যথেষ্ট নিরাপত্তা নেই ডাক্তারি পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের। রাস্তায় যথেষ্ট বাতিও নেই। পুলিশ থাকে না। ফলে, রাত্তিরে তাঁরা বাইরে বেরতে পারেন না। কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল (জেএনএম) মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে এই অভিযোগ উঠল। সমিতির চেয়ারম্যান, খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক অবিলম্বে সমস্যা সমাধানের নির্দেশ দিলেন।
দিন কয়েক আগে এক বৃদ্ধার ডান চোখের বদলে বাঁ চোখে অস্ত্রপচারের অভিযোগ উঠেছিল এই হাসপাতালের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। সে বিষয়েও মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন তিনি।
মেডিক্যাল কলেজ চত্বরের এক প্রান্তে ডাক্তারি ছাত্র-ছাত্রীদের হস্টেল। তার পাশেই রয়েছে শিল্পাঞ্চলের রাস্তা। এই রাস্তাটি এক দিকে কল্যাণী রেল স্টেশন, অন্য দিকে কল্যাণী পুরসভা। যে কোনও প্রয়োজনেই তাঁদের এই রাস্তাটিই ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু, সন্ধ্যার পর থেকেই রাস্তাটি কার্যত সুনসান হয়ে পড়ে। এ দিন বৈঠকে আইএমএ-র প্রতিনিধি এক চিকিৎসক এই প্রসঙ্গটি তোলেন। তিনি বলেন, ‘‘বিশেষ করে ছাত্রীরা তাঁর কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন যে, রাতে তাঁরা আর হস্টেল থেকে বের হতেই পারেন না। এমনকী, একা একা যাতায়াতও করা যায় না। রাস্তাতে আলোও নেই।’’ ওই চিকিৎসক জানান, মর্গের দিকের রাস্তা জঙ্গলে ঘেরা। সে দিকে পুলিশি টহলদারিও যথেষ্ট থাকে না।
এর পরেই জ্যোতিপ্রিয়বাবু কল্যাণীর এসডিপিও এবং কল্যাণী থানার আইসি-কে বলেন, সন্ধ্যার পর ওই রাস্তায় যেন নিয়মিত পুলিশি টহলদারির ব্যবস্থা করা হয়। বৈঠকে উপস্থিত পূর্ত ও বিদ্যুৎ সরবরাহ দফতরের প্রতিনিধিদের মন্ত্রী ওই রাস্তায় অবিলম্বে বাতি লাগানোর ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন। দুই দফতরের প্রতিনিধিরাই বলেন, অবিলম্বে সেই ব্যবস্থা করা হবে। পুরসভা এবং পুলিশকে বলেন, যত দ্রুত সম্ভব, ওই রাস্তায় সিসি ক্যামেরা লাগাতে হবে।
হাসপাতালে আসা রোগীর বাড়ির লোকেদের জন্য যথেষ্ট পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। নেই শৌচাগারও। কল্যাণী পুরসভাকে পরিশ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা করার জন্য বলেন মন্ত্রী। সভায় উপস্থিত নদিয়া জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ বাণীকুমার রায় বলেন, ‘‘নদিয়া নির্মল জেলা। সেখানে এই রকম হাসপাতালে শৌচাগার থাকবে না, তা হতে পারে না। এই দায়িত্ব আমি নিলাম।’’
হাসপাতালের বেশ কিছু নির্মাণ কাজ দীর্ঘদিন ধরে চলছে। কোনওটি মাঝপথে বন্ধ, কোনওটি প্রায় শেষ পর্যায়ে। কিন্তু, কাজ বন্ধ। মেডিক্যাল সুপার ডাঃ স্নেহপ্রিয় চৌধুরী বিষয়টি তোলেন। নির্মাণ কাজের দায়িত্বে রয়েছে কেএমডিএ। জ্যোতিপ্রিয়বাবু বৈঠকে উপস্থিত কেএমডিএ-র প্রতিনিধিদের দ্রুত কাজ শেষের নির্দেশ দেন। কেএমডিএ-র প্রতিনিধিরা বলেন, কাজের টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা হচ্ছে। রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি জানান, দিন দশেক আগে কেএমডিএ মৌখিক ভাবে তাঁকে বিষয়টি জানিয়েছে। লিখিত ভাবে জানালে তাদের সঙ্গে সঙ্গে টাকা মিটিয়ে দেওয়া হবে।
মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়াদের কাছাকাছি বিভিন্ন কলেজে যেতে হয়। এটা তাঁদের পাঠক্রমেরই অন্তর্গত। কিন্তু, তাঁদের যাতায়াতে খুবই অসুবিধা হয়। কারণ, কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে গাড়ি নেই। জ্যোতিপ্রিয়বাবু সঙ্গে সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত কল্যাণীর বিধায়ক রমেন বিশ্বাসকে তাঁর এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে ১০ লক্ষ টাকা দিতে বলেন। সেই টাকায় একটি গাড়ি কেনা হবে। মন্ত্রী জানান, এলাকার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরকে বলে তিনি পরে আরও একটি গাড়ি কেনার ব্যবস্থা করে দেবেন।
দিন কয়েক আগে ভুল চোখে অস্ত্রপচার নিয়ে উত্তাল হয়েছিল মেডিক্যাল কলেজ। জ্যোতিপ্রিয়বাবুর কাছে বিষয়টি জানতে চান। তিনি মনে করেন, চিকিৎসকও মানুষ। তাঁরও ভুল হতে পারে। তবে এমন ঘটনা কখনও কাম্য নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy