প্রতীকী ছবি।
উত্তর ২৪ পরগনার বেশ কয়েকটি পুরসভার মতো একই পথে হাঁটল নদিয়ার হরিণঘাটাও। পড়শি জেলার মতো এখানেও বিজেপিতে গিয়েও তৃণমূলে ফিরলেন কাউন্সিলরেরা।
হরিণঘাটা পুরসভার ১৭টি আসনই জিতেছিল তৃণমূল। লোকসভা ভোটে দক্ষিণ নদিয়ায় তাদের বিপর্যয়ের পরে আট কাউন্সিলর বিজেপিতে চলে যান। তার পরেও পুরসভা দখল করতে পারেনি বিজেপি। তাদের দাবি ছিল, খুব শীঘ্রই আরও কাউন্সিলর দলবদল করবেন এবং বোর্ড তাদের হবে। উল্টে সোমবার তৃণমূল ভবনে গিয়ে দু’জন কাউন্সিলর পুরনো দলে ফিরলেন।
তৃণমূল সূত্রের খবর, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুগি সোরেন এবং ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সৌমেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় দলের নদিয়া জেলার পর্যবেক্ষক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে দলে ফিরেছেন। তাঁদের দাবি, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই এক মাত্র সকল শ্রেণিকে নিয়ে চলতে পারেন। বিজেপিতে গিয়ে দেখলাম, ওরা বিভাজনের রাজনীতি করে। ভুল বুঝতে পেরে ঘরে ফিরলাম।’’
গত লোকসভা নির্বাচনে বনগাঁ কেন্দ্রে (হরিণঘাটা এই কেন্দ্রের অধীন) তৃণমূলের ভরাডুবি হওয়ার পরেই হরিণঘাটার কাউন্সিলরদের একাংশ পুরপ্রধান রাজীব দালালের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। দল রাজীবকে পদ থেকে সরিয়ে দেয়। কিন্তু তার আগেই আট কাউন্সিলর কাঁচরাপাড়ায় মুকুল রায়ের বাড়িতে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন। রাজীবকে সরানোর পরে নতুন পুরপ্রধান নির্বাচনের ভোটাভুটিতে না হারলেও মাত্র এক আসনে এগিয়ে থাকা যে নিরাপদ নয়, তৃণমূল নেতারা তা ভালই বুঝছিলেন। ফলে দলত্যাগী সদস্যদের ফেরানোর চেষ্টাও চলছিল ভিতরে-ভিতরে।
যদিও হরিণঘাটা শহর তৃণমূলের সভাপতি উত্তম সাহার দাবি, ‘‘বিজেপি বোর্ডের দখল নিতে না পারার পর থেকেই কয়েক জন দলত্যাগী ফিরতে চাইছিলেন। সুগি ও সৌমেন্দ্রনাথকে ফেরানো হল। আরও কয়েক জন ফিরতে চাইছেন। তেমন হলে তাঁদেরও ফিরিয়ে আনা হবে।’’
বস্তুত, সৌমেন্দ্রনাথ বিজেপিতে চলে যাওয়ায় অনেকেই বেশ অবাক হয়েছিলেন। উত্তমের আক্ষেপ ছিল, ‘‘সৌমেনকে তো দল যথেষ্ট সম্মান দিয়েছিল। উনি শহর তৃণমূলের যুব সভাপতি ছিলেন। তার পরেও ওঁর দলত্যাগটা মেনে নেওয়া যায় না।’’ এ দিন তিনি বলেন, ‘‘সৌমেন বুঝেছেন, তৃণমূলে ওকে কতটা সম্মান করত। তাই তিনি আবার ফিরে এলেন।’’ দু’জন ফেরায় আপাতত বিজেপির হাতে ছ’জন কাউন্সিলর রইলেন আর তৃণমূলের কাউন্সিলর সংখ্যা হল ১১। পুরপ্রধান মানিক ভট্ট বলেন, ‘‘বেশি কাউন্সিলর নিয়ে বোর্ড গড়লে কাজ করতে সুবিধা হয়। দু’জন ফিরে আসায় সুবিধাই হল।’’ বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য প্রকাশ্যে বিষয়টিকে বেশি আমল দিতে নারাজ। দলের নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি মানবেন্দ্রনাথ রায় বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটে যখন হরিণঘাটায় ভাল ফল করেছিলাম, তখন তো ওই দু’জন ছিলেন না। ওঁদের নিয়ে ভাবছি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy