Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪
দুয়ারে ভাঙন ২
River Erosion

বালির বস্তাই এখন ভরসা

গঙ্গার পাড় বরাবর তাদের বসতি। স্বভাবতই বর্ষা নামলেই ভাঙনের আতঙ্ক বাড়ে বাসিন্দাদের।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

বিমান হাজরা
জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০২২ ০৬:৫৯
Share: Save:

নিমতিতায় গত শনিবার গঙ্গায় জলস্তর ছিল ১৭.৪৯ মিটার। এক সপ্তাহে সে জলস্তর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮.০৩ মিটার। বিপদসীমার চেয়ে যদিও অনেকটাই নীচে। কিন্তু সেচ দফতর জানিয়েছে, জল বাড়ছে তাই নয়, ক্রমাগত সে জলস্তর বাড়তেই থাকবে আগামী পুজো পর্যন্ত।

আর সমস্যাটি সেখানেই। নিমতিতা থেকে ধুলিয়ান পর্যন্ত অত্যন্ত ঘনবসতির এলাকা। ডজন দুয়েক গ্রাম রয়েছে। গঙ্গার পাড় বরাবর তাদের বসতি। স্বভাবতই বর্ষা নামলেই ভাঙনের আতঙ্ক বাড়ে বাসিন্দাদের।

সেচ দফতরের কর্তাদের মতে, আশঙ্কা আছে, আতঙ্ক আছে। কিন্তু গত বছরের মতো ভাঙন ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার সম্ভাবনা কম। খাঁচায় বালির বস্তা নদীর পাড়কে বাঁচাতে অনেকটাই সাহায্য করবে। ভাঙন রোধে নেহাতই সামান্য কাজ এটা। তবে স্পার বাঁধানোর আগে অত্যন্ত জরুরি। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শেই এই ব্যবস্থা।

শমসেরগঞ্জ ব্লক কংগ্রেস সভাপতি জামিরুল রহমান বলছেন, “প্রশাসনের কাছে বার বার ভাঙনের আশঙ্কার কথা লিখিত ভাবে জানিয়েছি। বালির বস্তা ফেলেই দায় সেরেছে সেচ দফতর। না কেন্দ্রীয়, না রাজ্য সরকার মাথা ব্যথা নেই কারুরই। ভাঙন না রুখে নেতারা ত্রাণ বণ্টনেই যেন উৎসাহী বেশি।”

ফরাক্কা ভাঙন প্রতিরোধ কমিটির সম্পাদক আসিফ ইকবাল বলছেন, “ভরা বর্ষায় ফরাক্কা বাঁধ থেকে ছাড়া জলের প্রথম ধাক্কা লাগে হোসেনপুর ও কুলিদিয়ারে। এখন অল্প অল্প করে জল বাড়ছে নদীতে। তাই ভাঙন শুরু হলেও তা বিপদজনক হয়ে ওঠেনি। ফরাক্কা থেকে হোসেনপুর পর্যন্ত ৬.৯ কিলোমিটার পর্যন্ত ভাঙন রোধে কাজের দায়িত্ব ফরাক্কা ব্যারাজের। কিন্তু ২০২০ সালে পাথরের বাঁধানো স্পার এক মাসের মধ্যে ভেঙে যাওয়ার পর এখনও ভাঙন রোধে কোনও অর্থ বরাদ্দ করেনি ফরাক্কা ব্যারাজ। কুলিদিয়ারে রাজ্য সরকার ১ কিলোমিটার ভাঙন রুখতে ১৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করে কাজ শুরু করলেও এ পর্যন্ত নদীর পাড় বরাবর বালি বোঝাই বস্তা ফেলা ছাড়া কোনও কাজ হয়নি। কাজেই ভাঙন এ বারেও কড়া নাড়ছে ফরাক্কায়।”

ভাঙন প্রতিরোধ দফতরের সুপারিনটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়র সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, “ভাঙন প্রবণ এলাকা ওই দু’টি ব্লক। শমসেরগঞ্জে ভাঙন রোধে যে ২ কিলোমিটার এলাকায় কাজ শুরু হয়েছে সেটা “থ্রি সিজ়ন ওয়ার্ক”। কাজেই পরিকল্পনা মতোই প্রথম বছরে বাঁশের খাঁচায় নেটের মধ্যে ভরে বালি বোঝাই বস্তা ফেলার কাজ হচ্ছে। দ্বিতীয় বছরে ভাঙন শেষে পাড় কী অবস্থায় থাকে তা দেখে পরবর্তী কাজ শুরু করা হবে। কোনও এলাকায় ধস নেমে থাকলে তা মেরামতি করে সে কাজ করা হবে। পরের বছর হবে পাথর দিয়ে স্পার বাঁধানোর কাজ। টেন্ডার হওয়ার আগেই এই “বার চার্ট” তৈরি করা হয়েছে। তাতে ঠিক হয়েছে সমস্ত জায়গায় ভাঙন রোধের কাজ হবে “টু সিজ়ন ওয়ার্ক” হিসেবে দু’বছরে। শমসেরগঞ্জের দু’কিলোমিটারের কাজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই তা হবে “থ্রি সিজ়ন ওয়ার্ক” হিসেবে তিন বছরে।”

তিনি জানান, এ ভাবেই কাজ হয় ভাঙন প্রতিরোধে। বালির বস্তা ফেলে এখন যে কাজ হয়েছে সেটা বিরাট কিছু কাজই নয়। এ বছর সে ভাবে কিছুই কাজ হয় নি। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। তবে কাজ আর একটু এগুনো যেত।

সেচ দফতরই জানায়, কিন্তু প্রায় ২০ দিন সময় নষ্ট হয়েছে এ বারে বিএসএফের অনুমতি পেতে। বস্তায় বালি আনতে হয় গঙ্গা পেরিয়ে পূর্বের চর থেকে। সীমান্তের ৫ কিলোমিটারের মধ্যে বলে তার জন্য বিএসএফের অনুমতি লাগে। এ বারে সে অনুমতি পেতে হয়রাণ হতে হয়েছে। এ বারে বিএসএফ প্রতিটি শ্রমিক ও নৌকো মাঝির ব্যক্তিগত তথ্য নিয়েছে সেচ দফতরের কাছ থেকে, যা কোনও বার প্রয়োজন হয় না।

অন্য বিষয়গুলি:

River Erosion Jangipur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy