প্রতীকী ছবি।
বাংলা আবাস যোজনার টাকায় রেলের জমিতেই পাকাপোক্ত ঘর তুলেছিলেন চার উপভোক্তা। লকডাউনের আড়ালে প্রশাসনের অগোচরে ছাদ ঢালাইয়ের কাজও শেষ হয়ে গিয়েছিল নিশ্চুপে, খবর পেয়ে মাঞ্জুরা বেওয়া, রমজান শেখ, বশির শেখ এবং রাবিয়া বিবির সদ্য তৈরি সেই ঘর ভেঙে দিল রেল কর্তৃপক্ষ।
প্রশ্ন উঠেছে, রেলের জমিতে সরকারি প্রকল্পের টাকায় ঘর তৈরির ছাড়পত্র তারা পেলেন কী করে? সেই প্রশ্নের সূত্র ধরে কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে বেরিয়ে পড়েছে সাপ! অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) সুদীপ্ত পোড়েল যা শুনে বলেন, “ভুল নথি দেখিয়ে সরকারকে বিভ্রান্ত করে যারা রেলের জমিতে নির্মাণ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বুধবার, বহরমপুরের তালবাগানে রেলের জমিতে অবৈধ ওই নির্মাণ গুঁড়িয়ে দিয়ে পূর্ব রেলের ইঞ্জিনিয়ারিং শাখার আধিকারিক শশীরঞ্জন সিংহ স্পষ্ট করে দিয়েছেন, “লকডাউনের মধ্যে এই পাকা বাড়িগুলো তৈরি হয়েছিল। কোন প্রকল্পের টাকায় ওই পাকা নির্মাণ হয়েছিল জানি না, তবে রেলের জমিতে এমন নির্মাণ বৈআইনি। তাই ভেঙে দেওয়া হল।’’
চুপিসাড়ে রেলের ওই জমিতে যে নির্মাণ হচ্ছে তার খবর কানে আসার পরে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে বেশ কয়েক বার নালিশ জানিয়েছিল রেল। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রশাসন থেকে জেলা পরিষদ— অভিযোগ জানানো হয়েছিল সব স্তরেই। কিন্তু কাজ হয়নি। এ দিন তাই রেল পুলিশের সহয়ায়তায় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বাড়িগুলি।
নিজের কেনা কিংবা পৈতৃক সূত্রে পাওয়া জমি ছাড়া বাংলা আবাস যোজনার টাকা অনুমোদনের রেওয়াজ নেই। এখন প্রশ্ন, উপভোক্তারা রেলের জমির নথি দেখিয়ে ওই যোজনার টাকা পেলেন কী করে? অন্যতম উপভোক্তা মঞ্জুরা বিবির দাবি, “স্বনির্ভর গোষ্ঠীর দেওয়া ঋণের টাকায় আমরা ওই ঘর তৈরি করেছিলাম।’’ কিন্তু স্বনির্ভর গোষ্ঠী পাকা নির্মাণের জন্য অনুদান দেয় না। স্থানীয় ভাকুড়ি পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলের রিজিয়া বেগম ওই উপভোক্তাদের পাশে দাঁড়িয়ে বলছেন, ‘‘স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অনুদানের টাকাতেই ব্যবসা করে লাভের টাকায় ঘর তুলেছিলেন ওঁরা।’’
তবে, ভাকুড়ির স্বনির্ভর গোষ্ঠী ‘শুভেচ্ছা সঙ্ঘ বহুমুখী মহিলা সমবায় সমিতি’র পক্ষে স্বপ্না চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের কাছ থেকে গৃহ নির্মাণের জন্য ঋণ পেতে পারে না ওরা।’’ বরং ভাকুড়ি ১ পঞ্চায়েত থেকে ২০১৯-২০ সালে বাংলা আবাস যোজনায় যে ৬৬ জন উপভোক্তাকে অনুদান দেওয়া হয়েছে তাতে ওই চার জনেরই নাম রয়েছে। রেলের জমির নথি দেখিয়ে তারা কী করে ওই সরকারি যোজনার টাকা পেলেন কী করে সে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার তৃণমূল নেতা যুগল হালদার। তিনি এ ব্যাপারে স্থানীয় পঞ্চায়েতের দিকে আঙুল তুলেছেন। একই অভিযোগ করেছেন জেলা মহিলা কংগ্রেস সভানেত্রী মৌসুমী বেগম। তিনি বলেন, “সরকারি জমি দিয়ে গরীব মানুষদের সঙ্গে বঞ্চনা করেছে স্থানীয় পঞ্চায়েত। বহরমপুরের বিডিও অভিনন্দন ঘোষ বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি। সরকারি জায়গায় ওই বাড়ি তৈরির টাকা ওরা পেলেন কী করে, তা তদন্ত করে দেখা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy