল না। ও সুমনের গাড়ি চালাত। হতে পারে সুমনকে খুনের ঘটনা ভাই দেখে ফেলেছিল। সে কারণে প্রমাণ লোপাটের জন্য ভাইকে খুন করা হয়েছে।’’

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যে নির্মীয়মাণ বাড়ি থেকে দেহ দু’টি উদ্ধার করা হয়েছে, সেখানে মাঝেমধ্যেই যাতায়াত ছিল সুমনের। তিনি যে ওই দিন দুপুরে সেখানে যাবেন, তা ঘনিষ্ঠ মহলের অনেকে জানতেন। পরিকল্পনামাফিক খুন করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, খুনের পর আততায়ীরা সব তথ্য প্রমাণ সন্তর্পণে লোপাট করেছে। অকুস্থল থেকে তেমন কিছুই মেলেনি বলে দাবি তদন্তকারীদের।

নির্জন ওই এলাকায় থাকা বাড়িতে মৃতদেহ পড়ে থাকার খবর পুলিশ জানল কী ভাবে?

সূত্রের খবর, ঘটনার দিন সন্ধ্যা নাগাদ রানাঘাট শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের পুর-প্রতিনিধি বিজন সরকারের ফোনে একটি অচেনা নম্বর থেকে ফোন করে বলা হয়, ওই বাড়িতে সুমন ও তাঁর গাড়ির চালকের রক্তাক্ত দেহ পড়ে রয়েছে। বিজন বলেন, ‘‘সুমন আমার ঘনিষ্ঠ। অচেনা নম্বর থেকে ফোন করে দেহ পড়ে থাকার কথা জানানো হয়। তার পরেই ফোন কেটে যায়। পরে একাধিকবার ওই নম্বরে আমি যোগাযোগের চেষ্টা করি। ফোন কেউ তোলেনি। তার পরে বিষয়টি পুলিশকে জানাই।’’

পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, সন্ধ্যা নাগাদ দেহ দু’টি উদ্ধার হলেও ময়না-তদন্তের রিপোর্ট বলছে খুনের সময় বেলা তিনটের আশেপাশে। খুনের পর ব্যবসায়ীর গলায় থাকা সোনার চেন, হাতে আংটি, টাকার ব্যাগ ও মোবাইল নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘দু’টি খুনের ঘটনায় একটিই অভিযোগ দায়ের হয়েছে। মৃত সুমনের স্ত্রী ওই অভিযোগ দায়ের করেছেন। সেই অভিযোগ পত্রে সন্দেহজনক এক ব্যক্তি ও তার দলবলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Ranaghat Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE