ভেঙে পড়েছে বাড়ি। নিজস্ব চিত্র
মিনিট দশেকের ঝড়ের তাণ্ডবে রবিবার রাতে তছনছ হল সাগরদিঘির ৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০টিরও বেশি গ্রাম। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্তত ৫৫০ বাড়ি। উড়ে গেছে বহু বাড়ির টিনের ছাদ। ভেঙে পড়েছে বহু বাড়ির দেওয়াল। উপড়ে পড়েছে কয়েকশো গাছ। খেতের ধান নষ্ট হয়েছে ব্যাপক। ৫১টি বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়েছে রাস্তা। এ দিনের ঝড়ে সবচেয়ে বেশি বিধ্বস্ত হয়েছে সাহাপুর বারালা লাগোয়া গোবর্ধনডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের অলঙ্কার, টোকরডাঙা, মাঝিডাঙার মতো আদিবাসী গ্রামগুলি। সাগরদিঘির বিডিও শুভজিত কুণ্ডু বলছেন, “আমপানে কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি এই এলাকায়। কিন্তু বিপুল ক্ষতি হয়েছে রবিবারের দশ মিনিটের ঝড়ে। তবে সন্ধে রাতে ঝড়-বৃষ্টি হওয়ায় অনেকেই বাড়িতেই ছিলেন। তাই কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ইতিমধ্যেই প্রতিটি এলাকায় ত্রিপল পাঠানো হয়েছে। প্রধানদের সরেজমিনে এলাকায় গিয়ে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে।”
সোমবার সকালে মাঝিডাঙা, অলঙ্কার, টোকরডাঙা, মথুরাপুর, বাজিতপুর, ডাঙাপাড়া, সাহাপুর, চণ্ডীগ্রাম, চারগাছি যে দিকেই চোখ গিয়েছে, সর্বত্রই তাণ্ডবের ছবি নজরে এসেছে। সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত মাঝিডাঙা, অলঙ্কার ও টোকরডাঙা। এ দিন দুপুর পর্যন্ত অবশ্য কোনও গ্রামেই সরকারি সাহায্য গিয়ে পৌঁছয়নি। তবু তার মধ্যেই কেউ কেউ নিজেই উড়ে যাওয়া মাথার চাল ছাইতে ব্যস্ত, কেউ বা ব্যস্ত বাড়ির উপরে আছড়ে পড়া গাছের ডাল সরাতে। অনেকেই আবার উড়ে যাওয়া টিনের ছাদ খুঁজে বেড়াচ্ছেন গ্রামের জমিতে।
মাঝিডাঙা গ্রামে বাড়ির টিনের ছাদ উড়েছে গনেশ কিস্কু, বাজেল মুর্মু, সনৎ মুর্মুদের। গ্রামের প্রায় ৬০টি বাড়ির মধ্যে অন্তত ৩২টি প্রায় পুরোপুরি ছাদহীন ঝড়ের পর থেকে। ২০টিরও বেশি বাড়ির হয় আংশিক ছাদের টিন উড়েছে, কিংবা মাটির দেওয়াল পড়েছে। রবিবার রাত থেকে জেগে রয়েছে প্রায় গোটা গ্রাম। কে কার বাড়িতে আশ্রয় নেবেন? সবারই প্রায় একই অবস্থা। গণেশ বলছেন, “তখন বড় জোর সন্ধ্যে সাড়ে ৭টা বাজে। ঝড়, বৃষ্টি শুরু হতেই ঘরে গিয়ে ঢুকে পড়লাম। কিন্তু একটু পড়েই দেখি ঝড়ের দাপটে মাটির গোটা বাড়ি যেন কাঁপছে। হঠাৎ বিকট শব্দে উপরে তাকিয়ে দেখি মাথার উপর খোলা আকাশ, টিনের চাল উধাও। বাইরে বেরিয়ে প্রতিবেশীর বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেব কী, তাঁরও টিনের চালা আগেই উড়েছে ঝড়ের দাপটে।”
বাজিতপুর গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক আবুল হাসান আজাদ বলছেন, “রাতভর জেগে রয়েছে বেশির ভাগ গ্রামের মানুষই। কেউ বুঝতেও পারেনি হঠাৎ এ ভাবে ঝড় আসতে পারে। ঘরে চাল আছে, কিন্তু রান্নার জায়গা নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy