Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Migrant Workers

আমার রাজ্যই আমাকে ঢুকতে বাধা দিল

বাড়ির উঠোনে হাসি ফোটাতে বাড়তি রুজির হাতছানিতে ওঁদের ঠিকানা ভিন প্রদেশে। কিন্তু লকডাউনের অনুশাসনে  রুজি তো গেছেই ঘরে ফেরাও ঝুলে ছিল সুতোর উপরে। দুর্বিষহ সেই প্রবাস কিংবা অনেক লড়াইয়ের পরে ফিরে আসার সেই গল্প বলছেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা, শুনল আনন্দবাজারবাড়ির উঠোনে হাসি ফোটাতে বাড়তি রুজির হাতছানিতে ওঁদের ঠিকানা ভিন প্রদেশে। কিন্তু লকডাউনের অনুশাসনে  রুজি তো গেছেই ঘরে ফেরাও ঝুলে ছিল সুতোর উপরে। দুর্বিষহ সেই প্রবাস কিংবা অনেক লড়াইয়ের পরে ফিরে আসার সেই গল্প বলছেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা, শুনল আনন্দবাজার

প্রতীকী চিত্র। 

প্রতীকী চিত্র। 

‌মোসারফ শেখ
ভরতপুর শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০২০ ০১:২১
Share: Save:

অভাব অনটনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে আমার শৈশব। মাত্র ১৬ বছর বয়সে কাজের খোঁজে গ্রামের দাদাদের সঙ্গে মুম্বই শহরে পাড়ি দিয়েছিলাম। একটি হোটেলে কাজ পাই। থাকা ও খাওয়া-সহ মাসে দেড় হাজার টাকা বেতন পেতাম। এখন সেটা প্রায় নয় হাজারে ঠেকেছে। এখন আমি হোটেলে খাবার পরিবেশন করি। প্রায় বারো বছর ধরে মুম্বই শহরে আছি, বলা যেতে পারে আমি ওই শহরের বাসিন্দা হয়ে উঠেছি। কিন্তু করোনাভাইরাস রোধ করতে জনতা কার্ফুর মধ্যে দিয়ে লকডাউন শুরু হয়ে যাওয়ার ঘটনায় সব কিছুই আমার কাছে অচেনা হয়ে যায়। চেনা মানুষ যেমন আমাকে চিনতে পারেনি, ঠিক একই ভাবে কেও আমাদের খোঁজখবরও রাখে নেয়নি।

মাস দু’য়েক ওই শহরে লকডাউনে আটকে থাকার পরে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করি। এ দিকে আমাদের গ্রামের আশেপাশের গ্রামের যে সমস্ত ছেলেরা কাজ করত, তাদের কাছ থেকে প্রায় ১৮ হাজার টাকা ঋণ হয়ে গিয়েছে ওই ক’দিনে। শেষে বাড়ি ফেরার সময় বাস ভাড়ার সাড়ে ছয় হাজার টাকা ধার করে বাড়ি ফিরতে পেরেছি।

দীর্ঘ দিন কাজ নেই, আবার প্রায় ২৫ হাজার টাকা ঋণ হয়েছে। বাড়ি ফিরে স্ত্রীর সোনার গহনা বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছে। মুম্বই থেকে টানা পাঁচ দিন ধরে বাসে বাড়ি ফিরেছি। বাসে ওঠার সময় চিঁড়ে আর চিনি কিনে নিয়েছিলাম। তাই রক্ষা হয়েছে। কারণ তিন দিন অবিরাম বাস চলেছে কিন্তু কোথাও খাবার দিতে দেখা যায়নি। শেষে ওড়িশাতে এসে পাউরুটি, কলা আর কিছু শুকনো খাবার দিয়েছিল। তারপর চার দিন পর ঝাড়খণ্ডে লুচি আর ঢেঁড়শের তরকারি দিচ্ছিল। সেটা খুব সুন্দর খেয়েছিলাম।

কিন্তু বাড়ি ফেরার সময় আমার রাজ্যই আমাকে ঢুকতে বাধা দেয়। পশ্চিম বর্ধমান থেকে আমাদের বের করে দেওয়া হয়। আমাদের বাস বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম হয়ে মুর্শিদাবাদে এসে পৌঁছয়। তাই ফের মুম্বই যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy