বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বিক্রি হচ্ছে নীরা।—নিজস্ব চিত্র
মিষ্টি হিসেবে অভিষেকেই সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে সে। এ বার পানীয় হিসেবেও ক্রেতাদের মন জয় করল ‘নীরা’। ফলে প্রখর নিদাঘে মধুমেহ রোগী ঠান্ডা পানীয়ে চুমুক দিতে গিয়েও ‘ওষ্ঠ’ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছেন, তাঁদের ছুঁয়ে দেখার ভরসা দিচ্ছে নীরা। কারণ, নীরা মধুমেহকে দূরে রাখে। তাই বাণিজ্যিক ভাবে বিক্রির শুরুতেই নীরার চাহিদা তুঙ্গে। হরিণঘাটা বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বিসিকেভি) চত্বরে বিক্রি শুরু হয়েছে নারকেলের ফুলের রস— নীরা। এ বার রাজ্যের অন্যত্রও নীরার উৎপাদনকে ছড়িয়ে দিতে চাইছেন উদ্যোগী কৃষি বিজ্ঞানীরা।
কেরলে অনেক আগেই নারকেল ফুল থেকে রস বের করে তাকে বিভিন্নভাবে কাজে লাগানো শুরু হয়েছে। এই রস থেকে সেখানে চিনি তৈরিও হচ্ছে। এ রাজ্যে এই প্রকল্প আনতে প্রধান উদ্যোগ নিয়েছেন বিসিকেভি-র শিক্ষক দীপক ঘোষ। সঙ্গে রয়েছেন অপূর্ব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুদ্ধশুচি দাস। দীপকবাবু জানান, স্বাদে মিষ্টি হলেও মধুমেহ রোগীদের পক্ষে তা হানিকারক নয়। এতে রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ে না, বরং শর্করাকে রক্তে মিশতে বাধা দেয়। ফলে নিয়মিত নীরা পানে মধুমেহ অনেকটাই রোখা যায়।
হুগলির বলাগড়ের বাগুলিয়া দোয়াপাড়ার চাষি দেবব্রত ঘোষের বাগানে প্রথম নীরার উৎপাদন শুরু হয়। দীপকবাবু জানান, একটি নারকেল গাছের ডাব বা নারকেল থেকে বছরে ১০০০-১২০০ টাকা আয় হতে পারে। কিন্তু একটি গাছ থেকে ফুলের রস থেকে ১২০০০-১৫০০০ টাকা আয় হতে পারে। এই রস শক্তিবর্ধককারী পানীয় হিসেবেও পান করা যেতে পারে। আপাতত দেবব্রতবাবুর বাগানের ৫০টি গাছকে প্রকল্পের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে।
মার্চ মাসের শেষের দিকে পরীক্ষামূলকভাবে বিসিকেভি চত্বরে প্রথম নীরা বিক্রি শুরু হয়েছিল। তা সফল হওয়ায় এ বার নিয়মিত ভাবে বিক্রি শুরু হল। এই প্রথম বাজারে সরাসরি রস বিক্রি শুরু হলেও ইতিমধ্যে একটি বিখ্যাত মিষ্টান্ন প্রস্তুতকারী সংস্থা নীরা কিনতে শুরু করেছে।
নীরা থেকে তৈরি মিষ্টি বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে প্রতি বৃহস্পতিবার এই রস বিক্রি হবে। প্রথম দিন ১৪ লিটার রস আনা হয়। মুহূর্তেই তা শেষ হয়ে যায়। তার পর প্রতি সপ্তাহে এক দিনের বদলে দু’দিন করে নীরা বিক্রি হচ্ছে। পরিমাণ বাড়িয়ে ৩০ লিটার করা হয়েছে। দাম রাখা হয়েছে ১০০ মিলি রস ১০ টাকা।
দীপকবাবু বলেন, ‘‘এই পানীয়কে আরও জনপ্রিয় করতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি শুরু করেছি। অনেক চাষিও বিষয়টি নিয়ে উৎসাহী। আশা করছি, এ বার অনেকেই এগিয়ে আসবেন।’’ তবে এই রস স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ঠিক থাকে না। বরফ দিয়ে বা অন্য কোনওভাবে সংরক্ষণ করতে হয়। জাগুলি বাজারের ব্যবসায়ী অমিত সরকার বলেন, ‘‘সুগারের রোগী। এতদিন ঠান্ডা পানীয় খাওয়া বারণ ছিল। এখন আর সে বাধা রইল না।’’
নীরা কী কাউকে ফেরাতে পারে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy