আকাশ মেঘলা থাকলেও বৃষ্টি হয়নি। —নিজস্ব চিত্র
দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে নজিরবিহীন তাপপ্রবাহে সম্ভবত এবারের মতো ছেদ পড়তে চলেছে। শুক্রবার হাওয়া অফিসের পূর্বাভাসে সেই রকমই ইঙ্গিত মিলছে। আবহাওয়া দফতরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ দিন জানানো হয়েছে— ২২ এপ্রিল, শনিবার থেকে রাজ্যের তাপপ্রবাহের তীব্রতা হ্রাস পেতে শুরু করবে। সেই সঙ্গে উত্তরপ্রদেশে ঘূর্ণাবর্ত সৃষ্টির সম্ভাবনা। বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্প স্থলভাগে ঢোকার ফলে তাপমাত্রা অন্তত ৩-৫ ডিগ্রি হ্রাস পাবে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শনিবার থেকে রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে ঝড়বৃষ্টির সম্ভবনাও তৈরি হয়েছে। সব মিলিয়ে পূর্বাভাস যথেষ্ট স্বস্তিদায়ক।
শুক্রবার থেকেই দক্ষিণবঙ্গের জেলায় আবহওয়ার চোখে পড়ার মতো বদল ঘটেছে। বৃহস্পতিবার ছিল নদিয়ায় মরসুমের উষ্ণতম দিন। কৃষ্ণনগরে তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৪২.২ ডিগ্রি। কিন্তু শুক্রবার সকাল থেকেই আকাশ ছিল মেঘলা। ঝলসে দেওয়া রোদ উধাও। নেই তীব্র দহনও।
মুখ্য কৃষি-আবহাওয়াবিদ মৃণাল বিশ্বাস রাতারাতি আবহাওয়ার এই বদল প্রসঙ্গে বলেন, “এমন হওয়াই স্বাভাবিক। এখন লম্বা সময় ধরে শুখা তাপপ্রবাহ চলার অর্থই হল ঝড়বৃষ্টির ক্ষেত্র প্রস্তুত হওয়া। যত বেশি সময় ধরে তাপপ্রবাহ চলবে, পরবর্তী কালে তত জোরালো হবে ঝড়বৃষ্টি।’’
যদিও ঠিক কবে বৃষ্টি হবে, তা নির্দিষ্ট করা বলা সম্ভব নয় বলেই জানাচ্ছেন আবহাওয়াবিদেরা। তাঁদের কথায়, কালবৈশাখীর পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। তবে শনিবার থেকে যে কোনও দিন ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। মৃণাল বলেন, “কালবৈশাখী সর্বত্র এক সঙ্গে এক ভাবে না-ও হতে পারে।”
চৈত্রের শেষ থেকে বৈশাখের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত একটানা অস্বাভাবিক তাপপ্রবাহের জেরে মাঠ-ঘাট শুকিয়ে কাঠ। বৃষ্টিহীন এই সময়ে সব চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে মরসুমি আনাজের। মাঠে রোদের তাতে ঝলসে গিয়েছে আনাজ। ফলে, প্রতি দিনের কাঁচাবাজারে আচমকাই জোগানে টান পড়েছে। চড়তে শুরু করেছে আনাজের দাম। পটল, ঝিঙে, ঢেঁড়স, ডাঁটা, বেগুন, কুমড়ো, লাউ, চালকুমড়ো, কাঁচালঙ্কা, পেঁয়াজ— সব কিছুর দাম গড়ে ১০-২৫ টাকা কিলোগ্রাম প্রতি বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, “তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির ওপরে চলে গেলে তা যে কোনও ফসল, উদ্ভিদ পক্ষে ক্ষতিকর। গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে তাপমাত্রা প্রায় ৪০ ডিগ্রির ওপরে রয়েছে। এই অবস্থায় ফসলের বৃদ্ধি কমে যাবে। পরাগ মিলন অসুবিধা হবে। মাটি শুকিয়ে ফলন হ্রাস পেয়েছে। যার প্রভাব বাজারে পড়ছে। এখন তাপমাত্রা কমার সঙ্গে সঙ্গে মরসুমি ফসল, আম, লিচু এবং পাটের জন্য জল দরকার। বৃষ্টি হওয়া জরুরি।”
হাওয়া বদলে আশায় বুক বাঁধছেন কৃষকেরাও। শনিবার খুশির ইদের মাঝে বৃষ্টি নতুন করে আনন্দ আনে কিনা, এখন সেই অপেক্ষায় সকলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy