শোকার্ত: অবশেষে ঘরে ফিরল ছেলে। তবে কফিনবন্দি হয়ে। বৃহস্পতিবার পায়রাডাঙায়। ছবি: প্রণব দেবনাথ ।
গাছপালা, পাহাড়়, প্রকৃতিতে বুঁদ হয় থাকতে ভালবাসতেন তিনি। বাড়়ির লাগোয়া এক ফালি জমিতে নিজের হাতে লাগিয়েছিলেন চন্দন এবং রুদ্রাক্ষ গাছ। ডাক্তারির ছাত্র, সাতাশ বছরের প্রীতম রায় ওরফে রকির দেহ বৃহস্পতিবার দুপুরে সেই গাছের নীচেই সমাধিস্থ করলেন পরিজনেরা।
গত ১০ অক্টোবর উত্তরাখণ্ডে ট্রেকিংয়ে গিয়ে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন প্রীতম। প্রথমে এক বার উত্তরাখণ্ড সরকারের তরফে তাঁকে ‘মৃত’ বলে জানানো হলেও বিশ্বাস করতে চাননি প্রিয়জনেরা। নদিয়া জেলা প্রশাসনের কাছেও সেই সময়ে কোনও খবর ছিল না বলে ক্ষীণ আশা ছিল বাবা-মায়ের মনে— হয়তো শেষ পর্যন্ত বেঁচে ফিরবেন তাঁদের রকি। কিন্তু সেই আশা পূরণ হল না। দিন দুয়েক আগে প্রীতমের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত ভাবে জানায় প্রশাসন। দেহ বাড়িতে ফেরানোর ব্যবস্থাও হয়। নদিয়ার রানাঘাটের পায়রাডাঙার পূর্ব গোপালপুরের বাড়িতে বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা নাগাদ প্রীতমের কফিনবন্দি দেহ এসে পৌঁছয়। সে সময়ে প্রচুর মানুষ সেখানে ভিড় করেছিলেন। এসেছিলেন রাজ্যের কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস-সহ প্রশাসনের অনেকে। ছেলের কফিন পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন প্রীতমের বাবা প্রমীলকান্তি রায়, মা রীতা রায় ও বোন প্রিয়াঙ্কা। কফিনের পাশে বসে রীতা বলতে থাকেন, “এ আমার বাবু নয়। আমার বাবু হতে পারে না।” কান্নাভেজা গলায় প্রমীলকান্তি জানান, বাড়ির পাশের জমিতে তাঁরা ছেলের দেহ সমাধিস্থ করতে চান।
বাবার কথায়, “যেখানে প্রীতম নিজের হাতে গাছ লাগিয়েছিল, সেখানেই সে থাকবে। সে আমাদের ছেড়ে চলে যায়নি। সে হিমালয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সেখানে ভাল আছে।”
এ নিয়ে প্রথমে দু’এক জন আপত্তি তোলেন। তবে পরে তাঁরা রাজি হন। রানাঘাট ১-এর বিডিও সঞ্জীব সরকার বলেন, ‘‘এলাকার মানুষের আপত্তি না থাকলে আমাদেরও কোনও আপত্তি নেই।’’ শনিবার সন্ধ্যায় প্রীতমের দেহ সেখানেই সমাধিস্থ করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy