ফাইল চিত্র।
দাম্পত্য কলহের জেরে আলাদা থাকছিলেন দম্পতি। স্বামী চেষ্টা করেছিলেন স্ত্রীকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনার। কিন্তু স্বামীর ঘরে আর ফিরতে চাননি যুবতী। সেই ক্ষোভে চলন্ত টোটোয় স্ত্রীকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। পরদিন সকালে সেই স্বামীরও ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল। মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলার থানার দিঘা এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবার রাতে ওই যুবতী আয়েশা বিবি (২৬)-কে কুপিয়ে খুনের ঘটনার পর বৃহস্পতিবার সকালে উদ্ধার হয় তাঁর স্বামী জারজিস শেখ (৩২)-এর ঝুলন্ত দেহ। দম্পতির দেহ একসঙ্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে লালগোলা মহকুমা হাসপাতালে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আয়েশা খুনের পর থেকে জারজিসের কোনও খোঁজ মিলছিল না। টোটো চালককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই যুবতী খুনে স্বামীর যোগ সুস্পষ্ট হয়। রাত থেকেই শুরু হয় তল্লাশি অভিযান। এর পর বৃহস্পতিবার ভোরে অভিযুক্তের বাড়ির পিছনে আমবাগান থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় জারজিসের দেহ উদ্ধার হয়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ২০১০ সালে বিয়ে হয়েছিল জারজিস ও আয়েশার। দম্পতির দুই সন্তানও রয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন জারজিস। আর আয়েশা গত দু’বছর ধরে বহরমপুরের বেসরকারি হাসপাতালে নার্সের কাজ করতেন। সম্প্রতি তাঁদের মধ্যে দাম্পত্য কলহের জেরে আলাদা থাকা শুরু করেছিলেন জারজিস ও আয়েশা। স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার অনেক চেষ্টা করেছিলেন জারজিস। কিন্তু আয়েশা ফিরতে চাননি। বিভিন্ন লোকের মুখে আয়েশা বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কথাও জানতে পেরেছিলেন জারজিস। সেই সব রাগ একত্রিত হয়ে স্ত্রীকে খুনের পরিকল্পনা করেন তিনি।
তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, আয়েশা কখন এবং কী ভাবে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরেন, সবই জানতেন জারজিস। বুধবার রাতে আয়েশা জিয়াগঞ্জ স্টেশনে নেমে টোটোয় উঠতেই ওই টোটোতে চেপে বসেন স্বামী। টোটোয় দু’জনের মধ্যে বচসাও হয়। তার পরেই আয়েশাকে জারজিস এলোপাথাড়ি কোপাতে শুরু করে বলে জেরায় দাবি করেছেন টোটো চালক। স্ত্রীকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে গেলে টোটো চালক ও স্থানীয়রা আয়েশাকে লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
আয়েশার বাবা মোজাম্মেল হকের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। মোজাম্মেল বলেন, ‘‘রোজই মেয়েকে ডাকবাংলো মোড়ে নিতে আসি। কাল সময় মতো মেয়ে না আসায় খোঁজাখুঁজি করতে গিয়ে জানতে পারি, টোটোয় মেয়েকে কোপানো হয়েছে। পরে জানতে পারলাম জারজিস এই কাজ করেছে। কিছু দিন ধরে ওদের মধ্যে গন্ডগোল চলছিল। কিন্তু কী নিয়ে, জানি না। আমার কাছেই থাকত মেয়ে।’’ আত্মঘাতী জারজিসের ভাই মিল্টন শেখের দাবি, ‘‘বৌদির অন্য একটি সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল, যেটা মেনে নিতে পারেনি দাদা। তাই মাথা ঠিক রাখতে না পেরে এমনটা করে ফেলেছে।’’
মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার বলেন, ‘‘দেহ দু’টি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy