তোলা হল দেহ। নবদ্বীপ। —নিজস্ব ছবি।
মামাকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হল ভাগ্নে। প্রায় ১০ দিন নিখোঁজ থাকার পর বুধবার নবদ্বীপের মিঞাপাড়া গ্রামের একটি ঘরের মেঝে খুঁড়ে উদ্ধার হয় সফিউল মণ্ডল (৩৬) নামে এক ব্যক্তির পচাগলা দেহ। তাঁকে খুন করে দেহ লোপাটের অভিযোগে পুলিশ মন্টু মণ্ডল নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। সফিউল সম্পর্কে মন্টুর দূর সম্পর্কের মামা।
মৃতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ার উত্তর চাতরার বাসিন্দা সফিউল এবং চাতরার বাসিন্দা মন্টু এক সঙ্গে নবদ্বীপের গ্রামাঞ্চলে মৌমাছি প্রতিপালন করে মধুর ব্যবসা করতেন। জানা গিয়েছে মন্টু বেশ কিছু দিন আগেই ব্যবসা ছেড়ে দেন। বর্তমানে তিনি বেঙ্গালুরুতে কাজ করেন। নবদ্বীপের মাজদিয়া-পানশিলা পঞ্চায়েতের মিঞাপাড়ায় ঘর ভাড়া নিয়ে বহু দিন বসবাস করছিলেন সফিউল। তাঁর পরিবার সূত্রে জানানো হয়, ৯ জুলাই থেকে সফিউলের কোনও হদিস মিলছিল না।
মৃতের বাবা আরসাফ মণ্ডলের অভিযোগ, মন্টু তাঁর ছেলেকে ৯ জুলাই ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। সেই রাতে ছেলে ফোনে ভিডিয়ো কল করে বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথাও বলেছে। তার পর থেকে তাঁর কোনও হদিস পাওয়া যায়নি। ফোনও বন্ধ ছিল। আরসাফ বলেন, “বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে নবদ্বীপে এসে দেখি ভাড়াবাড়ি তালাবন্ধ। এর পর আমাদের সন্দেহ জোরালো হয়।” সফিউলের বন্ধু রাজীব ইসলাম বলেন, “মন্টু ওকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। ফলে মন্টু কিছু জানতে পারে এই অনুমান থেকেই বারে বারে জিজ্ঞাসা করেছি। ও প্রতিবার বলেছে কিছু জানি না। রবিবার রাতে আমরা বাধ্য হয়ে বাদুড়িয়া থানায় যাই। এরপরই এক এক করে সব সামনে আসতে শুরু করে।”
বাদুরিয়া থানা বিষয়টি নিয়ে নবদ্বীপ থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে। মঙ্গলবার রাতেই পুলিশ বাদুড়িয়ায় গিয়ে মন্টুকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে। জেরার মুখে সে খুনের কথা স্বীকার করে। জানা গিয়েছে ৯ জুলাই রাতেই মিঞাপাড়ার ঘরেই মন্টু বাঁশ দিয়ে মাথায় আঘাত করে সফিউল করে খুন করে। তার পর ঘরের মেঝে খুঁড়ে দেহ কম্বলে মুড়ে মাটিতে পুঁতে দেয়। বুধবার মন্টুকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশ মিঞাপাড়ার ভাড়া বাড়ি থেকে দেহ উদ্ধার করে। ধৃতই দেখিয়ে দেয় ঠিক কোথায় খুন করে সে পুঁতে রেখেছে সফিউলের দেহ। মৃতদেহের সঙ্গে একটি কোদাল ও বাঁশের টুকরোও উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ধৃতের বিরুদ্ধে খুন ও সাক্ষ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে। নবদ্বীপ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি নবেন্দু মণ্ডল বলেন “ধৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ এবং ২০১ ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।” বুধবার ধৃতকে আদালতে হাজির করে পুলিশ ১০ দিনের হেফাজত চাইলে নবদ্বীপের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাত দিনের পুলিস হেফাজতের নির্দেশ মঞ্জুর করেছেন। কৃষ্ণনগরের অতিরিক্ত পুলিস সুপার (গ্রামীণ) কৃশাণু রায় বলেন “প্রাথমিক অনুমান ব্যবসার লেনদেন বা টাকাপয়সা সংক্রান্ত কোনও বিষয় এই ঘটনা পিছনে থাকতে পারে। ধৃতকে পুলিশ হেফাজত নিয়ে খতিয়ে দেখা হবে ঠিক কী কারণে এই খুন এবং সঙ্গে আর কেউ জড়িত আছে কি না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy