বধূকে প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে অপহরণ করে ব্ল্যাকমেল। তার পরে ‘অশ্লীল ভিডিয়ো’ বানাতে রাজি না-হওয়ায় তাঁকে ছাদ থেকে ঠেলে খুনের অভিযোগ ‘প্রেমিকের’ বিরুদ্ধে। নদিয়ার কালীগঞ্জ থানার পলাশি এলাকার ওই ঘটনায় ইতিমধ্যে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, মৃতার নাম মাম্পি দেবনাথ। বাড়ি পলাশিপাড়া থানা এলাকায়। বধূর বাপের বাড়ির অভিযোগের ভিত্তিতে টোটোন মালাকার নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মৃতার বাপের বাড়ি সূত্রের খবর, পলসুণ্ডার শ্বশুরবাড়ি থেকে গত ১১ ফেব্রুয়ারি নিখোঁজ হয়ে যান মাম্পি। তাঁর স্বামী পেশায় টোটোচালক। বধূ নিখোঁজের পর পরিবারের তরফে পলাশিপাড়া থানায় ডায়েরি করেন।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বধূর শ্বশুর এবং বাপের বাড়ির লোকজন খবর পান মাম্পি শারীরিক ভাবে জখম। তিনি শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মাম্পির ‘প্রেমিক’ টোটোনও ওই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। মাম্পির শরীরের একাধিক হাড় ভেঙে গিয়েছিল। তার মধ্যেই ১৭ ফেব্রুয়ারি কাউকে কিছু না জানিয়ে মাম্পিকে হাসপাতাল থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান টোটোন। পরে বাড়ি ফেরেন মাম্পি। তাঁর অবস্থা গুরুতর ছিল। কিছু দিন পর ওই বধূর মৃত্যু হয়। অভিযোগ, মাম্পিকে স্ত্রীর পরিচয় দিয়েই হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলেন টোটোন। নিখোঁজ হওয়ার পর ওই বধূকে মন্দিরে নিয়ে গিয়ে বিয়েও করেছিলেন যুবক। তাঁর ফোন থেকে বিয়ের ভিডিয়ো পাওয়া গিয়েছে। মৃতার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার হন যুবক।
আরও পড়ুন:
মাম্পির পরিবারের অভিযোগ, তাদের মেয়েকে টোটোন এবং তাঁর বন্ধুরা শ্বশুরবাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে পলাশির ফুলতলা মোড়ের কাছে একটি তিনতলা বাড়িতে আটকে রেখেছিলেন। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি দুপুরে টোটোন এবং তাঁর বন্ধুরা মাম্পিকে ‘অশ্লীল ভিডিয়ো’ বানাতে জোর করেন। মাম্পি তাতে রাজি হননি। সে জন্য তাঁকে মারধর করা হয়। এমনকি, তিনতলা বাড়ির ছাদ থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া হয় বধূকে। পরে অভিযুক্তেরাই মাম্পিকে উদ্ধার করে পলাশি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখান থেকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। বধূর মৃত্যুর ঘটনায় স্বরূপ দেবনাথ নামে এক আত্মীয় বলেন, ‘‘ওকে ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে খুন করা হয়েছে। মৃত্যুর জন্য টোটোন এবং তার বন্ধুরা দায়ী।’’ পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।