Advertisement
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Heroin

নজর এড়িয়ে পাহাড় চূড়ায় পোস্ত চাষ! বাংলার সঙ্গে ঝাড়খণ্ডের ‘মাদক-যোগে’ মিলল নয়া রহস্যের খোঁজ

নদিয়া ও ঝাড়খণ্ড রাজ্যের মধ্যে মাদক পাচার চক্রের খোঁজ মিলেছে আগেই। ওই চক্রের খোঁজে বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের জেরা করে মিলল নতুন তথ্য।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
তেহট্ট শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:০১
Share: Save:

পাহাড়ের পটভূমিকায় একের পর এক রহস্যের জট ছাড়িয়েছেন সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদা। কখনও দার্জিলিঙে, কখনও গ্যাংটকে, কখনও কাশ্মীরে, কখনও কাঠমান্ডুতে তো কখনও কেদারনাথের পাহাড়ে উন্মোচিত হয়েছে নতুন নতুন রহস্য। তবে ঝাড়খণ্ডের পাহাড়ে এমন দুষ্টচক্র অজানা ছিল ফেলুদার। আন্তঃরাজ্য হেরোইন পাচার চক্রের রহস্য খুঁজতে গিয়ে ঝাড়খণ্ডের পাহাড়ি ঢাল থেকেই পাওয়া গেল নতুন রহস্য। এ রাজ্যের নদিয়ার মাদক কারবারিদের সঙ্গে আগেই পুলিশ যোগ পেয়েছে ঝাড়খণ্ডের। এ বার সেই তদন্তেই উঠে এল কী ভাবে ঝাড়খণ্ডের চক্রধরপুরে খুঁটি পাহাড়ের চূড়ায় চলছিল অবৈধ ভাবে পোস্তর চাষ। হেরোইন পাচার মামলায় আরও দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য পেল রাজ্য পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক মাসে কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার পলাশিপাড়া থানা এলাকায় হেরোইন পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন বেশ কয়েক জন। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে মাদক চক্রের সঙ্গে জড়িত আরও কয়েক জনকে পাকড়াও করেছে পুলিশ। কিছু দিন আগে গ্রেফতার হন নদিয়ার এক প্রাথমিক স্কুলশিক্ষকও। বকুল শেখ, সোমানুল শেখ ও মাসুদ শেখদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, কী করে অবৈধ ভাবে পোস্ত চাষে জড়িয়েছিলেন নদিয়ার অনেকে। সেখান থেকে কী ভাবে আন্তঃরাজ্য মাদক কারবার শুরু হয়েছিল, উঠে এসেছে সে তথ্যও। সেই সূত্র ধরে ঝাড়খণ্ডের চক্রধরপুরের খুঁটি থেকে মঙ্গল সামার এবং সুনীল সামারকে গ্রেফতার করে পুলিস। তদন্তকারীদের দাবি, খুঁটিতে একটি পাহাড়ে সবার নজর এড়িয়ে শুরু হয়েছিল পোস্ত চাষ। শুধুমাত্র পরিচিত কয়েক জন কারবারির মাধ্যমে বিপুল টাকার বিনিময়ে পোস্তর আঠা বিক্রি হত। স্থানীয়দের নজর এড়িয়ে এ ভাবেই দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন মাদকের কারবার হয়ে আসছে খুঁটি থেকে।

নদিয়ার পলাশিপাড়ার বড়নলদহ, কুলগাছি, বাউর-সহ বিভিন্ন গ্রামে গত কয়েক বছরে হেরোইনের মতো মাদকের রমরমা শুরু হয়। এখন ওই কারবার আরও ফুলেফেঁপে ওঠে। আগে হেরোইন আমদানি করে বিক্রি করা হলেও বর্তমানে কাঁচামাল এনে হেরোইন তৈরি হচ্ছিল। কৃষ্ণনগর পুলিস জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) উত্তম ঘোষ বলেন, ‘‘ঝাড়খণ্ডের চক্রধরপুরের খুঁটি পাহাড়ের চূড়ায় পোস্তর চাষ হত। তাই মাফিয়ারা কাউকে ওই জায়গায় যেতে অনুমতি দেয় না। শুধু পরিচিত কারবারিদের বিপুল পরিমাণ টাকার বিনিময়ে পোস্তর আঠা দেয়। এ বার তাদের মধ্যে দু’জনকে গ্রেফতার করা হল।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এরাই মূলত ঝাড়খণ্ড থেকে পোস্তর আঠা এনে বিভিন্ন গ্রামের কারবারিদের পাচার করত। তবে এই অপরাধে এলাকার আরও কেউ জড়িত থাকতে পারে। তা নিয়ে তদন্ত চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE