প্রতীকী ছবি।
আমি বড় হয়েছি মামার বাড়িতে। আমাদের নিজের বাড়ি মালদা জেলার একটি গ্রামে। প্রাথমিক স্কুল বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দুরে। হাইস্কুলে ছয় কিলোমিটার দুরে। তাই শিক্ষার জন্য আমি মামার বাড়িতে থাকলাম। আমার আর একটি ছোটভাই আছ সে থাকল মা-বাবার কাছে। কাঞ্চনতলা হাইস্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে ফরাক্কা কলেজ যাই। অ্যানিমেশন নিয়ে কাজ শিখলাম। দিল্লির একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতাম। কাজ করে সেখান ভালই ছিলাম। সেখানে আমার নিজের একটা পরিচিতি আসে। আমি সংস্থায় কাজ করি তারা আমার কাজের ধরন দেখে এক বছরের মধ্যে ফ্লাট ও গাড়ি দিয়েছিল। মামার বাড়িতে মানুষ হয়েছি তাই মামার সঙ্গে সব বিষয়ে আলোচনা করি।
মামা আমাকে কাজের উৎসাহ যোগাত। তাই দিল্লিতে থাকলেও রাতে একবার মামার সঙ্গে কথা বলতাম। বছরে একবার পুজোয় বাড়ি আসতাম। বাড়ি বলতে মামার বাড়ি। আমাদের নিজের বাড়ি যাই তা দু’এক দিনের জন্য।
ধুলিয়ানেই আমার সব বন্ধুরাও ধুলিয়ানে তাই আমার নিজের বাড়িতে ভালো লাগে না। দিল্লি আমার নিজের শহর হয়ে উঠেছিল। আমি গান শিখতাম। দিল্লিতেও একজন গুরুজির কাছে গান শিখি। সারাদিন কাজ আর গান এই নিয়ে ব্যাস্ত থাকতাম। খাওয়া দাওয়া যেখানে সেখানে খেয়ে নিতাম।
খেতাম অফিসের ক্যান্টিনে আবার কখনও হোটেলে। একই ছন্দে চলছিল জীবন। বাধ সাধল করোনা।
প্রথম দফা লকডাউন শুরু হতেই আমাদের অফিস জানিয়ে দেয়, এখন অফিসে এসে কাজ করতে হবে না। বাড়িতে বসে কাজ কর। কী কাজ তা জানিয়ে দেওয়া হবে। হয়ে গেলাম গৃহবন্দি। দিল্লিতে করোনা ছড়িয়ে পড়ল চারদিকে।
আমি রান্না জানি না বিস্কুট আর ফল খেয়ে দিন কাটছি। জানলা দিয়ে রাস্তার দিকে চেয়ে দেখি। এ এক অন্য দিল্লি। নেই কোন গাড়ি, নেই ব্যস্ততা, নির্জন হয়ে পড়েছে। বিস্কুট আর ফল খেয়ে কী থাকা যায়। মামার সঙ্গে আলোচনা করে এক ব্যক্তিকে বললাম, তিনি প্রতিদিন আমার খাবার তাঁর বাড়ি থেকে পাঠিয়ে দিতেন। গুরুজির কথা অনুযায়ী আমি ট্রেনে বাড়ি ফিরে আসতে পারিনি। অবশেষে প্লেন চলাচল শুরু হলে প্রাণ হাতে করে দিল্লি থেকে কলকাতা, আবার সেখান থেকে মামার গাড়িতে বাড়ি আসি।
আমি কাজ করছি এখন ধুলিয়ান থেকে। আমাদের কাজ বন্ধ নেই। অফিস যে দিন ডাকবে সেদিন চলে যাব আবার দিল্লি। কারণ বাংলায় কাজ নেই। কলকাতার কয়েকটা সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছিলাম তারা মাসিক বেতন খুবই কম দিতে চায়। তাই আবার যাব দিল্লি ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy