Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
Mukutmani Adhikari

রোগী কল্যাণ সমিতির শীর্ষে আসছেন মুকুট

২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে নদিয়ার দক্ষিণে নবদ্বীপ ছাড়া অন্য বিধানসভা কেন্দ্রগুলি বিজেপির দখলে গিয়েছিল।

মুকুটমণি অধিকারী।

মুকুটমণি অধিকারী। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রানাঘাট শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২৪ ০৮:৪৮
Share: Save:

বদলে গিয়েছে দলীয় প্রতীক চিহ্ন। আর তাই রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতির পদ পেতে চলেছেন রানাঘাট দক্ষিণের উপনির্বাচনে জয়ী তৃণমূলের মুকুটমণি অধিকারী।

এতদিন ওই পদের দায়িত্বে ছিলেন শান্তিপুরের বিধায়ক তৃণমূলের ব্রজকিশোর গোস্বামী। চিকিৎসক বিধায়কের হাত ধরে তবে কি এবার মহকুমা হাসপাতালের উন্নয়নের কাজে গতি আসবে? বিভিন্ন মহলে সেই প্রশ্নই এখন উঠতে শুরু করেছে।

২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে নদিয়ার দক্ষিণে নবদ্বীপ ছাড়া অন্য বিধানসভা কেন্দ্রগুলি বিজেপির দখলে গিয়েছিল। পরে অবশ্য উপনির্বাচনে শান্তিপুর বিধানসভায় তৃণমূলের ব্রজকিশোর গোস্বামী জয়ী হন। নিয়ম অনুযায়ী বিধানসভার অধীনে থাকা সরকারি হাসপাতালগুলির রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি পদে থাকার কথা সংশ্লিষ্ট বিধায়কের। অথচ রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের ক্ষেত্রে তা হয়নি। নিয়মের বাইরে গিয়ে ওই পদে বসানো হয়েছিল শান্তিপুরের বিধায়ককে।

কিন্তু সম্প্রতি হয়ে যাওয়া রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে আসা মুকুটমণি অধিকারী। দ্বিতীয়বারের জন্য তিনি বিধায়ক হয়েছেন। রানাঘাট মহকুমা হাসপাতাল আবার রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভার অধীন।ফলে স্বাভাবিক নিয়মেই রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি পদ পেতে চলেছেন তৃণমূল বিধায়ক।

সূত্রের খবর, হাসপাতালের পরিকাঠামগত এবং প্রশাসনিক বিভিন্ন সিদ্ধান্তে সিলমোহর দেয় রোগী কল্যাণ সমিতি। এছাড়া হাসপাতালের বিভিন্ন সামগ্রী কেনাকাটা, বিশেষ ভাবে কোনও রোগীকে ভর্তি নেওয়া সব কিছুই মূলত সমিতির নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে সমিতির সভাপতি পদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালের আংশিক রাশ চলে যায় বিধায়কের হাতে। রাজনৈতিক ভাবেও এলাকার জনসংযোগ আরও দৃঢ় করার ক্ষেত্রে এই পদের গুরুত্ব রয়েছে।

এতদিন শান্তিপুরের বিধায়ক শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের পাশাপাশি রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি ছিলেন। কিন্তু বিধানসভা আলাদা হওয়ায় ব্রজকিশোরের পক্ষে তাঁর বিধায়ক তহবিলের অর্থ আইনি জটিলতার কারণে রানাঘাট হাসপাতালের জন্য খরচ করা যায়নি। তবে মুকুটমণি দায়িত্ব পেলে সেই সমস্যা আর থাকবে না। রাজনৈতিক মহলের অনেকেই বলছেন, সরকারি হাসপাতালের ওই পদ সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক। বিধায়ক যে দলেরই হোক না কেন, তাঁর বিধানসভার অধীনে থাকা সরকারি হাসপাতালের ওই পদ পাওয়ার দাবিদার তিনিই। অথচ এ রাজ্যে বিধায়কের রাজনৈতিক রঙ দেখে সরকারি হাসপাতালে রোগী কল্যাণ সমিতির পদে বসানো হচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির মুখপাত্র সোমনাথ কর বলেন, "আসলে আমাদের দলের টিকিট জয়ী হওয়া বিধায়কদের ওই পদ দিলে তৃণমূলের পক্ষে কাটমানি নেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা। তাই সরকারি হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির পদ নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে।" শান্তিপুরের বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামী বলেন, "মুকুটমণিকে আমি স্বাগত জানাই। আমার রেখে যাওয়া অসম্পূর্ণ কাজ আশা করি ওঁর হাত ধরে সম্পূর্ণ হবে।"

মুকুটমণি বলেন, "এখনও ওই পদের দায়িত্ব পাইনি। তবে রোগীদের স্বার্থে নিশ্চিত ভাবেই মহকুমা হাসপাতালে পরিকাঠামোর উন্নয়ন ও সমস্যার বিষয়গুলি গুরুত্ব সহকারে সমাধানের চেষ্টা করব।"

প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি এত দিন বিজেপিতে থাকার কারণেই রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতির মুকুটমণিকে দেওয়া হয়নি? উত্তর এড়িয়ে গিয়েছেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা।

অন্য বিষয়গুলি:

Ranaghat TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE