Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪
Shamsherganj

ভাঙন পরিদর্শনে এসে ক্ষোভের মুখে প্রতিমন্ত্রী

সাবিনা ও আমিরুলকে মহেশটোলায় দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার ভাঙন দুর্গতেরা। এদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন মহিলা। মন্ত্রী মহিলাদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন। পিছন থেকে শুরু হয়ে যায় বিক্ষোভ ও স্লোগান।

ইট-পাথর ছোড়াছুড়িতে মাথা ফাটল এক তৃণমূল কর্মীর। নিজস্ব চিত্র

ইট-পাথর ছোড়াছুড়িতে মাথা ফাটল এক তৃণমূল কর্মীর। নিজস্ব চিত্র

বিমান হাজরা
শমসেরগঞ্জ শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:৪৩
Share: Save:

গঙ্গা ভাঙন পরিদর্শনে এসে শনিবার দুপুরে শমসেরগঞ্জে ভাঙন দুর্গতদের ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পড়লেন রাজ্যের সেচ প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। পাল্টা প্রতিরোধে নামে তৃণমূলের পতাকা ধরে থাকা এক দলও। শুরু হয় ইট বৃষ্টি। দুর্গতদের ছোড়া ইটে মাথা ফাটে নাসির শেখ নামে এক তৃণমূল কর্মীর। পতাকা থেকে লাঠি খুলে চলে মারধর, হাতাহাতি। খুবই কম সংখ্যায় পুলিশ থাকায় বিক্ষোভ সামলাতে কার্যত কোনও ব্যবস্থা নিতে পারেনি শমসেরগঞ্জ থানার পুলিশ। পরে বাড়তি ফোর্স এনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। অবস্থা বুঝে মন্ত্রী ও তাঁর সঙ্গী প্রশাসনিক কর্তা ও বিধায়ককে পাশে নদীতে রাখা নৌকোয় চাপিয়ে দেওয়া হয়। এ দিনই এই ঘটনায় পুলিশ প্রতাপগঞ্জ থেকে সিপিএমের এরিয়া কমিটির সদস্য হারুন অল রশিদকে গ্রেফতার করেছে।

বিক্ষোভ ও মন্ত্রীকে হেনস্থার চেষ্টার পিছনে সিপিএমের উস্কানি রয়েছে বলে অভিযোগ করে শমসেরগঞ্জের সিপিএম নেতাদের একহাত নিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক আমিরুল ইসলাম। সেচ প্রতিমন্ত্রী অবশ্য এদিন এই ভাঙনের জন্য সরাসরি বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন।

গত বছর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত বহু পরিবারকে পুনর্বাসন দেওয়া যায়নি। তার মধ্যে নতুন করে ভাঙনের তাণ্ডব শুরু হয়েছে শমসেরগঞ্জে। এতেই ক্ষোভ বেড়েছে এলাকায়।

এ সাবিনা ও আমিরুলকে মহেশটোলায় দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার ভাঙন দুর্গতেরা। এদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন মহিলা। মন্ত্রী মহিলাদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন। পিছন থেকে শুরু হয়ে যায় বিক্ষোভ ও স্লোগান। এরপরই শুরু হয়ে যায় গোলমাল, ধস্তাধস্তি। ছুটে আসে ইট, পাথর। পাল্টা ঢিল ছোড়া শুরু হয়ে যায়।

বিধায়ক আমিরুল বলেন, “ভাঙন শুরুর প্রথম থেকেই কিছু রাজনৈতিক দল উস্কানি দিয়ে যাচ্ছিল স্থানীয় মানুষজনকে। এ দিন মহেশটোলা গ্রামে তারই প্রতিফলন ঘটেছে। দুর্গতদের মধ্যে কোনও প্রতিক্রিয়া ছিল না। কিন্তু কয়েকজন সিপিএম নেতার নেতৃত্বে এদিন মন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে কুরুচিকর ভাষায় গালিগালাজ দেওয়া হয়। বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা হয়। আমাদের দলীয় কর্মীরা তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। মন্ত্রী যখন মহিলাদের সঙ্গে কথা বলছিলেন তখন সিপিএমের নেতা কিছু স্থানীয় গুন্ডাকে নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। যখন তা মাত্রা ছাড়িয়ে যায় এবং আমাদের এক কর্মীর উপর ইট দিয়ে আক্রমণ করে। তখন হাতাহাতি শুরু হয়। এক তৃণমূল কর্মী নাসির শেখের মাথা ফাটে।’’ আমিরুলের দাবি, ‘‘ সিপিএম হিংসাকে আশ্রয় করে শমসেরগঞ্জে জমি দখল করার চেষ্টা করছে। আমরা সিপিএমের সেই সব নেতাকে সতর্ক করে দিচ্ছি যে, আগুন নিয়ে খেলা করবেন না। আগুন নিয়ে খেললে সে আগুনে নিজেই পুড়বেন।”

সিপিএম জেলা কমিটির সদস্য মহম্মদ আজাদ বলেন, “এই বিক্ষোভ ভাঙন দুর্গতদের গণরোষের ফল। সিপিএমের তো অস্তিত্বই নেই তৃণমূল বলে। তা হলে সিপিএম কী করে হামলা করল? আসলে মাঝে মধ্যেই তৃণমূলের নেতারা ভাঙন দেখতে এসে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দের গল্প শোনায় বন্যা দুর্গতদের। কিন্তু ভাঙন রোধে কোনও কাজ হয় না। তাতেই ক্ষতিগ্রস্তদের জনরোষের মুখে পড়তে হয়েছে এদিন মন্ত্রীকে।”

সেচ প্রতিমন্ত্রী সাবিনা এদিন বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারি দলের ১৮ জন সাংসদ আছেন। তারা কোনও সাহায্য করেন না ভাঙন রোধের ব্যাপারে। তার ফলে মুর্শিদাবাদ ও মালদহে এই ভাঙন চলছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Shamsherganj TMC River Erosion
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy