অতলে: প্রতাপগঞ্জে ভাঙন।
৬৫ হাজার পরিবার শমসেরগঞ্জে ভাঙনের মুখে। ৬২৭টি ঘর ধসে পড়েছে, না হয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৩০০০ মানুষ ভিটে ছাড়া। ১২০০ একর জমি, বাগান নদী গর্ভে।
কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখায়তকে শমসেরগঞ্জের ভাঙন দুর্গতদের দুর্ভোগের কথা শোনালেন জঙ্গিপুরের সাংসদ খলিলুর রহমান। দিল্লিতে নিজের অফিসে বসে সাংসদের মুখে গঙ্গা ভাঙন পরিস্থিতির কথা শুনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যে উদ্বিগ্ন, খলিলুর সে কথাও জানান। শমসেরগঞ্জে ভাঙনের ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ হিসেব জানতে চেয়ে রাজ্য সরকারকে চিঠি পাঠাচ্ছে কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রক। সম্প্রতি দিল্লিতে জঙ্গিপুরের সাংসদ খলিলুর রহমানকে এ কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রী। ভাঙনে গত দু’বছরে শমসেরগঞ্জে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কথা তথ্য সহ জানিয়ে এ দিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর হাতে একটি লিখিত দাবিপত্রও দিয়েছেন সাংসদ। জঙ্গিপুরের সাংসদ হলেও তিনি শমসেরগঞ্জেরই বাসিন্দা। ভাঙনে তাঁর বাড়িও ১৯৭০ সালে গঙ্গা গর্ভে গিয়েছে, মন্ত্রীকে সে কথাও জানিয়েছেন সাংসদ নিজেই।
পুজোর আগে ফরাক্কা সফরে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র। সেখানেও দেখা করে খলিলুর ভাঙনের ভয়াবহ অবস্থার কথা জানিয়ে মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান। ভাঙন রোধে কেন্দ্রকে হস্তক্ষেপ করার দাবি জানান। দাবি করেন সমস্ত ভাঙন দুর্গতের পুনর্বাসনের।তখনই সাংসদকে দিল্লিতে তাঁর সঙ্গে দেখা করার কথা বলে সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে যান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
খলিলুর বলেন, “শমসেরগঞ্জের ভাঙন চলে আসছে দীর্ঘ দিন ধরে। মাঝে কিছুটা ভাঙন থেমে থাকলেও গত দু’বছর থেকে তা ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে। ১২০০ একর বাগান ও জমি গঙ্গায় ধসে গিয়েছে। ৬২৭টি পরিবারের বাড়ি নদীতে ধসে গেছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে ভিটে ছাড়া হতে হয়েছে ৩ হাজার মানুষকে। ধুসরিপাড়া, ধানগড়া, শিবপুর, লোহরপুর, দুর্গাপুর, শিকদারপুর, কামালপুরের পর এ বারে ভাঙন রুদ্রমূর্তি ধরেছে মহেশটোলা, প্রতাপগঞ্জ, চাচণ্ড ছাড়াও ধুলিয়ান পুরসভার গঙ্গাপাড় লাগোয়া ১৬,১৭, ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে। ভাঙনে তলিয়ে গেছে বহু স্কুল, মন্দির, মসজিদ, কবরস্থান, শ্মশান। এই ভাঙনে শমসেরগঞ্জের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে কয়েকশো কোটি টাকার।”
মন্ত্রীকে তার ক্ষোভের কথাও জানিয়েছেন সাংসদ। খলিলুর বলেন, “শমসেরগঞ্জের ভাঙন নিয়ে বহুবার তাঁর মন্ত্রকে চিঠি দেওয়া হয়েছে গত লোকসভা অধিবেশন চলাকালীন। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে আশা হারিয়েছে ভাঙন দুর্গতেরা। মানুষের মনে ক্ষোভ বাড়ছে। তাই কেন্দ্রীয় জল সম্পদ মন্ত্রক ব্যবস্থা নিক ভাঙন সমস্যার স্থায়ী সমাধানে। ভাঙনে ঘর হারানো কষ্ট আমি বুঝি। কারণ ১৯৭০ সালের গঙ্গা ভাঙনে দু’দু’টি বাড়ি গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছে আমারও।”
তিনি বলেন, “দুর্গতদের পুনর্বাসনের জন্য জমি দিক ফরাক্কা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ। ব্যারাজে কয়েক হাজার বিঘে জমি পড়ে রয়েছে অব্যবহৃত অবস্থায়। ফরাক্কা ব্যারাজটি যেহেতু কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রকের অধীন তাই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর জমি দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। কারণ ফরাক্কা ব্যারাজের বহু জমি বিভিন্ন ক্ষেত্রে হস্তান্তর করা হয়েছে।”
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অবশ্য জানান, অধিগৃহীত জমি দেওয়ার ক্ষেত্রেও রাজ্য সরকারের সম্মতি দরকার। ভাঙনের ক্ষয়ক্ষতির হিসেবের পাশাপাশি রাজ্য সরকারের কাছে ফরাক্কা ব্যারাজের জমি পুনর্বাসনের কাজে ব্যবহারের বিষয়টিও জানানো হবে।
খলিলুর অবশ্য বলেন, “কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে তো লড়াই করতে পারব না। তিনি ভাঙনের কথা শুনেছেন। দু’এক দিনের মধ্যেই রাজ্যকে চিঠি দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। দেখি কী হয়। না হলে আবার যাব। লেগে থাকা ছাড়া তো উপায় নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy