প্রতীকী ছবি।
স্ত্রীকে খুনে অভিযুক্ত শামিম আহমেদের বিরুদ্ধে ব্যবসার টাকা তছরুপের অভিযোগও পেল পুলিশ। তদন্ত করে পুলিশ জানতে পেরেছে লকডাউন পর্বে ব্যবসা থেকে কয়েক লক্ষ টাকা তছরুপ করেছে শামিম। কিন্তু ওই টাকা কীভাবে ক্ষতি হয়েছে বা কোথায় খরচ করেছে পুলিশ তা-ও খতিয়ে দেখছে। পুলিশের বক্তব্য, জেরায় শামিম বলেছে প্রথম থেকেই স্ত্রী অপছন্দের ছিল বলেই সে তাঁকে খুনের চক্রান্ত করে। কিন্তু টাকা তছরুপের কথা উঠে আসায়, পুলিশের একাংশের ধারণা, কেবল অপছন্দই স্ত্রীকে খুন কার কারণ না-ও হতে পারে। অন্য কোনও কারণও থাকতে পারে। শামিমের যে সঙ্গী এই কাজে জড়িত ছিল, তাকে এখনও পুলিশ ধরতে পারেনি। সে টাকার জন্য খুন করেছে কি না, তা-ও পরিষ্কার নয়। পুলিশ তাকে খুঁজছে। পুলিশের এক কর্তা জানান, শামিমের সঙ্গীকে ধরতে পারলে অনেক কথাই স্পষ্ট হবে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন থেকে সেই যুবক মোবাইল বন্ধ করে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। পুলিশের ধারনা ওই যুবক জেলাতেই আছে। সেই মতো পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছে। রবিবার সন্ধ্যায় মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার বলেন, ‘‘শামিমকে আজ সোমবার আদালতে তোলা হবে। অপর অভিযুক্ত সাবির আহমেদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’
ওই তরুণীর মৃত্যুতে সারা রামেশ্বরপুরেই শোক নেমে এসেছে। তাঁদের শোক বদলেছে ক্ষোভে। তাঁরা বলছেন, এমন কাণ্ড যারা ঘটাতে পারে, তাদের কঠোর শাস্তি চাই। শনিবার সন্ধ্যায় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। রবিবার সেখানে ময়না তদন্তের পরে কান্দির রামেশ্বরপুরে মৃতদেহ পৌঁছয়। এদিন সন্ধ্যায় ওই তরুণীর দেহ কবর দেওয়া হয়েছে। আত্মীয়স্বজনের পাশাপাশি গ্রামের অনেকে ছিলেন। তবে ধৃত শামিমের পরিবারের কাউকে দেখা যায়নি।
শামিমের দূর সম্পর্কের আত্মীয় মোতড়ার এক যুবক রবিবার সন্ধ্যায় রামেশ্বরপুরে ওই তরুণীর শেষ কৃত্যে যোগ দিতে এসে বলেন, ‘‘আমরা জানতাম ও খুবই ভাল ছেলে। কিন্তু ওই যে এমন কাণ্ড ঘটাবে ভাবতে পারিনি। আমরাও চাই এমন খুনির ফাঁসি হোক।’’ মৃত তরুণীর বাবাও অভিযু্ক্তের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কান্দির মোতড়া গ্রামের শামিম আহমেদ বিয়ে করেছিল তারই বাবার বন্ধুর মেয়েকে। দুই পরিবারের ইচ্ছেয় বিয়ে হলেও প্রথম থেকেই ওই তরুণীকে শামিমের পছন্দ ছিল না বলে পুলিশকে জানিয়েছে। তাই পথের কাটা সরাতে নিজের দোকানের কর্মী কান্দির কামারহাটির এক যুবককে দিয়ে স্ত্রীকে খুনের পরিকল্পনা করেছিল শামিম। গত ১২ অক্টোবর বিকেলে স্ত্রীকে নিয়ে শামিম কান্দি-বহরমপুর রাজ্য সড়ক ধরে বহরমপুরে আসে। খাগড়ার একটি শপিংমল থেকে বাজার করে মোহনের মোড়ের একটি পরিচিত রেস্তরাঁয় খাওয়া দাওয়া সারে। এর পরে বহরমপুর-কর্ণসুবর্ণ হয়ে তাঁরা বাড়ির রাস্তা ধরে।
বাঁকি ব্রিজের আগে ফাঁকা মাঠে অপেক্ষা করছিল শামিমের দোকানের ওই কর্মী। সেখানে শামিম মোটরবাইক দাঁড় করায়। সে সময় পূর্ব পরিকল্পনা মতো শামিমের দোকানের ওই কর্মী ওই তরুণীকে পিছন থেকে জাপটে ধরতেই শামিম সেখান থেকে পালিয়ে যায়। তরুণীর শ্বাসরোধ করে নয়ানজুলিতে ফেলে দেওয়া হয়। মারা গিয়েছে ভেবে শামিমের দোকানের ওই কর্মী সেখান থেকে পালিয়ে যায়। তবে শামিম বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীকে অপহরণের গল্প ফাঁদে। পরের দিন ভোরে নয়ানজুলির ধার থেকে গুরুতর জখম ওই তরুণীকে উদ্ধার করে। পাঁচদিনের লড়াই শেষে শনিবার সন্ধ্যায় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy