Advertisement
১০ জানুয়ারি ২০২৫
বহরমপুর কর্মী সম্মেলন
TMC

ঢাকের বাদ্যিতে কোঁদলের হুঙ্কার

‘আন্তরিক’ ডাক উপেক্ষা করে বহরমপুরের কর্মী সম্মেলনে অবশ্য গরহাজির থাকলেন স্বয়ং জেলা সভাপতি আবু তাহের খান ও অন্য দুই কো-অর্ডিনেটর, অশোক দাস ও খলিলুর রহমান। ছিলেন না ব্লক সভাপতি আইজুদ্দিন মণ্ডল এমনকি টাউন সভাপতি নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়-ও।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বিদ্যুৎ মৈত্র
শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২০ ০০:২৭
Share: Save:

বহরমপুর বিধানসভা এলাকায় দলের কর্মী সম্মেলনে ঢাক বাজিয়ে অতিথি বরণের আয়োজন করেছিলেন তৃণমূলের বহরমপুর বিধানসভার দায়িত্ব প্রাপ্ত কো-অর্ডিনেটর অরিত মজুমদার। তবে, বুধবার সেই ঢাকের বাদ্যি ছাপিয়ে সামনে এসে পড়েল দলের চেনা কোন্দল।

এ দিন, সম্মেলনের আগে অরিত ডাক দিয়েছিলেন, “দলের চেয়ারম্যান, সভাপতি সবাইকে কর্মী সম্মেলনে উপস্থিত থাকতে আন্তরিক আহ্বান জানাচ্ছি।” সেই ‘আন্তরিক’ ডাক উপেক্ষা করে বহরমপুরের কর্মী সম্মেলনে অবশ্য গরহাজির থাকলেন স্বয়ং জেলা সভাপতি আবু তাহের খান ও অন্য দুই কো-অর্ডিনেটর, অশোক দাস ও খলিলুর রহমান। ছিলেন না ব্লক সভাপতি আইজুদ্দিন মণ্ডল এমনকি টাউন সভাপতি নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়-ও। অরিতের ডাকে অবশ্য কর্মী সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন ব্লক সভাপতি আশিষ সরকার, ছিলেন প্রাক্তন পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য। গড় সামাল দিতে ব্যতিব্যস্ত অরিতের পাশে অবশ্য প্রথম থেকে হাজির ছিলেন দলের চেয়ারম্যান সুব্রত সাহা। পরিস্থিতি সামাল দিতে তিনি বলেন, “কেউ না আসতে পারলে তা নিতান্তই ব্যক্তিগত কারণে।” অন্য এক কো-অর্ডিনেটর সৌমিক হোসেন অবশ্য এলেন, তবে সভার প্রায় শেষে। তখন তাঁর কথা শোনার লোক বলতে হাতে গোনা কয়েকজন কর্মী। পরিস্থিতি আঁচ করে অজুহাত দেওয়ার সুরে অরিত বললেন, “বেলা গড়িয়েছে। সবার জন্য মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়েছে। সবাই সেখানে চলে গিয়েছেন।” আর সৌমিক বললেন, “আপনারা যাঁরা এখনও হলে বসে আছেন, তাঁরাই আসল তৃণমূলের সৈনিক। আপনারাই দলটাকে বেশি ভালবাসেন।”

কেন এলেন না— কো-অর্ডিনেটর অশোক দাস বললেন, “আমার তো কান্দির বুথকর্মী সম্মেলনের দায়িত্ব ছিল। তাই বহরমপুরে আর যাইনি।” দলের টাউন সভাপতি নাড়গোপাল মুখোপাধ্যায় কোনও রাখঢাক না রেখেই বলছেন, “শহরের কোনও স্থায়ী কমিটির সঙ্গে আলোচনা না করেই এ দিনের সভা হয়েছে। তাই আমরা আমন্ত্রণ পেয়েও সভায় যাইনি। আমরা জেলা সভাপতির কাছে তা জানাব।” সুব্রত সাহা যা শুনে বলছেন, “নতুন করে জেলা কমিটি ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত জেলায় এখন কোনও কমিটি নেই। ফলে আলোচনা করা হবে কোন স্থায়ী কমিটির সঙ্গে। আমরা তো সবাই তৃণমূলেরই কর্মী, আমন্ত্রণের কী আছে!”

আর সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ, সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া দলের অন্যতম পরিচিক মুখ মইনুল হাসান বলেন, “কেউ যদি মনে করেন কোন্দল করেই দলে টিঁকে থাকবেন, তা হলে তিনি তৃণমূলের কর্মী নন।” তবে, জেলা সভাপতি আবু তাহের বিকেলে ফোনে বলেন, ‘‘আরে ভাই সবাই যদি বহরমপুরের সভায় থাকে তা হলে লোক হবে কী করে। আমি তো তাই কান্দিতে ছিলাম। না হলে এ দিকে সভায় যাওয়ার তো লোকই থাকে না!’’

দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বহরমপুর বিধানসভার ২৯৩টি বুথের ১৫১টি শহর বহরমপুরে। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের কোনও ওয়ার্ড সভাপতিরা এ দিনের সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন না। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘যাঁরা ভোটের মুখে এই ভেদাভেদ সামনে আনছেন, তাদের ক্ষমা করা হবে না।’’

দলের মুখ রাখতে অরিত অবশ্য পরে জানান, অনেক বিধায়কই আসতে পারেননি কারণ তাঁদের ভার্চুয়াল সভা ছিল। গত বিধানসভা নির্বাচনে বহরমপুর কেন্দ্রে প্রায় ৮৬ হাজার ভোটে কংগ্রেসের মনোজ চক্রবর্তীর কাছে হেরে গিয়েছিল তৃমূল। লোকসভা ভোটেও আহামরি ফল হয়নি।

আগামী বিধানসভা ভোটে বহরমপুরের উপরে তাই নজর রয়েছে রাজ্য নেতৃত্বেরও। দলের অন্দরের খবর, বহরমপুরের কর্মী সম্মেলনে নেতাদের একাংশের এই মুখ ফিরিয়ে থাকা তাই ভাল চোকে দেখছেন না শীর্ষ নেতৃত্ব।

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Berhampore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy