Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

তৃণমূল ছাড়লে দরজা খোলা বিজেপির, অভিযুক্ততে আপত্তি নেই

এ ব্যাপারে যিনি পথপ্রদর্শক, সেই মুকুল রায় নদিয়ার দায়িত্বে থাকা রাজ্য নেতাদের অন্যতম। এক সময়ে তিনি তৃণমূলের হয়ে এই জেলা দেখতেন। সেই সময়ে তাঁর বিস্তর অনুগামীও ছিল, যাঁদের কারও-কারও নাম লগ্নি কেলেঙ্কারিতে অল্পবিস্তর জড়িয়েছে। ‘দাদা’র পথ ধরে এই সব ‘ভাই’রাও বিজেপিতে ঠাঁই খুঁজছেন বলে দাবি দলের পুরনো কর্মীদের একাংশ।

রানাঘাটে রাহুল। নিজস্ব চিত্র

রানাঘাটে রাহুল। নিজস্ব চিত্র

সৌমিত্র সিকদার
রানাঘাট শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৯ ০২:০৮
Share: Save:

কিছু দিন আগেই বেআইনি লগ্নি সংস্থার কেলেঙ্কারিতে তাঁদের কয়েক জনের নাম জড়িয়েছিল। এমনই কিছু তৃণমূল নেতা ভোটের মুখে তাঁদের দলে আসতে চাইছেন বলে বিজেপির একটি সূত্রের দাবি। এবং তা নিয়ে দলের অন্দরেও অস্বস্তি তৈরি হয়েছে।

এ ব্যাপারে যিনি পথপ্রদর্শক, সেই মুকুল রায় নদিয়ার দায়িত্বে থাকা রাজ্য নেতাদের অন্যতম। এক সময়ে তিনি তৃণমূলের হয়ে এই জেলা দেখতেন। সেই সময়ে তাঁর বিস্তর অনুগামীও ছিল, যাঁদের কারও-কারও নাম লগ্নি কেলেঙ্কারিতে অল্পবিস্তর জড়িয়েছে। ‘দাদা’র পথ ধরে এই সব ‘ভাই’রাও বিজেপিতে ঠাঁই খুঁজছেন বলে দাবি দলের পুরনো কর্মীদের একাংশ।

নদিয়া দক্ষিণের এক পুরনো নেতার কথায়, ‘‘এই সব দুষ্ট গরুদের পালে-পালে দলে ঢোকানোয় আখেরে ক্ষতিই হবে। জানি না, নেতারা কী ভাবছেন। তবে আমরা অনেকেই মন থেকে মানতে পারছি না।’’

তবে তাঁরা যতই অস্বস্তিতে ভুগুন, দলের নেতারা যে অন্য রকম ভাবছেন তা কার্যত পরিষ্কার হয়ে গেল রবিবার রানাঘাটে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাহুল সিংহের কথায়। এ দিন রানাঘাট নজরুল মঞ্চে দলের কার্যকার্তাদের এক সম্মেলনে যোগ দিতে এসে তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগ থাকা আর অভিযোগ প্রমাণ হওয়া, এই দুইয়ের মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাত।’’ অর্থাৎ, অভিযুক্ত নেতাদের জন্য দরজা হাট করে খুলে দিতে যে আপত্তি নেই, রাহুলের কথাতেই তা পরিষ্কার।

সাংবাদিক সম্মেলনে রাহুলের যুক্তি, ‘‘অভিযোগ থাকলেই তো হল না, তা প্রমাণ হওয়া দরকার। যদি কেউ দোষী প্রমাণিত বৃহন, তার পাশে দল দাঁড়াবে না।’’ তাঁর কটাক্ষ, ‘‘অভিযোগে আমাদের দলের যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁরা কেউ তো সিবিআই তদন্তের হাত থেকে পালাননি। সিবিআই যখনই ডেকেছে, তাঁরা হাজির হয়েছেন। ওঁরা তো কেউ রাজীব কুমার নন যে সিবিআই ডাকলে যাবেন না!’’

এ দিন সম্মেলনে রাহুল ছাড়াও হাজির ছিলেন রাজ্য নেতা সঞ্জয় সিংহ, দেবশ্রী চৌধুরী, মনোজ বিশ্বাস, নদিয়া দক্ষিণ জেলা সভাপতি জগন্নাথ সরকারেরা। প্রত্যাশিত ভাবেই প্রশ্ন ছিল, যাঁরা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে আসতে চাইছেন, সিবিআইয়ের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া ছাড়া তাঁদের আর কী উদ্দেশ্য থাকতে পারে?

রাহুলের দাবি, ‘‘ওঁরা তৃণমূলে থেকে ভাল ভাবে শ্বাস নিতে পারছেন না। শ্বাস নেওয়ার জন্যই তৃণমূল ছেড়ে দিতে চাইছেন। এ রকম অনেকেই আছেন, তাঁদের নাম করা সম্ভব নয়।’’ বিজেপির আশঙ্কা, দলবদলের আগে নাম প্রকাশ করলে তৃণমূল ছাড়তে আগ্রহী নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হবে।

যা শুনে জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তের টিপ্পনী, “রাহুল সিংহ নিজের দলে শ্বাস নিতে পারছেন তো? তিনি আগে কোনও পঞ্চায়েত ও পুরসভা থেকে নির্বাচিত হয়ে দেখান। তার পরে তাঁর কথার উত্তর দেওয়ার কথা ভাবব!’’ তাঁর দাবি, তৃণমূলের কেউ বিজেপি-র সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বলেও তাঁদের জানা নেই।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy