রত্না সরকার। নিজস্ব চিত্র
মৃতদেহ উদ্ধারের এক দিন পরও ফ্ল্যাটবাড়িতে বৃদ্ধার মৃত্যু রহস্যের কিনারা করতে পারল না পুলিশ। এটা আত্মহত্যা বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হলেও বৃদ্ধাকে যে খুন করা হয়নি তা জোর দিয়ে বলতে পারছেন না তদন্তকারীরা। মঙ্গলবার শক্তিনগর পুলিশ মর্গে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। তার রিপোর্টের উপরেই তদন্তের গতিপ্রকৃতি নির্ভর করছে।
কৃষ্ণনগরের জনবহুল পোষ্ট অফিস মোড় সংলগ্ন চারতলা ফ্ল্যাট বাড়ির দোতলায় একা থাকতেন অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষক, রত্না সরকার (৭১)। অবিবাহিত, আত্মীস্বজনের সঙ্গেও খুব একটা যোগাযোগ ছিল না। একাই থাকতেন। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, বিশেষ কাউকে যাতায়াত করতে দেখা যেত না। বাজার থেকে শুরু করে সব কাজ তিনি নিজেই করতেন। কোনও পরিচারিকাকেও আসা-যাওয়া করতে দেখেননি কেউ। সোমবার সেই ফ্ল্যাটে পাখার ব্লেড থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় মেলে বৃদ্ধার পচন ধরা দেহ।
ওই ফ্ল্যাটবাড়ির বাসিন্দা অর্চনা লাহা বলছেন, “প্রায় ১৫ বছর ধরে ওঁকে দেখছি। প্রথম দিকে ওঁর সঙ্গে এক বৃদ্ধ আত্মীয়া থাকতেন। সাত-আট বছর ধরে তাঁকেও আর দেখিনি।” তবে তাঁর খটকা, “উনি আত্মহত্যা করেছেন বলে তো মনে হচ্ছে না। পুরোটাই কেমন যেন অস্বাভাবিক।” কী রকম? অর্চনা লাহার ছেলে সৌদীপ বলেন, “দরজা খোলার সময়ে আমি প্রথম থেকেই হাজির ছিলাম। কোলাপসিবল গেটে বাইরের দিক দিয়ে তালা দেওয়া ছিল। ঘরের দরজা ভেজানো ছিল। যিনি একা থাকবেন, তিনি তো নিজের নিরাপত্তার কারণেই দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করবেন! যে ঘরে মৃতদেহটি পাখা থেকে ঝুলছিল, সেই ঘরের দরজাও ভেজানো ছিল।” কেউ তাঁকে খুন করে পরপর দু’টি দরজা ভেজিয়ে কোলাপসিবল গেটে তালা দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল কি না, সেই প্রশ্নও অনেকের মনে ঘুরছে।
তবে প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ দাবি করেছে, যে ঘর থেকে মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে, সেটির দরজা বন্ধ ছিল না। ওই ঘরে একটি ছোট খাট আছে। সেটির উপর দাঁড়িয়েই তিনি পাখার ব্লেডে কাপড়ের ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়ে থাকতে পারেন, সেই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। একাকীত্বের হতাশায় বৃদ্ধা আত্মঘাতী হয়ে থাকতে পারেন। তবে কোলাপসিবল গেটের তালা যে বাইরে থেকে লাগানো ছিল এবং দরজা ভেজানো ছিল, এটাই ধন্দে ফেলছে। বৃদ্ধার ভগ্নিপতি বাণেশ্বর গুহ বলেন, “উনি আমাদের সঙ্গে বিশেষ যোগাযোগ রাখতেন না। মাঝে-মধ্যে কথা হলেও কথাবার্তায় হতাশার সুর শুনিনি। তবে একা থাকলে অবসাদ আসাটাও অস্বাভাবিক নয়।” তাঁরাও আপাতত ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy