বাড়ছে কিশোরী মায়েদের সংখ্যা
একাধিক সরকারি প্রকল্প এবং প্রচার সত্ত্বেও নাবালিকাদের মা হওয়া আটকানো যাচ্ছে না রাজ্যে। ১৫-১৬ বছর বয়সেই অনেক কিশোরী মা হচ্ছেন। নদিয়া জেলাও এরব্যতিক্রম নয়।
সরকারি হিসেবে ২০২২ সালে নদিয়া জেলায় প্রায় ১১৫০০ নাবালিকা মা হয়েছে। ২০২১ সংখ্যাটা ছিল ১৪৭৮৪। বাস্তবে এই সংখ্যাটা আরও কয়েক গুণ বেশি বলে মনে করা হচ্ছে। ২০১১ সালের জনগণনার হিসাবে নদিয়ায় সেই সময় মোট বিবাহিত মহিলাদের ৪৮ শতাংশের বেশি ছিল নাবালিকা। এর থেকেই অপুষ্ট শিশুর জন্ম, বিবাহ বিচ্ছেদ কিংবা বধূ নির্যাতনের মত বিষয়গুলি বাড়তে থাকে।
গ্রামাঞ্চলে এমনিতেই মেয়েদের তাড়াতাড়ি বিয়ে দেওয়ার প্রবণতা বেশি। তার উপর করোনার সময় অনেক পরিবারে রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়া ও স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় স্কুলছুট হওয়ার সংখ্যা যেমন বেড়েছে, তেমনই বেড়েছে নাবালিকাদের বিয়ে। করোনা পর্ব কাটিয়ে স্কুল খোলার পর কোনও ছাত্রী যদি এক সপ্তাহের বেশি স্কুলে না আসে, সে ক্ষেত্রেও তার বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। নাবালিকা মা হলে কী কী শারীরিক সমস্যা হতে পারে সে বিষয়েও আশা কর্মীরা পরামর্শ দিচ্ছেন। নাবালিকা বধূ সাবালিকা হওয়া পর্যন্ত যাতে তার মা হওয়া আটকানো যায় সে ব্যাপারে তার শ্বশুরবাড়ির লোকেদের কাউন্সেলিং করা হচ্ছে। বিভিন্ন গর্ভনিরোধক পদ্ধতি জানানো হচ্ছে।
চিকিৎসকেদের মতে, মেয়েরা সাধারণত ২১ বছরের আগে সন্তান প্রসবের জন্য শারীরিক ভাবে প্রস্তুত থাকে না। কম বয়সে সন্তান হলে সন্তান অপুষ্ট হতে পারে, মায়েরও শারীরিক সঙ্কট হতে পারে। পরিবার পরিকল্পনা, জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে সারা বছরই কাজ করেন আশা কর্মীরা। সরকারি ভাবে মেয়েদের স্কুলমুখী করতে ও অল্পবয়সে বিয়ে আটকাতে রয়েছে কন্যাশ্রী ও রূপশ্রী-র মতো প্রকল্প। কিন্তু তারপরেও রোখা যাচ্ছে না কিশোরীদের বিয়ে ওমা হওয়া।
জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জ্যোতিষচন্দ্র দাস বলেন, “কখনই শুধুমাত্র স্বাস্থ্য দফতর বা আশা কর্মীদের পক্ষে নাবালিকা বিয়ে আটকানো সম্ভব নয়। এর জন্য সরকারের প্রতিটি দফতরকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy