বধূদের অনেকেরই এখন সংসার ভাঙার উপক্রম! নিজস্ব চিত্র।
‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচির আওতায় গ্রামেগঞ্জে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন শাসকদল তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। তাঁরা সাধারণ মানুষের অভাব-অভিযোগ শুনছেন। কথা বলছেন মহিলাদের সঙ্গে। বাড়ির বধূদের সঙ্গে ছবিও তুলছেন তৃণমূল নেতারা। সেই ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় এ বার সেই বধূদের অনেকেরই এখন সংসার ভাঙার উপক্রম! সেই সব ছবির সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই যদিও করেনি।
এই পরিস্থিতিতে ‘দিদির দূত’দের বিরুদ্ধে ‘সম্মানহানি’র অভিযোগ তুলে তাঁদের শাস্তির দাবিতে মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি থানায় অবস্থান বিক্ষোভ দেখালেন কীর্তনীয়া পাড়ার কয়েকশো মহিলা। থানায় একটি অভিযোগও দায়ের হয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, অনুমতি না নিয়ে ‘দিদির দূত’দের সঙ্গে তাঁদের ছবি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করা হয়েছে। যা দেখে তাঁদের উপর চটেছেন স্বামীরা। বাড়িতে তাঁদের মারধর করা হচ্ছে। মিলেছে তালাকের হুমকিও। এই ঘটনায় শাসকদলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। অন্য দিকে তৃণমূলের দাবি, পঞ্চায়েত ভোটের আগে চক্রান্ত করে এই অপপ্রচার চালাচ্ছে বিরোধীরা।
সম্প্রতি কীর্তনীয়া পাড়ায় বাসিন্দাদের অভাব-অভিযোগ শুনতে গিয়েছিলেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা। অভিযোগ, সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচির ব্যাজ ও পোস্টার হাতে বাড়ির মহিলাদের সঙ্গে ছবিও তুলেছেন তাঁরা। সেই ছবিই ছড়িয়ে তৃণমূলের বিভিন্ন গ্রুপ থেকে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গ্রামের বাসিন্দা সেলিনা বিবির দাবি, ‘‘এক জনের ফোনে ওই ছবি দেখে আমায় মারধর করেছেন আমার স্বামী। বাড়ি থেকেও তাড়িয়ে দিয়েছেন। আমি তো বুঝিনি যে, ওরা ছবিগুলো এ ভাবে ছড়িয়ে দেবে!’’
শুধু বাড়িতেই নয়, উঠতে-বসতে গ্রামের মানুষদের তির্যক মন্তব্যও শুনতে হচ্ছে বলে দাবি করেছেন বিক্ষোভকারীরা। কীর্তনীয়া পাড়ার বাসিন্দা সুপ্রিয়া খাতুন জানান, তাঁর স্বামী পরিযায়ী শ্রমিক। কেরলে থাকেন। সমাজমাধ্যমে তৃণমূল নেতার সঙ্গে ছবি দেখে স্বামী তাঁকে তালাক দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন বলে দাবি সুপ্রিয়ার। মানোয়ারা বিবির কথায়, ‘‘ছবি তুলতে চেয়েছিল। আমিও সরল মনে ছবি তুললাম। সেই ছবি দেখে ফোনেই তালাক দিলেন স্বামী! কেন এ ভাবে আমাদের ফাঁসানো হল? কেন আমাদের সম্মান নষ্ট করা হল?’’ ছ’জন স্থানীয় তৃণমূল নেতার নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে জানান কীর্তনীয়ার বাসিন্দা আইজান বিবি। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ওঁদের শাস্তি চাই।’’
এই ঘটনায় শাসকদলকে বিঁধে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘ধর্মীয় ঐতিহ্য-সংস্কৃতি না জেনে এ ভাবে দলীয় কর্মসূচির নামে কোনও মহিলার সম্মানহানি করা উচিত হয়নি।’’ তৃণমূলের অবশ্য বক্তব্য, তারা দলীয় কর্মসূচির কাজই করেছেন। তার বাইরে কিছু না। মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান আবু তাহের খান বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটের আগে পরিকল্পিত ভাবে নোংরামো করছেন বিরোধীরা। আমি দিল্লিতে আছি। এ বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে পরে জানাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy