Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Murshidabad

ছিন্ন হয়েও ১৮ অগস্ট ফের জুড়ে ছিল মুর্শিদাবাদ

মুর্শিদাবাদের জেলার প্রবীণেরা তাই মনে করেন, ১৫ অগস্ট নয় ১৮ অগস্ট জেলার স্বাধীনতা দিবস।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়
বেলডাঙা শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২০ ০৩:৩৬
Share: Save:

সন্ধ্যাটা কিন্তু এমন হওয়ার কথা ছিল না। আকাশবাণীর খবর হঠাৎ করে সব হিসেব বদলে দিল এক ঝটকায়। সব আলো যেন দপ করে নিভে গেল মুর্শিদাবাদের আকাশ থেকে— মুর্শিদাবাদ স্বাধীন ভারতের অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে না। তার ঠাঁই হয়েছে পূর্ব পাকিস্তানে। দেশ ভাগের মানচিত্রের উপরে আঁচড় টেনে সব কেমন তালগোল পাকিয়ে দিয়েছেন যেন সিরিল র‌্যাডক্লিফ সাহেব। তারই জেরে পাক্কা তিন দিনের আন্দোলনে শেষতক ভাঙে ভুল। ১৮ অগস্ট ফের ভারতে অর্ন্তভূক্তি ঘটে মুর্শিদাবাদের।

মুর্শিদাবাদের জেলার প্রবীণেরা তাই মনে করেন, ১৫ অগস্ট নয় ১৮ অগস্ট জেলার স্বাধীনতা দিবস।

জেলার বিভিন্ন পত্র পত্রিকা থেকে জানা যায়, ১৯৪৭ সালের ১৪ অগস্ট রাতে দেশভাগ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে মুর্শিদাবাদ জেলা পূর্ব পাকিস্তানে পরে যায়। জেলার সর্বত্র পাকিস্তানের পতাকা ওড়ে। পরে দিল্লি থেকে নানা ভাবে খবর মেলে ১৭ অগস্ট সন্ধ্যা নাগাদ, মুর্শিদাবাদ জেলা ভারত-ভুক্ত হয়েছে। এই প্রসঙ্গে মুর্শিদাবাদে সম্প্রতি দেশভাগ অভিঞ্জতা নিয়ে কাজ করেছেন মালদহ কলেজের ইতিহাসের অধ্যাপক প্রবাল বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘বহরমপুর, বেলডাঙা, কান্দি এলাকার প্রত্যন্ত গ্রামে গিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা অনেকে জানিয়েছেন, ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট যখন মুর্শিদাবাদ পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হল তখন অনেকে ভারত ছেড়ে পূর্ব পাকিস্তানে চলে যায়। আবার সেই সময়ের পাকিস্তান ছেড়ে অনেকে ভারতে চলে আসে। ১৮ অগস্ট পুনরায় স্বাধীনতার কথা শুনে তাঁদের অনেকে আগের অবস্থানে ফিরে আসেন।” বেলডাঙা এসআরএফ কলেজের অধ্যাপক ও সমাজ বিঞ্জানের গবেষক দেবর্ষি ভট্টাচার্য বলেন, “মুর্শিদাবাদের ভারত-ভুক্তির ঘোষণা হয় ১৭ অগস্ট রাতে। সেই খবর আসে ১৮ তারিখে। সেই দিনই স্বাধীনতা দিবস পালন হয়। কিন্তু এই ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ মানুষের সামনে বেশি করে এসেছে ১৯৯১ নাগাদ। নদিয়ার কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা অঞ্জন শুক্লের দাদু প্রমথনাথ শুক্ল ছিলেন নদিয়ার পরিচিত স্বাধীনতা সংগ্রামী। অঞ্জন শুক্ল গবেষণা করে ১৮ অগস্ট নদিয়ার নানা প্রান্তে স্বাধীনতা দিবস পালন শুরু করেছিলেন। প্রথমত তাঁর বিরোধীতা করা হয়। কিন্তু পরে তিনি নানা প্রমাণ পত্র সম্মিলিত ভাবে সামনে আনেন। পরে রাজ্য সরকারের তাকে এই কাজের জন্য তথ্য সংস্কৃতি দফতরের পক্ষ থেকে সম্মানিত
করা হয়।”

বেলডাঙার প্রবীন বাসিন্দা ও লোক সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করেছেন সন্তোষরঞ্জন রায়। ১৮ অগস্ট স্বাধীনতা দিবস হিসাবে বলতে গিয়ে বলেন, “সীমানা কমিশনের উল্টোপাল্টা সিদ্ধান্তের ফলে মুর্শিদাবাদ জেলায় ১৫ অগস্ট ও ১৮ অগস্ট দু’বার দুটি সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্রের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল। আমি এই ১৮ অগস্ট নিয়ে কাজ করতে গিয়ে জেনেছি, ১৯৪৭ সালের ১৮ অগস্ট বেলডাঙার গোবিন্দসুন্দরীর স্কুল মাঠে ভারতের তেরঙা পতাকা ওড়ে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Murshidabad India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy