Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Accident

জল রুখতে নালায় নেমে নিখোঁজ

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বহরমপুর লাগোয়া কর্ণসুবর্ণ এলাকার বাঁকিনালার জল চলতি বর্ষায় উপচে পড়ে নদীর আকার নিয়েছে।

বাঁকিনালায় দুর্ঘটনার পরে। কর্ণসুবর্ণে। নিজস্ব চিত্র

বাঁকিনালায় দুর্ঘটনার পরে। কর্ণসুবর্ণে। নিজস্ব চিত্র

বিদ্যুৎ মৈত্র
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০২০ ০৫:৫৪
Share: Save:

কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে নদী-নালা উপচে পড়েছিল। মুর্শিদাবাদের বহরমপুর লাগোয়া কর্ণসুবর্ণ এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামে চাষের জমি জলে ডুবে যায়। এলাকার বাঁকি নালা দিয়ে প্লাবনের জল ঢুকে গ্রাম ভাসিয়ে দেওয়ার আশঙ্কাও ছিল। সোমবার দুপুর ১২টা নাগাদ ওই নালার বাঁধের পাইপের মুখে ঢাকনা পরাতে গিয়ে আটকে পড়েন এক ব্যক্তি। কর্ণসুবর্ণ এলাকার ডাবকাই গ্রামের বাসিন্দা ইব্রাহিম শেখ নামে ওই ব্যক্তিকে রাত পর্যন্ত উদ্ধার করা যায়নি। স্থানীয় বিডিও অভিনন্দন ঘোষ বলেন, ‘‘বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সাহায্য চাওয়া হয়েছে। তারা এসে পৌঁছলে উদ্ধার কাজ শুরু হবে।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বহরমপুর লাগোয়া কর্ণসুবর্ণ এলাকার বাঁকিনালার জল চলতি বর্ষায় উপচে পড়ে নদীর আকার নিয়েছে। তার ফলে ওই নালা সংলগ্ন চাষের জমিও কয়েকদিন ধরে জলের তলায় চলে গিয়েছে। ডাবকাই, আরোয়া, কোদলা, চিরুটি গ্রামের বাসিন্দাদের আশঙ্কা ছিল, আরও বৃষ্টি হলে লাগোয়া নদী প্লাবিত হয়ে গ্রামের পর গ্রাম ডুবে যাবে। সেই ক্ষতি আটকাতেই বাঁকিনালার পাইপের মুখে ঢাকনা লাগাতে গিয়েছিলেন ইব্রাহিম-সহ তিন গ্রামবাসী। তখনই দুর্ঘটনা ঘটে।

সূত্রের খবর, বহরমপুরের তেলকর বিলের জল বাঁকিনালায় পড়ে। সেই জল প্রবাহিত হয় সংলগ্ন দ্বারকা নদীতে। দ্বারকা সঙ্গে যুক্ত ভাগীরথীর সঙ্গে। ভরা বর্ষায় দ্বারকা, ব্রাহ্মণী, বাবলা নদী উপচে পড়লে জলের উল্টোস্রোতে বাঁকিনালা প্লাবিত হয়। তবে বাঁকিনালার জলের ওপর সেচের জন্যও নির্ভর করেন চাষিরা। নালার জল নদীবাঁধ লাগোয়া একশো ফুট দীর্ঘ নালা দিয়ে খেতে পড়ে। প্রশাসন সূত্রে খবর, কান্দি মাস্টার প্ল্যান তৈরির সময় গ্রামবাসীদের অনুরোধে ওই জমি লাগোয়া মোটররায় নালার সঙ্গে জুড়ে বাঁকি নালার বাঁধে পাঁচটি কুড়ি ফুটের পাইপ দিয়ে ওই নালা তৈরি করা হয়েছিল। ফি বছর বর্ষায় নদী জলে ভরে গেলে চাষের জমিতে জল দাঁড়িয়ে যায়। কিন্তু চলতি বছরে ভারী বৃষ্টিপাতে জমি ডুবেই গিয়েছে। সেই কারণে নালা-বাঁধ সংলগ্ন নালার মুখ বন্ধের উদ্যোগী হয়েছিলেন ইব্রাহিম, সাজ্জাদ শেখ, মন্টু শেখরা। এদিন মাঠের কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে ওই নালা দেখতে যান তাঁরা। সাজ্জাদ বলেন, ‘‘আমরা ঠিক করেছিলাম বাঁকি নালার বাঁধ সংলগ্ন মুখের ঢাকনা বন্ধ করে দেব। সেই জন্যই ওখানে গিয়েছিলাম।’’

জানা গিয়েছে, আগেও ওই নালা-মুখে এমন পরিস্থিতি হয়েছিল। সাজ্জাদ বলেন, ‘‘সেবার প্রায় ১৫ ফুট নালার গভীরে নেমে খড়ের বস্তা দিয়ে মুখ বন্ধ করেছিল ইব্রাহিম। ও খুব সাহসী। আজও একই ভাবে নেমে পড়েছিল নালামুখ আটকাতে। তারপর আর উঠে আসতে পারেনি।’’ বহরমপুর থানার আইসি ও স্থানীয় বিডিও-ও ঘটনাস্থলে যান। মাটি কাটার যন্ত্র এনেও ইব্রাহিমকে উদ্ধার করা যায়নি। নিখোঁজ ইব্রাহিমের এক আত্মীয় বলেন, ‘‘কল সারানোর জন্য ব্যবহৃত পাইপ দিয়ে ঠেলে নালা পরিষ্কার করা হলেও ওঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি।’’ বিডিও জানান, গ্রামবাসীরাই নালা পরিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Accident Berhampore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy