বিপদে গাড়িচালকরা।
দেখতে-দেখতে পুজো চলে এল। তবে পুজোর সেই স্বাভাবিক আমেজ এ বার কেড়ে নিয়েছে করোনা। অন্য বছরের সঙ্গে এ বারের পুজোর আকাশপাতাল ফারাক। কল্যাণী শহরেই এ বার হাতেগোনা কয়েকটি পুজো হচ্ছে। বেশির ভাগ পাড়াই উৎসবশূন্য। সবাই যেন উদ্বিগ্ন। ইচ্ছা থাকলেও অন্য বারের মতো উৎসবে ভেসে যেতে ইতস্তত করছে। ভয়ের আবরণে ঢেকে গিয়েছে পুজো।
এই ভয় আর শঙ্কার জন্য পুজোর মরসুমে আমাদের মতো গাড়িচালকেরা বিপদে পড়েছে। এই সময়েই আমাদের একটু বেশি রোজগার হয়। মানুষ ঠাকুর দেখতে বের হয়। কাছেপিঠে গাড়িভাড়া করে বেড়াতে যায়। এ বারে সব কিছু পণ্ড।
বেশ কয়েক বছর আগে একটা ছোট গাড়ি কিনেছিলাম। নিজেই চালাই। এর উপর নির্ভর করেই সংসার চলে। অল্প দিন হল বিয়ে করেছি। ভেবেছিলাম, পুজোর আগে অতিমারি শেষ হবে। পুজোতে বউকে অনেক কিছু কিনে দেব। কিন্তু কিছুই হল না। অন্য বার অনেকে গাড়ি ভাড়া করে কলকাতায় শপিং করতে যেতেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভাড়া হত। কলকাতায় সারারাত ঠাকুর দেখতে যাওয়ার জন্য গাড়ির বুকিং করতেন অনেকে।
বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা আগেভাগেই গাড়ি বুক করতেন। এ বার বহু মাস ধরে হস্টেল বন্ধ। লোকজনের হাতে টাকাপয়সা নেই। ফলে পুজোকে কেন্দ্র করে আমাদের ব্যবসা একেবারেই জমল না। অন্য বার যেখানে ৫০ হাজার টাকার মত আয় হত সেখানে এখনও পর্যন্ত পাঁচ হাজার টাকার ভাড়াও পাইনি। তবে পুজো তো পুজোই। এই সবের মধ্যেই যতটুকু পারি আনন্দ করবই। দুর্গামায়ের কাছে একটাই প্রার্থনা করব যে, এই অতিমারি সরিয়ে আগের পৃথিবী ফিরিয়ে দাও। আমরা আবার ভয়মুক্ত হয়ে বাঁচি।
গাড়িচালক, কল্যাণী
অনুলিখন: মনিরুল শেখ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy