ধৃত অনিল বর্মণ। নিজস্ব চিত্র
‘মুরগি চোর’ সন্দেহে এক যুবকের মলদ্বারে স্ক্রু ড্রাইভার ঢুকিয়ে খুন করার অভিযোগে বাড়ি-বাড়ি গ্যাস দেওয়ার এক কর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। প্রাথমিক ভাবে মুরগি চুরির কথা জানা গেলেও খুনের অন্য কারণ থাকতে পারে বলে তদন্তে উঠে আসছে। তার স্ত্রীকেও পুলিশ খুঁজছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম অনিল বর্মণ। বাড়ি নদিয়ার চাকদহে পিকনিক গার্ডেন এলাকায়। বছর চল্লিশের অনিল নিজের এলাকায় ‘গ্যাস অনিল’ নামে পরিচিত। বিভিন্ন বাড়িতে গ্যাসের সিলিন্ডার পৌঁছে দেওয়া তার কাজ। উত্তর ২৪ পরগনার বীজপুরে সে গা-ঢাকা দিয়েছিল। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সেখান থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার কল্যাণী আদালতে হাজির করানো হলে তাকে আট দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অনিলের স্ত্রী প্রতিমা বর্মণের নামেও অভিযোগ হয়েছে। কিন্তু সে বাড়িতে তালা দিয়ে দুই নাবালক ছেলেকে নিয়ে বেপাত্তা হয়ে গিয়েছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পিকনিক গার্ডেনের দোতলা বাড়িতে সপরিবার থাকত অনিল। সেই বাড়ি লাগোয় একতলা ঘরে স্ত্রী-পুত্র নিয়ে ভাড়ায় থাকেন রোহিত সিংহ। চাকদহেরই কেভিএম এলাকায় থাকে রোহিতের বাকি পরিবার। তার ভাই রাহুল মাঝে-মধ্যে দাদার কাছে এসে থাকত। বাড়ির তিন তলায় অনিলের মুরগির খাঁচা আছে। সেখান থেকে মুরগি চুরির অভিযোগে বুধবার সকালে অনিল রাহুলকে উপরে ডেকে উল্টে টাঙিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে হাতুড়ি মেরে মলদ্বারে স্ক্রু ড্রাইভার ঢুকিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও তাকে বাঁচানো যায়নি। রাতেই রাহুলের পরিবারের তরফে পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়।
শুক্রবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, অনিলদের বাড়িতে তালা দেওয়া। গোটা ঘটনা নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে পাড়াপড়শিদের। যেমন— এক) সামান্য মুরগি চুরির জন্য কেউ এ ভাবে মারতে পারে? দুই) সাতসকালে একটা ছেলেকে নীচ থেকে ডেকে এনে এতক্ষণ নির্যাতন চালানো হল, কেউ টের পেল না? তিন) দোতলায় অনিল ছাড়াও তার স্ত্রী প্রতিমা ও দুই ছেলে ছিল। ছোট ছেলে নিতান্ত বালক হলেও বড় একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। তাদের ভূমিকা কী ছিল?
পাড়াপড়শিদের একাংশের দাবি, অনিল অনেকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করত, বিশেষ করে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা লোকজনের সঙ্গে। স্থানীয় একটি সূত্রের দাবি, এই নির্যাতনের পিছনে মুরগি চুরি নয়, ‘অন্য’ কারণ থাকতে পারে। এমনও হতে পারে যে রাতেই রাহুলকে ধরে বেঁধে ফেলেছিল অনিল। অনিলকে নিজের হেফাজতে নিয়ে জেরা করে পুলিশ তা জানতে চেষ্টা করছে। অনিলের স্ত্রীকে পাওয়া গেলে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে বলে তদন্তকারীদের ধারণা।
অনিলেরা চার ভাই, সে সেজো। দুই ভাই এখানে থাকেন না। বড় ভাই কালীপদ বাড়ির দিকে টিনের ঘরে থাকেন। এ দিন তিনি বলেন, “ওর সঙ্গে আমার সম্পর্ক নেই। ও সত্যিই এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকলে সাজা পাক।” রাহুলের বৌদি খুশি সিংহ বলেন, “অনিল বর্মণ গ্রেফতার হয়েছে বলে শুনেছি। ওর চরম শাস্তি চাই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy