Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
Adhir Chowdhury

অধীরের খবরের দিকে নজর জেলার

২০১৮ সালের মতো এ বারেও বিভিন্ন দল থেকে অধীরকে কংগ্রেস ছেড়ে তাঁদের দলে যোগদানের জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে।

অধীর চৌধুরী।

অধীর চৌধুরী। —ফাইল চিত্র।

সামসুদ্দিন বিশ্বাস
বহরমপুর শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২৪ ০৯:০৬
Share: Save:

পাঁচ বারের সাংসদ অধীর চৌধুরী এ বারে বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের তারকা প্রার্থী ইউসুফ পাঠানের কাছে পরাজিত হয়েছেন। লোকসভা ভোটের ফল বেরনোর পরে অধীর সর্বভারতীয় কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের কাছে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি হিসেবে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তা গ্রহণ হয়েছে কি না জানানোর আগেই দিন কয়েক আগে দিল্লিতে দলের বৈঠকে অধীরকে প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলে অভিহিত করেছেন প্রদেশ কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক গোলাম আহমেদ মীর। আর তা নিয়ে গত কয়েক দিন থেকে জলঘোলা শুরু হয়েছে প্রদেশ কংগ্রেসের অন্দরে। যা নিয়ে দু’দিন আগে অধীর নিজে বলেছেন, ‘‘আমি খড়্গেজির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছিলাম। উনি দিল্লিতে এসে আলোচনা করতে বলেন। তিনি কথা বলবেন বলেছিলেন। ওঁর সঙ্গে দেখা হয়নি। আমি এ বারে দেখলাম এআইসিসির বৈঠকে আমাকে প্রাক্তন সভাপতি হিসেবে অভিহিত করা হল। কিন্তু আমার পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়ে‌ছে কি না জানি না।’’

অন্য দিকে, ২০১৮ সালের মতো এ বারেও বিভিন্ন দল থেকে অধীরকে কংগ্রেস ছেড়ে তাঁদের দলে যোগদানের জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে অধীর কী করেন, সে দিকে তাকিয়ে রয়েছে মুর্শিদাবাদের কংগ্রেসের নেতাকর্মীরা। কারণ দীর্ঘ দিন ধরে জেলা কংগ্রেস তো বটেই, প্রদেশ কংগ্রেসের মাথা অধীর। তামাম মুর্শিদাবাদ হাতের তালুর মতো চেনা অধীরের।

তবে প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘অধীর চৌধুরী এক জন প্রাজ্ঞ সর্বভারতীয় নেতা। তিনি বহু বার দলকে সাফল্য দিয়েছেন তাঁর রাজনৈতিক জীবনে। এখন অধীর চৌধুরী পদত্যাগ করেছেন নৈতিক কারণে। রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে তাঁর লড়াই আদর্শগত এবং কর্মীদের স্বার্থে। নিজস্ব স্বার্থ থাকলে, দলীয় স্বার্থ ছেড়ে লোকসভা নির্বাচনে দু’টি আসনের প্রস্তাবে রাজি হতেন। অধীর চৌধুরী ছাড়া রাজ্যে কংগ্রেস কর্মীদের কাছে এমন কেউ নেই যিনি অক্সিজেন জোগাতে পারবেন।’’

২০১৮ সালে অধীরকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তখনও অধীরকে ঘিরে নানা জল্পনা তৈরি হয়েছিল। তখনও অধীরকে কংগ্রেস ছেড়ে তাঁদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল কিছু দল। এ বারেও অধীরকে সেই আহ্বান জানানো হচ্ছে। একদা অধীর চৌধুরীর সঙ্গী বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠিক জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান রবিউল আলম চৌধুরী বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নেত্রী মেনে এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নেতা মেনে আমাদের দলে এলে অধীর চৌধুরীকে তৃণমূলে স্বাগত।’’

অধীরকে ছেড়ে এক সময় আপনারা তৃণমূলে গিয়েছেন। আর তাঁর সঙ্গে দল করতে অসুবিধা হবে না? রবিউল বলেন, ‘‘তৃণমূল বড় দল। অনেক দল থেকে আমাদের দলে নেতাকর্মীরা এসেছেন। উনি এলে একই ভাবে দল করবেন।’’

বিজেপির বহরমপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শাখারভ সরকার বলেন, ‘‘অধীর চৌধুরী যদি বিজেপিতে আসেন আমরা স্বাগত জানাব। তাঁর জন্য আমাদের দলের দরজা খোলা আছে।’’

যা শুনে প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলছেন, ‘‘যাঁরা অধীর চৌধুরীকে তাঁদের দলে ডাক দিচ্ছেন, তাঁরা একদা আমাদের সঙ্গে দল পরিচালনা করতেন। অধীর চৌধুরীর বদান্যতায় নির্দল প্রার্থী হয়ে অথবা টিকিট পেয়ে জয়ী হয়ে বিধায়ক হয়ে রাজনৈতিক পরিচয় পেয়েছেন। তাই অধীর চৌধুরী কী করবেন তা আমাদের জিজ্ঞাসা করলে আমরা বলে দিতাম। অধীর চৌধুরীর দৌলতে রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া বিধায়ক বা সাংসদদের অধীর চৌধুরীকে জ্ঞান দেওয়ার কিছু নেই। এ যেন অনেকটা চাঁদের সূর্যকে আলো দান করার মতো শোনায়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Congress Murshidabad
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE