Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Puja bonus

পুজোর মুখে বোনাসে কোপ, কমল বেতনও       

প্রতি মাসের মাইনে যেখানে সম্পূর্ণ দেওয়া যাচ্ছে না, সে ক্ষেত্রে বোনাসের প্রশ্নই ওঠে না বলে জানিয়েছেন সমবায় সমিতির কর্তারা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২০ ০৩:৫৮
Share: Save:

পুজোর মুখে বেতন কমল নবদ্বীপের খেয়াঘাট কর্মীদের। একইসঙ্গে জানানো হয়েছে, এবারে মিলবে না পুজো বোনাসও। উৎসবের মরসুমে তাই বিষণ্ণ নবদ্বীপ, মায়াপুর বা স্বরূপগঞ্জ ফেরিঘাট।

নবদ্বীপে গঙ্গা এবং জলঙ্গি নদীর উপর মোট তিনটি রুটে খেয়া চলাচল করে। নবদ্বীপ-মায়াপুর, নবদ্বীপ-স্বরূপগঞ্জ এবং স্বরূপগঞ্জ-মায়াপুর। তিনটি ঘাট একত্রে পরিচালনা করে নবদ্বীপ জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতি। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে সমবায় সমিতির সদস্যেরা বসে বেতন কমানোর ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

গত মার্চ মাস থেকে লকডাউনের কারণে প্রায় তিন মাস টানা বন্ধ ছিল নবদ্বীপ খেয়াঘাট নৌকা চলাচল। আনলক পর্বে ট্রেন না চলায় পর্যটকের উপস্থিতি শূন্য। তারই জেরে পুজোর মুখে এসে লোকসানে চলা খেয়াঘাটের কর্মীদের বেতনে কোপ পড়ল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে পুজো বোনাস, সে কথাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। উৎসবের মুখে এমন কঠিন সিদ্ধান্তে মনে মনে ক্ষুণ্ণ হলেও ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে এই সিদ্ধান্ত মেনে নিচ্ছেন নবদ্বীপ খেয়াঘাটের কর্মীরা।

এই প্রসঙ্গে নবদ্বীপ জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতির সম্পাদক গোপাল দাসের ব্যাখ্যা, “আজ নিয়ে ৬ মাস ১০ দিন হতে চলল টানা লোকসানে চলছে খেয়াঘাট। বাজারে প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা দেনা। এই অবস্থায় বেতন না কমালে গোটা ব্যবস্থাটা মুখ থুবড়ে পড়তে পারে। তাই আমরা সকলে মিলে বসে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মাথাপিছু চার হাজার টাকা করে বেতন কম নেব আমরা। এটা সমবায় সমিতি। আমরা সকলে মিলে চালাই। তাই সবাই মিলেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” তিনি জানিয়েছেন, লকডাউনে প্রায় তিন মাস টানা বন্ধ ছিল ঘাট। তখনও জরুরি পরিষেবার জন্য নৌকা চালাতে হয়েছে। ফলে, যাত্রী না হলেও আনুষঙ্গিক খরচ প্রায় একই রকম থেকেছে। জুন মাস থেকে আনলক হওয়ার পরেও অবস্থা বিশেষ উন্নতি হয়নি। গড়ে দৈনিক ৯০ হাজার টাকা খরচ হয় নবদ্বীপ ঘাটে। অথচ, পাঁচ দফার আনলক পর্বে মেরেকেটে দৈনিক হাজার তিরিশ-পঁয়ত্রিশের বেশি রোজগার নেই। ট্রেন চলাচল শুরু না করলে পর্যটকও আসবে না। সাধারণ মানুষ খুব প্রয়োজন ছাড়া ঘাট পারাপার করছেন না।

গোপাল দাসের কথায়, “আমরা সাহায্যের জন্য জেলা পরিষদ-সহ বিভিন্ন জায়গায় আবেদন করেছি। এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও সাড়া পাইনি। তাই বাধ্য হয়ে বেতন কমানোর সিদ্ধান্ত।”

ঘাটের কর্মীদের পুজো বোনাস হিসাবে প্রতি বছর এক মাসের বেতন দেওয়া হত। প্রতি মাসের মাইনে যেখানে সম্পূর্ণ দেওয়া যাচ্ছে না, সে ক্ষেত্রে বোনাসের প্রশ্নই ওঠে না বলে জানিয়েছেন সমবায় সমিতির কর্তারা।

ওই সমবায় সমিতিতে মোট ১৬৫ জন কর্মী আছেন। এঁদের গড় বেতন মাসে ১১৮০০ টাকা। অল্প কয়েক জন সামান্য বেশি পান। সব মিলিয়ে প্রতি মাসে প্রায় কুড়ি লক্ষ টাকা বেতন বাবদ ব্যয় হয়। এ ছাড়াও মাসে চার লক্ষ টাকার ডিজেল, বিদ্যুতের বিল বাবদ এক লক্ষ টাকা, নৌকা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কম পক্ষে এক লক্ষ টাকা লাগে। সেই সঙ্গে আছে নবদ্বীপ ঘাট জেলা পরিষদের কাছ থেকে ইজারা নেওয়া বাবদ প্রদেয় অর্থ। চলতি মরসুমে বার্ষিক ৬৬ লক্ষ টাকায় ইজারা নেওয়া হয়েছে। প্রতি মাসের বিপুল ব্যয় সামলাতে এই করোনা কালে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে।

বেতন হ্রাস প্রসঙ্গে নবদ্বীপ থানা ফেরিঘাট কর্মচারী ইউনিয়নের সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র অধিকারীর বক্তব্য, “আমাদের জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতি সঞ্চিত প্রায় লক্ষ টাকা দিয়ে চৈত্র মাস থেকে এই পর্যন্ত কর্মীদের বেতন দেওয়া হয়েছে। আর সম্ভব হচ্ছে না। কর্মীদের বেতন সঙ্কোচ না করে উপায় ছিল না।”

অন্য বিষয়গুলি:

Puja bonus Nabadwip
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy