প্রতীকী ছবি
যন্ত্রণার নাম রেফার।
রিমা মণ্ডল তাঁর ছোট্ট মেয়েটির মাথায় হাত বুলিয়ে বলছেন, ‘‘প্রসব যন্ত্রণার চেয়েও কষ্ট পেয়েছিলাম জানেন!’’ অথচ তেমনটা হওয়ার কোনও কারনই ছিল না।
তাঁর গ্রাম থেকে করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতাল, মেরেকেটে তিন কিলোমিটার। অথচ, সে হাসপাতালে পৌঁছতে তাঁকে ভাঙতে হয়েছিল খন্দ বোঝাই ১৬০ কিলোমিটার রাস্তা। রিমা এখনও মনে করলে শিউরে ওঠেন— ‘‘উফ, ভাবলেই গায়ে কাঁটা দেয় এখনও!’’
বছর কয়েক আগে, প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল তাঁকে। সারা দিন ভর্তি থাকার পরে রাতে চিকিৎসক এসেই গম্ভীর মুখে জানিয়ে ছিলেন, ‘এটা সিজার কেস। এখানে হবে না। জেলা সদরে নিয়ে যান।’ করিমপুর থেকে প্রায় আশি কিলোমিটার পথ ভেঙে সে রাতেই কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতালে গিয়ে ওই প্রসূতির স্বামীকে শুনতে হয়েছিল, ‘‘এখানে এনেছেন কেন? করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালেই তো স্বাভাবিক প্রসব হয়। ওখানেই নিয়ে যান।’’ রিমা তখন ছটফট করতে শুরু করেছেন। সেখান থেকে করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ফিরতে হয়েছিল ওই প্রসূতিকে। এবং কী আশ্চর্য সে রাতেই স্বাভাবিক ভাবেই সন্তন প্রসব করেছিলেন রিমা। তাঁর স্বামী বিপুল বলছেন, ‘‘রেফার যে কী ভীষণ যন্ত্রণাময় তা আমাদের জানা হয়ে গিয়েছে।’’
রেফার-ফাঁসে আটকে তিন দিন ধরে তিনটি সরকারি হাসপাতালে ঘুরেও ঠাঁই হয়নি দুর্ঘটনায় জখম বদরপুরের বাপি মণ্ডলের। সে ঘটনা, ২০১৬ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ, নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ এবং এসএসকেএম হাসপাতাল ঘুরে মৃতপ্রায় যুবককের হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে কাতরানো দেখে সংবাদ মাধ্যমই এগিয়ে এসেছিল সে দিন। এসএসকেএমের অর্থোপেডিক বিভাগের সামনে গাছতলায় বিনা চিকিৎসায় পড়ে ছিলেন বাপি।
২০১৫ সালের নভেম্বরে পেটের সমস্যা নিয়ে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় সবুজ মণ্ডল নামে এক কিশোরকে। সেখান থেকে তাঁকে রেফার করা কলকাতায় নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু বেড না থাকায় তাঁকে পাঠানো হয় পিজিতে। সেখানেও বেড ফাঁকা না থাকায় তিন দিন ধরে ওই হাসপাতাল চত্বরেই পড়েছিল সে। এ ক্ষেত্রেও সংবাদ মাধ্যমে সে খবর ছড়িয়ে পড়তে টনক নড়েছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy