মৌমিতা মণ্ডল, বাসযাত্রী
ভোরের ঘুমটা চেপে ধরেছিল খুব, কিন্তু তার পরেও সকাল-সকাল উঠেছিলাম কলেজে পৌঁছনোর তাড়া থাকায়। তা ছাড়া সকালবেলার ওই সরকারি বাসটা ভীষণ ভালো যায়। এর আগে বারকয়েক গিয়েছি, যথাসময়ে পৌঁছে দেয় গন্তব্যে। বাবা ডোমকল পুরাতন বিডিও মোড়ের বাসস্ট্যান্ডে ছেড়ে গিয়েছিলেন। বলেছিলেন ‘সাবধানে যাস মা!’ বাসে উঠেই পিছনের দিকে একটা জায়গা পেয়ে গিয়েছিলাম। মালদা পর্যন্ত যেতে বেশ কয়েক ঘন্টা সময় লাগবে, ফলে বাসে উঠেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম নিশ্চিন্তে। মেরে কেটে আধঘণ্টা পরে একটা বিকট আওয়াজের সঙ্গে ঝাঁকুনিতে ভেঙে গেল ঘুম। কিছু বুঝে ওঠার আগেই পৌঁছে গেলাম জলের তলায়। একটু একটু করে দম বন্ধ হয়ে আসছে। বাসের বাইরে যে কিভাবে বেরিয়ে এসেছিলাম আজও বুঝতে পারিনি। সাঁতার জানি না, ফলে হাত পা ছুড়ছি প্রাণপণে। ওই সময়টুকুর মধ্যেই মনে হয়েছিল আর হয়তো বাঁচব না। জলের তলায় শেষ হয়ে যাব আজ। কিন্তু ঠিক সেই সময়ে জলের তলা থেকে সূর্যের আলোটা পরিষ্কার বুঝতে পারছিলাম। আর সেই আলো দেখেই প্রাণপনে হাত পা ছুড়ে উপরের দিকে উঠতেই কেউ যেন টেনে নৌকায় তুললো আমাকে। তার পরে আর কিছু মনে করতে পারিনি, একেবারে সোজা ডোমকল হাসপাতালে এসে বুঝতে পারি, বেঁচে আছি। বার কয়েক নিজের গায়ে চিমটি কেটে দেখেছি সত্যি আমি বেঁচে আছি তো। সে দিনের সকালটা আমি ভুলে যেতে চাই। কিন্তু পারি না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy