ফরাক্কা ব্যারেজ। —নিজস্ব চিত্র।
অবিরাম বৃষ্টিতে ফুলেফেঁপে উঠেছে গঙ্গা। জলস্তর বিপদমসীমা অতিক্রম করায় খুলে দেওয়া হয়েছে ফরাক্কা ব্যারাজের সব ক’টি লকগেট। অন্য দিকে, রবিবার ফরাক্কা থেকে জল ছাড়ার বন্যাবিধ্বস্ত বাংলাদেশ ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। ইউনূস সরকারের তরফে ভারতের প্রতিনিধিকে ডেকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে বলে খবর। তার পরেই ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে একটি বার্তা প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে বলা হল, বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই ফরাক্কা ব্যারাজ থেকে জল ছাড়া হয়েছে। আর এ নিয়ে বেশ কিছু ভুয়ো ভিডিয়ো এবং ছবি ছড়িয়ে কেউ কেউ বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছেন বলেও জানিয়েছে ভারত সরকার।
সোমবার ফরাক্কা ব্যারাজ থেকে প্রায় ১১ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। ব্যারাজ কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, চাইলেও জল আটকে রাখা যাবে না। কারণ জল ধরে রাখার কোনও প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা নেই ব্যারাজে। বরং জল ছাড়া না হলে ব্যারাজের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ থেকে সমাজমাধ্যম জুড়ে শুরু হয়েছে ভারত-বিরোধী প্রচার।
এর আগে ঢাকায় কর্মরত ভারতের হাই কমিশনার প্রণয় বর্মাকে ডেকে আলোচনা করেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তিকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। ওই বৈঠকের পর তাঁর এক সচিব সংবাদমাধ্যমকে জানান, জল ছাড়া নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ভারতীয় দূতের কাছে কোনও ক্ষোভপ্রকাশ করেননি। শুধুমাত্র পরিস্থিতি বুঝতে তাঁকে ডেকেছিলেন। ইউনূসের মুখপাত্রের ওই বক্তব্য অবশ্য ‘পছন্দ হয়নি’ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের। পরে সরকারি বয়ান বদলে যায়। বাংলাদেশের ছাত্র উপদেষ্টাদের অন্যতম নাহিদ ইসলাম সাংবাদিক বৈঠকে অভিযোগ করেছেন, ষড়যন্ত্র করে ভারত জল ছেড়েছে। আর এক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘ফরাক্কা এবং ত্রিপুরা থেকে জল ছাড়া বিষয়ে ভারতের কাছে জবাব চাওয়া হবে। এ ছাড়া দুই দেশের মধ্যে একটি বোঝাপড়া গড়ে তোলা হবে।’’
মঙ্গলবার ভারত সরকার ফরাক্কা থেকে জল ছাড়ার বিষয়ে বিবৃতিতে জানিয়েছে, স্বাভাবিক প্রক্রিয়াতেই কাজ হয়েছে এবং তা নিয়ে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে অবহিতও করা হয়েছে। সেখানে লেখা হয়, ‘‘বুঝতে হবে ফরাক্কা কোনও ড্যাম নয়, একটি ব্যারেজ। নির্দিষ্ট মাত্রা অতিক্রম করে জল উঠলে তা ছাড়া হয়।’’ তা ছাড়া জল ছাড়ার বিষয়টি নির্দিষ্ট সময় অন্তর বাংলাদেশের জয়েন্ট রিভার কমিশনকে জানিয়ে দেওয়া হয়। এ বারেও সেটা হয়েছে। তার পরেও ভুয়ো ছবি এবং ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ছে।
অন্য দিকে, টানা বৃষ্টিতে বাংলাদেশে বন্যার কবলে আট জেলার প্রায় ২৯ লক্ষ মানুষ। সে দেশের একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এখন প্রায় সাড়ে চার লক্ষ পরিবার জলবন্দি। ফেণী, কুমিল্লা, নোয়াখালি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, মৌলভীবাজার এবং হবিগঞ্জ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই প্রেক্ষিতেই বেশ কিছু ভুয়ো খবর ছড়িয়ে পড়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy