Advertisement
E-Paper

Murder: একাধিক হাতের ছাপ, খুনের সূত্র খুঁজতে ফরেন্সিক

পলাশিপাড়ার রানিনগর তুঁতবাগান পাড়ায় এই খুনের পরের দিনই পাশের  বাড়ির বাসিন্দা, ইটভাটার কর্মী কৃষ্ণ মণ্ডলকে গ্রেফতার করা হয়।

প্রতীকী ছবি।

সাগর হালদার  

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০২২ ০৫:২৩
Share
Save

এক জন নয়। রানিনগরে একই রাতে বাবা-মা ও মেয়ের খুনের ঘটনায় একাধিক লোক জড়িত ছিল বলে সন্দেহ সিআইডি-র আঙুলের ছাপ (ফিঙ্গারপ্রিন্ট) বিশেষজ্ঞদের। শুক্রবার তাঁরা ছাড়াও ওই বাড়িতে তদন্তে যান সিআইডি-র ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। তাঁরা মেঝেয় পড়ে থাকা রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। তবে খুনের অস্ত্র এখনও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এ দিন মেটাল ডিটেক্টর নিয়ে বাড়ির আশপাশে খোঁজাখুঁজি করে পুলিশের একটি দল। ধৃতকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণও করা হয়নি।

সোমবার রাতে বাড়িতে ঢুকে প্রৌঢ় ভাগচাষি ডমন রাজোয়ার, তাঁর স্ত্রী সুমিত্রা রাজোয়ার ও বিবাহিত মেয়ে মালা মণ্ডলকে গলার নলি কেটে খুন করে আততায়ী। তবে মালার পাশে শুয়ে থাকা তাঁর তিন নাবালক সন্তান বেঁচে যায়। মালা রক্তাক্ত অবস্থাতেই বেরিয়ে গিয়ে সামনে বাড়ির দরজায় ধাক্কা দেন এবং সেখানেই পড়ে মারা যান। পড়শিদের বয়ান থেকে পুলিশের ধারণা, আততায়ীকে মালা সম্ভবত চিনতে পেরেছিলেন, কিন্তু কারও নাম বলার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়।

পলাশিপাড়ার রানিনগর তুঁতবাগান পাড়ায় এই খুনের পরের দিনই পাশের বাড়ির বাসিন্দা, ইটভাটার কর্মী কৃষ্ণ মণ্ডলকে গ্রেফতার করা হয়। রাস্তায় পাথর ফেলা নিয়ে পাশপাশি দুই বাড়ির মধ্যে চলতে থাকা বিবাদের জেরেই এই খুন বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। পুলিশের দাবি, কৃষ্ণ জেরায় খুনের কথা কবুল করেছে। কিন্তু তার কথায় নানা অসঙ্গতি রয়েছে। যেমন অসঙ্গতি রয়েছে তার দুই ছেলের কথাতেও।

এ দিন সকালেই গ্রামে পৌঁছয় রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশের (সিআইডি) একটি দল। দুপুরে যান আঙুলের ছাপ বিশেষজ্ঞেরা। বাড়ির দরজা ও খুনের জায়গার আশপাশে তাঁরা একাধিক হাতের ছাপ পেয়েছেন বলেই পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে তা কৃষ্ণ বা তার পরিবারের কারও কি না, তা স্পষ্ট করে জানা যায়নি। তবে যে সামান্য সময়ে অত বড় হামলা চালানো হয়েছে তা এক জনের পক্ষে খুবই কঠিন বলে মনে করছে পুলিশও। তবে এটা কোনও ভাড়াটে খুনির কাজ সময় বলেও তাঁরা সকলে নিঃসন্দেহ। কারণ ভাড়াটে খুনিদের কাজের ধরনের সঙ্গে এই খুনের ধরনের মিল নেই। তা ছাড়া তিন জনকে খুন করতে মোটা টাকা খরচও করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কেন কেউ তা করবে, তা কোনও যুক্তসঙ্গত কারণও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

এ দিনও বাড়ির সামনে ছিল পুলিশি পাহারা। তবে লোকের ভিড়, আসা-যাওয়া আগের চেয়ে অনেকটাই কমে গিয়েছে। কাছেই পাড়ার বাঁশের মাচা। আগের দিন সেখানে অনেকে বসে জটলা করছিলেন, এ দিন সেই মাচাও ফাঁকা। খুনের এক দিন পরে হরিয়ানার কর্মস্থল থেকে ফিরেছেন মালার স্বামী বিধান মণ্ডল। আপাতত রয়েছেন ধাওড়াপাড়ায় এক আত্মীয়ার বাড়িতে। এ দিন দুপুরে দেড় বছরের ছেলেকে কোলে নিয়ে তিনি এক বার এই বাড়িতে আসেন। তবে বাকি দুই মেয়ে আসেনি।

পাশেই কৃষ্ণ মন্ডলের বাড়ি কার্যত থমথমে। কৃষ্ণের বড় ছেলে গোপীনাথ জানান, তাঁর মা কণিকা মণ্ডল অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী। আগের দিনই বাগানে মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। কারও সঙ্গে কথা বলার অবস্থায় নেই। বাড়ির সামনে গাছের নীচে মুখ ভার করে বসে থাকা গোপীনাথ বলেন, “বাবা থানায়, মা অসুস্থ। কী করে যে কী করব বুঝে উঠতে পারছি না।” তবে তাঁর নাবালক ভাইকে বাড়িতেই অন্য ছেলেদের সঙ্গে খেলতে দেখা যায়।

পুলিশ জানায়, তাদের হেফাজতে থাকা কৃষ্ণকে দফায় দফায় জেরা করে অস্ত্র উদ্ধারের সব রকম চেষ্টা হচ্ছে। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) কৃশাণু রায় বলেন, “অস্ত্র কোথায় রেখেছে তা ধৃত এখনও বলেনি। এ দিন ওই বাড়ির আশপাশে বাগানে খোঁজাখুঁজি করেছে পুলিশ। ফরেন্সিক টিম কিছু নমুনা সংগ্রেহ করে নিয়ে গিয়েছে। ঘটনার পুনর্নির্মাণ কবে করানো যায়, তা দেখা হচ্ছে।”

এই খুনে আর কেউ জড়িত ছিল কি না, থাকলে তারা কারা, তা-ও জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।

Forensic Murder

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}