Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

ভয়ে-ভয়ে ফাইলে হাত, সম্বল স্যানিটাইজ়ার

সোমবার জেলা প্রশাসনিক ভবনে উপস্থিত ছিলেন প্রায় ৭৫ শতাংশ কর্মী। বেশির ভাগই এসেছিলেন মোটর বাইকে চেপে।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২০ ০৩:৫২
Share: Save:

দীর্ঘ ব্যবধানে অফিসের সেই চেনা ঘর, টেবিল-চেয়ার। সেই চেনা ফাইলের স্তূপ। ভাঁড় বা কাগজের কাপের চা। কাজের ফাঁকে আড্ডা, তর্ক।

কিন্তু করোনা-কালের সরকারি দফতর চালু হল অচেনা অনেককিছু নিয়ে। তার অন্যতম হল ভয়! ফাইলে হাত দিতে ভয়, চেনা সহকর্মীর কাছে চেয়ার টেনে এগিয়ে আড্ডা দিতে ভয়, মাস্ক নাক থেকে নেমে গেলে ভয়, মাস্ক নামিয়ে চায়ে চুমুক দিতে ভয়, অফিসের শৌচাগার ব্যবহারে ভয়।

সোমবার জেলা প্রশাসনিক ভবনে উপস্থিত ছিলেন প্রায় ৭৫ শতাংশ কর্মী। বেশির ভাগই এসেছিলেন মোটর বাইকে চেপে। কিছু লোক টোটোয় বা সাইকেলে। দু’- এক জন এসেছেন বাসে। এঁদেরই এক জন বলেন, “একটু ভয় হচ্ছে বটে, কিন্তু বাড়ি থাকতে-থাকতে বিরক্তি ধরে গিয়েছিল। অফিসে এসে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম।” জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলছিলেন, “অবস্থা বুঝুন। আমরা কিন্তু কাউকেই আসার জন্য জোর করিনি। তবুও আমার দফতরে প্রায় সকলেই চলে এসেছেন।”

কোনও-কোনও দফতরে উপস্থিতির হার ছিল প্রায় ৯০ শতাংশ। এত কর্মী এলে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করা কঠিন বুঝে কর্তারা কর্মীদের জানিয়ে দেন যে, কোনও ভাবে মাস্ক না পরে থাকা যাবে না। ফাইল লেনদেন হবে দূরত্ব রক্ষা করে। তেমন হলে ফাইল টেবিলের এক পাশে রেখে যেতে হবে। দফতরের ভিতরে রাখা হয়েছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার। কোনও ফাইলে হাত দেওয়ার পর স্যানিটাইজারে হাত ধুয়ে নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এক দফতরে সই করানোর জন্য ফাইল নিয়ে এসেছিলেন এক কর্মী। তাঁর দিকে তাকিয়েই কর্তার ধমক, “মাস্ক কি গলার কাছে ঝুলিয়ে রাখার জন্য?” তড়িঘড়ি নাকের উপর মাস্কটা টেনে নিলেন বছর পঞ্চাশের সেই কর্মী। আবার এক কর্মী মুখে রুমাল বেঁধে ফাইল হাতে ঢুকলেন। ক্ষব্ধ অফিসার জানতে চান, “রুমাল কেন? মাস্ক নেই?” এ দিন কৃষ্ণনগরে জেলা প্রশাসনিক ভবনের বিভিন্ন দফতরে ঘুরে দেখা গেল, সরকারি দফতরে চেয়ার খালি রেখে কর্মীর উধাও হয়ে যাওয়ার দীর্ঘদিনের সংস্কৃতি করোনা-ভয়ে উধাও। বেশির ভাগ কর্মী নিজেদের চেয়ারেই বসে থেকেছেন সারা দিন। খুব প্রয়োজন না পড়লে বাইরে বা অন্য টেবিলে যাননি। অনেকে নিজেরাই ঠেলেঠুলে নিজেদের টেবিলের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করে নিয়েছেন।

করিমপুর ১ ব্লক অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, আশেপাশের এলাকার অনেকেই নিজের বাইক বা অন্য ছোট গাড়িতে এতদিন অফিসে এসেছেন। কর্মীদের মধ্যে যাঁরা কৃষ্ণনগর, বহরমপুরের বা দূরের বাসিন্দা তাঁরা আগে থেকে করিমপুর সরকারি গেস্টহাউসে থেকে কাজ করেছেন। নবদ্বীপে বিভিন্ন সরকারি দফতরে এবং পুরসভাতেও এ দিন প্রায় ৮০ শতাংশ কর্মী উপস্থিত হয়েছেন। তবে আদালতে উপস্থিতির হার ছিল মাত্র ১০ শতাংশ। তবে অন্য দিনের থেকে এ দিন ব্যাঙ্কে কর্মীদের উপস্থিতির হার ছিল বেশি। ফুলিয়াতে ব্লক অফিস, ভূমি সংস্কার দফতর ও কৃষি দফতরে যথেষ্টে সংখ্যক কর্মী উপস্থিত হয়েছিলেন। সংখ্যাটা প্রায় গড়ে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ। স্থানীয়দের পাশাপাশি দূরের কর্মীদের কেউ কেউ বাসে বা গাড়ি ভাড়া করে এসেছেন। জেলাশাসক বিভু গোয়েল বলেন, “৭০ শতাংশের বেশি কর্মী বিভিন্ন দফতরে এসেছেন। অফিসের ভিতরে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in West Bengal Hand Sanitizer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy