ফাঁকাই পড়ে আমবাগান। নিজস্ব চিত্র
নোট বাতিলের গুঁতোয় এ বার পিকনিকও কি মাঠে মারা যাবে?
বড়দিন, ইংরেজি নতুন বছরের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে পিকনিক পার্টিগুলোর যা হাবভাব তাতে ব্যবসায়ীদের আশঙ্কাটা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
উত্তুরে হাওয়া, ভোরের কুয়াশা, পেঁয়াজকলি, কমলালেবু, খেজুর রস, নলেন গুড় নিয়ে শীতকাল হাজির। কিন্তু চড়ুইভাতি নিয়ে লোকজনের উৎসাহ কই! অন্য বার ডিসেম্বর পড়তে না পড়তেই শুরু হয় পিকনিকের ধুম। ট্রেনের নিত্যযাত্রীদের দল, টিউশন নিয়ে ফেরা পড়ুয়া, পাড়াপড়শিদের ‘জনতা ফিস্ট’, ক্লাবের ছেলেপুলেদের ‘হোক পিকনিক’, ছোট-বড় ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবীদের সপরিবার একটা জমাট বনভোজন ছাড়া যেন শীতকালেরই মান থাকে না। অথচ এ বার সে সব যেন একেবারে চুপ।
নদিয়া-মুর্শিদাবাদের পিকনিক স্পটগুলোতে এখনও সে ভাবে লোকজনের দেখা মিলছে না। বাড়ি থেকে একটু দূরে নদীর পাড়ে কিংবা চেনাজানা কারও বাগানবাড়িতে ছুটির দিন দেখে সেই হইহই করে কব্জি ডুবিয়ে খাওয়া কি এ বারে তাহলে বন্ধ? স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, পিকনিক হয়তো একেবারেই বন্ধ হবে না। কিন্তু অন্য বছরের মতোও জমবে না। কারণ ডিসেম্বর শেষ হতে চলল, অথচ বাজারে পিকনিকের দলগুলোর তেমন ভিড় নেই। কারণ, বাঙালির বাৎসরিক রুটিনে এ বার বাদ সেধেছে নোট বাতিল। প্রায় সকলেই পুরনো নোট ব্যাঙ্কে জমা দিয়েছেন। কিন্তু হাতে পর্যাপ্ত নতুন নোট আসেনি। ব্যাঙ্ক ও এটিএমের যা হাল তাতে কবে নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে কারও জানা নেই। নবদ্বীপের নীহার দত্ত যেমন বলছেন, ‘‘প্রতি বছর ডিসেম্বরে মাঝামাঝি একটা রবিবার আমরা দল বেঁধে পিকনিক করি। টাকাপয়সার যা অবস্থা এ বার সেই ইচ্ছেটাই যেন চলে গিয়েছে। এত চুলচেরা হিসেব করে কি আর পিকনিক করা যায়!’’ মুর্শিদাবাদের এলাহিগঞ্জ গ্রাম উন্নয়ন সমিতি ক্লাবের সহ-সম্পাদক আবদুল সায়েদ জানান, শীত পড়তে না পড়তেই প্রতি বছর ক্লাবের ফুটবল খেলোয়াড ও ক্লাব কর্তা মিলিয়ে প্রায় ৬০ জনের দল বাস ভাড়া করে কোথাও গিয়ে পিকনিক করেন। এ বারেও তেমন পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু নোট বাতিলের জেরে এ বার আর সে সব হবে না।
সিটি মুর্শিদাবাদ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘প্রতি বছর আমরা ২৬ জানুয়ারি পিকনিক করি। কিন্তু এ বার সে সব করতে পারব কি না সেটা বলতে পারছি না।’’ বাহারি মরসুমি ফুলে সেজে উঠলেও সারগাছি গ্রিন পার্কে এখনও পর্যটকের দেখা মেলেনি। পার্কের ম্যানেজার উৎপল মজুমদার বলেন, ‘‘যাদের জন্য এত কিছু করা, সেই পিকনিক দলেরই দেখা নেই।!’’ লালবাগের পার্ক অফ জয়-এর কর্ণধার মহম্মদ কাউসর আলি মণ্ডল জানান, গত বছর এই সময়ে পিকনিক দলগুলিকে জায়গা দিতে পারিনি। এ বার এখন পর্যন্ত পার্কে একটিও পিকনিক হয়নি।
প্রতি বছর শীতে কম করে গোটা তিরিশেক পিকনিকে রান্নার বরাত পান কেটারিং মালিক নিতাই বসাক। এ বার এখনও পর্যন্ত তিনি একটিও বরাত পাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy