Advertisement
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
Krishnanage Nabadwip railway

কৃষ্ণনগর-নবদ্বীপ রেললাইনের কৃতিত্ব দাবি করে আসরে 

জমি অধিগ্রহণের জন্য ১৫ সেপ্টেম্বর ফের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। আটটি মৌজার ২৬৪.০৬৬ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর  শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:৪২
Share: Save:

ভোট যত এগিয়ে আসছে ততই রাজনৈতিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে কৃষ্ণনগর-নবদ্বীপ রেলপথ। এই রেলপথ তৈরির কৃতিত্ব দাবি করে যুযুধান সব দলই ভোটের ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়তে চাইছে। সেই সঙ্গে চলছে এত দিন প্রকল্পটি আটকে থাকার জন্য পারস্পরিক দোষারোপের পালা। অনেকেই মনে করছেন কৃষ্ণনগর ও রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের বিস্তীর্ণ এলাকার ভোটারদের কাছে এই রেলপথ এ বার অন্যতম প্রধান ‘ইস্যু’ হতে চলেছে।

রেল ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১০ সালের ১৮ জানুয়ারি শান্তিপুর থেকে কৃষ্ণনগর হয়ে নবদ্বীপ ঘাট পর্যন্ত ন্যারোগেজ রেল পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। তার আগেই, ৭ জানুয়ারি তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ন্যারোগেজ লাইনকে ব্রডগেজে পরিবর্তন করার প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। প্রায় ২৭ কিলোমিটার এই লাইনের জন্য রেল বাজেটে অর্থ অনুমোদনও করা হয়। শান্তিপুর থেকে কৃষ্ণনগর পর্যন্ত ব্রডগেজের কাজ শেষ করে কৃষ্ণনগর থেকে নবদ্বীপ ঘাট পর্যন্ত কাজ শুরু হয়। কিন্তু এই পথেই প্রথম বাধার সম্মুখীন হতে হয় ফকিরতলার কাছে। নানা কারণে ওই এলাকায় জমি দেওয়ার ক্ষেত্রে আপত্তি উঠতে থাকায় আমঘাটা পর্যন্ত রেললাইন তৈরি হয়ে প্রকল্প থমকে যায়। সেই থেকে প্রায় ১৩ বছর থমকে আছে কাজ।

তবে এর মধ্যে প্রায় ১০৬ কোটি টাকা খরচ করে ভাগীরথীর উপর একটি রেলসেতুও তৈরি হয়ে যায়। নানা টানাপড়েনের পর সিদ্ধান্ত হয় যে স্বরূপগঞ্জ ঘাট পর্যন্ত নয়, তার আগেই তেওরখালি থেকে রেললাইন বাঁ দিকে বেঁকে একাধিক গ্রামের ভিতর দিয়ে গিয়ে সেতুতে উঠবে এবং নদী পেরিয়ে নবদ্বীপ ঘাট স্টেশনে পৌঁছবে। ২০১৬ সালে জমি অধিগ্রহণের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। কিন্তু সমীক্ষা শুরু হতেই জমির মালিকদের একাংশ প্রবল বিরোধিতা শুরু করেন। ফলে গোটা প্রক্রিয়া মুখ থুবড়ে পড়ে।

কয়েক মাস আগে থেকে আবার এই রেললাইন তৈরির উদ্যোগ শুরু হয়েছে। পরীক্ষামূলক ভাবে আমঘাটা পর্যন্ত ট্রেন চলেছে। রেললাইনের দুই পাশ দখলমুক্ত করা হয়েছে। জমি অধিগ্রহণের জন্য ১৫ সেপ্টেম্বর ফের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। আটটি মৌজার ২৬৪.০৬৬ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে। নতুন করে জমি অধিগ্রহণ করে কাজ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হতেই কৃতিত্ব দাবি করে ময়দানে নেমে পড়েছে রাজনৈতিক দলগুলি।

রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের দাবি, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূলই জমি অধিগ্রহণে বাধা দিয়েছে। আসলে জমি বিক্রির সময়ে টাকা তোলার জন্যই ওরা এই জটিলতা তৈরি করে রেখেছে। মানুষে জমি না দেওয়ার জন্য ভুল বুঝিয়েছে। আমি অনেক চেষ্টা করে এই লাইন তৈরির কাজ ফের শুরু করাতে পেরেছি।” জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র বাণীকুমার রায়ের পাল্টা দাবি, “আমি জেলা পরিষদের সভাধিপতি থাকাকালীন তৎকালীন জেলাশাসক বিজয় ভারতীকে নিয়ে জমি অধিগ্রণের জন্য উদ্যোগী হয়েছিলাম। কিন্ত এই লাইন তৈরির কৃতিত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পেয়ে যাবেন, সেই ভয়ে বিজেপি প্রবল বিরোধিতা করে। তৃণমূল সরকার চাইছে বলেই আজ নতুন করে জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়েছে।” তবে এসবের মধ্যে পিছিয়ে থাকতে নারাজ সিপিএম। দলের জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য সুমিত বিশ্বাস বলেন,“ন্যারো গেজ তুলে দেওয়ার পর ব্রড গেজের দাবিতে আমরা স্বরুপগঞ্জ থেকে জেলা প্রশাসনিক ভবন পর্যন্ত মিছিল করেছিলাম। আমাদের যুব সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রথম রেল কতৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়েছিল।” তিনি বলেন,“তৃণমূল ও বিজেপি যার যখন মনে হয়েছে যে রেল লাইনটা তৈরি হলে ভোটের অঙ্কে তাদের ক্ষতি হবে তারাই তখন বিরোধীতা করেছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 Krishnanagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy