রক্তদান করছেন প্রতিবন্ধীরা। —নিজস্ব চিত্র
ওরা শারীরিক ভাবে প্রতিবন্ধী। কেউ ছোটবেলাতেই অসুখে ভুগে পা হারিয়েছেন। আবার, কেউ কথা বলতে পারেন না। কারও আবার দৃষ্টিশক্তি নেই। তবে সমাজের কাছে করুণার পাত্র হয়ে থাকতে নয়, বরং প্রতিবন্ধকতাকে দূরে সরিয়েই দৃষ্টান্ত তৈরির লড়াই করলেন তাঁরা।
শুক্রবার ফুলিয়ায় এক প্রতিবন্ধী সংগঠনের উদ্যোগে রক্তদান শিবিরে রক্তদানের জন্য এগিয়ে এলেন এই মানুষগুলিই।
শান্তিপুরের কালীপুরের বাসিন্দা আজমত আলি শেখ ছোটবেলাতেই অসুখে ভুগে পা হারিয়েছেন। কিন্তু থেমে থাকেননি। বাড়িতেই চায়ের দোকান চালান তিনি। আবার, ঘোড়ালিয়ার বাসিন্দা গোপীনাথ পালের যেমন পোলিও আক্রান্ত হয়ে অকেজো একটি পা। বাড়িতেই তাঁতশ্রমিকের কাজ করেন তিনি। বাগআঁচড়া এলাকার অনিতা চক্রবর্তী এবং কুতুবপুরের সায়রুল খাতুন দৃষ্টিহীন। অনিতা সেলাইয়ের কাজ করেন, আবার সায়রুল বড়ি বিক্রি করেন। এত কিছুর পরেও জীবন সংগ্রামে জয়ী হওয়ার নাছোড়বান্দা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন এই মানুষগুলি। আর সেই লড়াইয়ে জয়ী মানুষগুলির মুকুটে আরও এক পালক যোগ করল এই দিনের রক্তদান শিবির।
শুক্রবার ফুলিয়া জনরঞ্জন কেন্দ্রে প্রতিবন্ধীদের সংগঠন নদিয়া জেলা অখিল ভারত প্রতিবন্ধী কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত রক্তদান শিবির ও থ্যালাসেমিয়া সচেতনতা শিবিরে এগিয়ে এলেন এঁরা সকলেই। ওই শিবিরে এ দিন রক্ত দেন ১৮ জন। এঁদের মধ্যে ছিলেন পুরুষ ও মহিলা— সকলেই। তবে উৎসাহী মানুষের সংখ্যা ছিল আরও অনেকে বেশি। কিন্তু শারীরিক সমস্যার কারণে অনেকেরই শেষ পর্যন্ত আর রক্ত দেওয়া হয়নি।
জানা গেল, শুধু রক্তদানই নয়, গোটা অনুষ্ঠানের আয়োজনের যাবতীয় কাজও তাঁরাই করেছেন।
আজমত, গোপীনাথেরা বলছেন, “শারীরিক প্রতিবন্ধকতার জন্য অনেকেই আমাদের অন্য চোখে দেখেন। অঙ্গ হারিয়েছি, কিন্তু জীবনের লড়াইয়ে হেরে যাইনি। করুণার পাত্র হয়ে নয়, সমাজের অংশ হয়েই আমরা লড়াই করছি। এ দিনও রক্ত দিলাম সেই উদাহরণ তৈরি করতেই!”
সংগঠনের সম্পাদক মলয় দে বলেন, “প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়ে দেওয়ার লড়াইয়ে শামিল এই মানুষগুলো যে সমাজের আর পাঁচজনের চেয়ে কোনও অংশে পিছিয়ে নেই, তা প্রমাণের তাগিদ থেকেই এ দিন ওঁরা দৃষ্টান্ত তৈরি করলেন!’’
এ দিন রক্তদানের পাশাপাশি ৯০ জন প্রতিবন্ধীর থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা করা হয় ওই শিবিরে। উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ সদস্য নিমাই বিশ্বাস, শান্তিপুরের বিডিও সুমন দেবনাথ-সহ অনেকেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy