রংবদল। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম
চটির আমি, চটির তুমি, চটি দিয়ে যায় চেনা— কিন্তু সে চটি চুরি হয়ে গেলে কী হয়, তা ডোমকল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের রোগীর বাড়ির লোকজনকে এক বার জিজ্ঞেস করেই দেখুন না! ডোমকলের শুকুর মোল্লার সে অভিজ্ঞতা সারা জীবন মনে থাকবে। হাসপাতালে রোগী দেখতে এসে চটি হারিয়েছিল পাতান শেখের। পাতান আবার শুকুরের পড়শিও। হাসপাতাল থেকে পাতানকে খালি পায়ে বের হতে দেখে তিনি গোবেচারা মুখ করে শুধু জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘‘কী গো, পায়ের চটি গেল কোথায়?’’ কথা শেষ করতে পারেননি শুকুর। পাতান শেখ তেড়ে আসেন তাঁর দিকে। শুকুর বলেন, ‘‘বুঝতে পারিনি ও এ ভাবে রেগে যাবে। পাতান ভেবেছে আমি মজা করছি।’’
হাসপাতালের এনআরসি বিভাগের চৌকাঠে পা রাখলেই চমকে উঠতে হচ্ছে। এক জোড়া চটির একটা সবুজ আর একটি লাল, একটা নীল তো আর একটি সাদা। এমন আজব চটি পেলেন কোথায়? ওই বিভাগের চিকিৎসক থেকে নার্স সকলেই এক সুরে বলছেন, ‘‘আর বলবেন না, নতুন চটি চৌকাঠে রাখলেই উধাও হয়ে যাচ্ছে। চটি চোরের দৌরাত্ম্যে দিশেহারা আমরা। শেষ পর্যন্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে এমন আজব চটি কিনেছেন।’’ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রীতিমতো অর্ডার দিয়ে কিনতে হয়েছে সেই চটি।
রঙের বদল ঘটিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাঁফ ছাড়লেও সাধারণ মানুষের হা-হুতাশ কিন্তু বেড়েই চলেছে ডোমকল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল কিংবা বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজের মাতৃমা বিভাগে। সেখানে চটি রেখে ভিতরে ঢুকলেই ফিরে এসে আর দেখা মিলছে না সাধের চটির। ফলে অনেক রোগীর আত্মীয়দের অগত্যা খালি পায়ে অথবা বাজারে গিয়ে একজোড়া চটি কিনে ফিরতে হচ্ছে ঘরে। এখন অনেক আবার বাধ্য হয়ে গোপনে ব্যাগের মধ্যে চটি ঢুকিয়ে রোগীর সঙ্গে দেখা করেছেন।
ডোমকল মহকুমা ও সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের সুপার প্রবীর মাণ্ডি বলছেন, ‘‘এটা একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভেতরের ওয়ার্ডে আমরা কর্মীদের জন্য দুই রংয়ের চটির ব্যবস্থা করেছি ঠিকই কিন্তু রোগীর আত্মীয়দের চটি নিয়ে আমরা প্রায় দিশেহারা। রোগী কল্যাণ সমিতিতেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy