কোটি কোটি টাকা সাইবার প্রতারণার অভিযোগে নদিয়া থেকে গ্রেফতার তিন জন। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন অসমের এক বাসিন্দা।
পুলিশ সূত্রের খবর, কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার থানারপাড়া থানা এলাকার পণ্ডিতপুর এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছিল। তাতে তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার ধৃতদের আদালতে হাজির করানো হয়। সাইবার প্রতারণা চক্রে জড়িত অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে চেয়ে আবেদন করে পুলিশ। ধৃতদের কাছ থেকে মিলেছে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের পাসবই, এটিএম কার্ড, মোবাইল ফোন এবং বেশ কয়েকটি সিম কার্ড। অভিযুক্তেরা বিভিন্ন কায়দায় বিভিন্ন ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ। তবে ওই কাণ্ডে মূলচক্রী এখনও অধরা। তাঁর খোঁজ শুরু করেছে কৃষ্ণনগর জেলা পুলিশ।
জানা গিয়েছে, গত ৪ ফেব্রুয়ারি পুলিশের কাছে খবর আসে অসমের কয়েক জন সন্দেহভাজন কৃষ্ণনগরের পণ্ডিতপুরের একটি জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। অভিযুক্তেরা একটি ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন এবং তাঁরা অনলাইনে বিভিন্ন রকম সন্দেহজনক কাজকর্ম করেন। প্রায় দু’দিন নজরদারি চালানোর পর বৃহস্পতিবার গভীর রাতে একটি বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। গ্রেফতার হন অসমের ধুবড়ি জেলার বাসিন্দা সেলিম রেজা, নদিয়ার থানারপাড়া থানা এলাকার বাসিন্দা মোজাম্মেল মণ্ডল এবং বাদশা শেখ। তাঁদের কাছ থেকে ছ’টি মোবাইল ফোন এবং প্রায় ৩০টি সিম কার্ড উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ছাড়াও এটিএম কার্ড, বিভিন্ন ব্যাঙ্কের পাসবই উদ্ধার হয়।
আরও পড়ুন:
তদন্তে উঠে এসেছে, মূলত অসমে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের অ্যাকাউন্ট থেকে কোটি কোটি টাকা সরিয়েছেন ‘প্রতারকেরা’। নদিয়া থেকে ধৃত দু’জন ওই চক্রে ‘এজেন্ট’ হিসাবে কাজ করতেন বলে পুলিশ সূত্রের খবর। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, অসমে একটি সাইবার প্রতারণা চক্রের লোকজের সঙ্গে গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে হয় নদিয়ার কয়েক জন বাসিন্দার। অসম পুলিশের চোখে ধুলো দিতে ওই দলের বড় অংশ নদিয়ায় চলে আসে। গত কয়েক মাসে তারা ৬-৭ কোটি টাকা বিভিন্ন ভাবে তুলে নিয়েছে। নদিয়ার মোজাম্মেল এবং বাদশা প্রতারণার অঙ্ক থেকে ১০ থেকে ২০ শতাংশ হারে কমিশন পেতেন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উত্তমকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘সাইবার প্রতারণার অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হচ্ছে। মূল পাণ্ডাকে গ্রেফতার করার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।’’