Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Oxygen

রেগুলেটর নেই, পড়ে আছে অক্সিজেন ভরা সিলিন্ডার

রেগুলেটর ছাড়া সিলিন্ডার দিয়ে বার হওয়া অক্সিজেন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।

চাহিদা বাড়ছে অক্সিজেন রেগুলেটরের।

চাহিদা বাড়ছে অক্সিজেন রেগুলেটরের। নিজস্ব চিত্র।

সুদীপ ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০২১ ০৬:১৩
Share: Save:

সিলিন্ডার আছে, অক্সিজেন আছে কিন্তু রেগুলেটর নেই।

রাজ্যে হু-হু করে বাড়ছে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা। হাসপাতালে শয্যা নেই। অনেক রোগী নিজের বাড়িতেই কোয়ারান্টিনে রয়েছেন। হঠাৎ করে তাঁদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে অক্সিজেনের প্রয়োজন পড়ছে। কিন্তু কোথাও মিলছে না অক্সিজেন সিলিন্ডার।

বিক্রেতারা রোগীর পরিবারকে বলছেন, ‘‘সিলিন্ডার নিয়ে আসুন, গ্যাস ভরে দিচ্ছি।’’ অনেকে আবার এটাও বলছেন, ‘‘দু-একটা অক্সিজেন সিলিন্ডার ভাড়ায় দিলেও দেওয়া যেতে পারে, কিন্তু রেগুলেটর জোগাড় করে নিতে হবে।’’

রেগুলেটর ছাড়া সিলিন্ডার দিয়ে বার হওয়া অক্সিজেন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। অর্থাৎ, অক্সিজেন ভর্তি সিলিন্ডার হাতে থাকলেও তখন তা কোনও কাজে আসবে না। কল্যাণী থেকে কৃষ্ণনগর প্রায় সব জায়গার অক্সিজেন সরবরাহকারীরা এক বাক্যে জানাচ্ছেন, রেগুলেটর না পাওয়ার সমস্যার কথা। রানাঘাটের অক্সিজেন সরবরাহকারী সমীরণ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আটশো-হাজার টাকার রেগুলেটর এখন আড়াই-তিন হাজার টাকা দিয়েও চেয়ে পাচ্ছি না। অথচ আমার কাছেই দিনে প্রায় ২০ টি নতুন সিলিন্ডারের চাহিদা এই মুহূর্তে।’’

কৃষ্ণনগরের অক্সিজেনের সরবরাহকারী মৌসুমী ঘোষ বিশ্বাস বলেন, ‘‘অক্সিজেন গ্যাস এখনও পর্যাপ্ত আছে। কিন্তু রেগুলেটর পাওয়া যাচ্ছে না। প্রায় তিন গুণ বেশি দাম দিয়ে কাঁচা বিলে রেগুলেটর কিনতে হচ্ছে। তা-ও সপ্তাহে যেখানে ১৪০টি প্রয়োজন পাচ্ছি মোটে পনেরোটা। ঘরে কিছু সিলিন্ডার আছে যা রেগুলেটরের অভাবে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’’

মৌসুমী আরও জানান, ‘‘কয়েক দিন আগে সরকারি উদ্যোগে অক্সিজেনের সরবরাহ স্বাভাবিক করার জন্য রাজ্যের সমস্ত অক্সিজেন সরবরাহকারীদের নিয়ে অনলাইনে এক ভার্চুয়াল মিটিং হয়েছিল। তাতেও বেশির ভাগ বিক্রেতা রেগুলেটর ও খালি সিলিন্ডার না পাওয়ার কথাই জানিয়েছেন।’’

অনেকেই দাবি করছেন, সিলিন্ডারের রেগুলেটর নিয়ে কালোবাজারি হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেই জানা গেল এই রেগুলেটর দিল্লির দিকে তৈরি হয়, সেখান থেকেই এখন কম মাল এসে পৌঁছোচ্ছে। যেগুলি আসছে বা আছে সেগুলি অনেক বেশি দামে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। কৃষ্ণনগরের রাজা রোডে চিকিৎসা সংক্রান্ত জিনিস বিক্রেতা দীপঙ্কর বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমি সরাসরি দিল্লি থেকেই রেগুলেটর আনি। কিন্তু এই মুহূর্তে আমার ঘরে একটাও মাল নেই।’’ কারণ প্রসঙ্গে দীপঙ্কর বলেন, ‘‘হঠাৎ করে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় কোম্পানি এত মাল এত কম সময়ে তৈরি করতে পারছে না। আর লকডাউন ও শ্রমিক সমস্যার কারণেও উৎপাদন ও পরিবহণ কিছুটা ব্যহত হচ্ছে।’’

জেলার বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও রেড ভল্যান্টিয়ার্সের মতো রাজনৈতিক মঞ্চের সদস্যেরা আক্রান্তের বাড়ি প্রয়োজনে অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছেন। সিলিন্ডার ও বিশেষ করে রেগুলেটরের সমস্যার জন্য পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে বলে মত তাঁদেরও। পলাশির রেড ভল্যান্টিয়ার্স বাণী মণ্ডল বলেন, ‘‘রেগুলেটর নিয়ে ব্যপক কালোবাজারি চলছে। আগামী দিনে আমরা এই বিষয়গুলো নিয়ে আন্দোলনে নামবো।’

কিন্তু ততদিন মানুষের কাছে অক্সিজেন ভরা সিলিন্ডার পৌঁছবে কী ভাবে, তার উত্তর জানেন না কেউই।’

অন্য বিষয়গুলি:

Corona Oxygen Coronavirus in West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy