হদিস পাওয়া তো দূরের কথা। তিন থানার চাপানউতোরে নিখোঁজ হওয়ার ১৩ দিন পরেও ডায়েরিটুকুও নথিবদ্ধ করা হয়নি। উল্টে জলপুলিশ -স্থলপুলিশের খেলা চলছে!
নিখোঁজ হয়ে যাওয়া প্রৌঢ়ের নাম ইয়াদ আলি। বয়স বছর বাহান্ন। বাড়ি মুর্শিদাবাদের লালাগোলা থানার কালমেঘা গ্রামে। পেশায় ফেরিওয়ালা ইয়াদ আলি গত ১৩ অগস্ট সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ পশ্চিম মেদিনীপুরে খড়্গপুর লোকাল থানার জফলা থেকে অটোয় চাপেন। খড়্গপুর স্টেশন থেকে লালগোলায় ফেরার ট্রেন ধরার কথা ছিল তাঁর।
ইয়াদ আলির জামাই মিন্টু শেখও খড়গপুরের ফেরিওয়ালা। তিনি বলেন, ‘‘অটোয় চাপার পর থেকে এ পর্যন্ত শ্বশুরমশাইয়ের কোনও খোঁজ নেই।’’ ইয়াদের ছেলে ইসমাইল শেখ বলেন, ‘‘বাবার ছবি নিয়ে কৃষ্ণনগর, রানাঘাট, হাওড়া ও খড়গপুর থানায় গিয়েছি। কিন্তু কোথাও বাবার হদিস মেলেনি।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘ডায়েরি করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু খড়গপুর লোকাল, খড়্গপুর টাউন ও লালগোলা— এই তিন থানায় অনেক বার গেলেও কেউ ১৩ দিন ধরে ডায়েরি নেয়নি। উল্টো খারাপ ব্যবহার জুটেছে।’’ ইয়াদের বৃদ্ধা মা সামনুর বেওয়ার আক্ষেপ, ‘‘দিনের বেলায় জলজ্যান্ত ছেলেটা উধাও হয়ে গেল! পুলিশ তার হদিস করার বদলে নাতিদের অপমান করে কুকুর- ছাগলের মতো তাড়িয়ে দিয়েছে!’’
জমি-জিরেত না থাকায় ইয়াদ আলি আগে খেতমজুরি করতেন। বছর দশেক হল ফেরিওয়ালার কাজ করছিলেন। লালগোলার খাজা ও ছাতুর বেশ খ্যাতি আছে। লালগোলা থেকে সে সব খড়গপুরে নিয়ে গিয়ে তিনি ফেরি করতেন। ইয়াদ আলির আত্মীয় মহম্মদ টিটু শেখ বলেন, ‘‘মেসোমশাই ১০-১৫ দিন পর-পর খড়্গপুর থেকে লালগোলার বাড়ি ফিরতেন। কয়েক দিন পরে ফের যেতেন। এ বার শরীর খারাপ হওয়ায় সেখানে যাওয়ার ৪-৫ দিন পরেই ওঁকে বাড়ি ফেরত পাঠানোর জন্য ১৩ অগস্ট সকালে সাড়ে ৭টায় মিন্টু শেখ অটোয় তুলে দেন।’’
মিন্টু বলেন, ‘‘অটোয় তুলে দেওয়ার পর থেকেই নিখোঁজ। অনেক বার ফোন করেও সাড়া পাইনি। তার পরেই খোঁজ শুরু হয়।’’ ইসমাইলের অভিযোগ, ‘‘বাবাকে খুঁজে উদ্ধার করা দূরের কথা, খড়গপুর লোকাল থানায় গেলে সেখানকার অফিসারেরা আমাদের তাড়িয়ে দিয়ে খড়্গপুর টাউন থানায় যেতে বলেন। সেখানে গেলে নিখোঁজ ডায়েরি না নিয়ে তারাও আমাদের তাড়িয়ে দেয়। বলে, লালগোলা থানায় যেতে। ওই থানায় গেলে এক ছোটবাবু দূর-দূর আমাদের তাড়িয়ে দেন। বলেন— নিখোঁজ হয়েছে খড়গপুরে। সেখানে যাও।’’
লালগোলা থানার পুলিশের বক্তব্য, ঘটনা খড়্গপুরের। ডায়েরি সেখানেই করতে হবে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খড়্গপুর) অভিষেক গুপ্ত বলেন, ‘‘থানায় অভিযোগ নথিভূক্ত করা উচিত ছিল। কেন নেয়নি, খোঁজ নেব। ওঁরা আমার কাছে এলে বা মোবাইলে আমার কাছে মেসেজ পাঠালেও অভিযোগ নথিভুক্ত করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy