এ ভাবেই জমেছে জঞ্জাল। —নিজস্ব চিত্র
মেয়েকে দেখতে এসেছে লোকজন। কিন্তু গাড়ি থেকে রাস্তায় পা দেবেন কোথায়। সারা রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে মাছের কাঁটা, বাসি ভাত, তরকারির পচা খোসা। দুর্গন্ধে টেঁকা দায়। গলির মুখে ডাঁই করে রাখা ছিল নোংরা বোঝাই পলিথিন। কুকুরে সেই পলিথিন ছিঁড়ে দেওয়ায় ওই বিপত্তি। এ দিকে লজ্জায় মাথাকাটা যাওয়ার দশা মেয়ের বাড়ির। গৃহকর্তা বলেন, ‘‘কী লজ্জার কথা কথা বলুন তো। নিজেদেরই বমি বেরিয়ে আসছিল।’’
নিয়ম হল পুরসভার কর্মীরা প্রতিদিন এসে ময়লা সংগ্রহ করে নিয়ে যাবেন। কিন্তু প্রতিদিন তো নয়ই কোনও কোনও সময় দু’দিন তিনদিন পেরিয়ে যায় কর্মীরা ময়লা সংগ্রহ করতে আসেন না। ময়লা জমে পচে ওঠে। দুর্গন্ধ ছড়ায়। আমিনবাজারের বাসিন্দা মৃণালকান্তি বিশ্বাসের। শহরের অনেক ওয়ার্ডে আবার বাড়ি বাড়ি ফিরে বাসিন্দাদের পাড়ার ভ্যাটে কিংবা ফাঁকা জায়গায় ময়লা ফেলতে হয়। সেই ভ্যাটও নিয়মিত পরিষ্কার না হওয়ায় এলাকায় দূষণ ছড়াই বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ।
কৃষ্ণনগরের ২২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শিবনাথ দত্তর কথায়, “পাড়ায় পুরসভার লোকজন বাড়ি থেকে ময়লা সংগ্রহ করে না। বাড়ির পাশে থাকা ভ্যাটেই ময়লা ফেলতে হয়। সেই ভ্যাটও নিয়মিত পরিষ্কার হয় না। ফলে এলাকায় দূষণ ছড়ায়।’’
শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ঘুর্ণির এক বাসিন্দা বলেন, “শহরের অন্য এলাকায় পুরকর্মীরা বাঁশি বাজিয়ে বাড়ি থেকে ময়লা সংগ্রহ করলেও এই এলাকায় আসেন না। ফাঁকা জায়গায় ময়লা ফেলতে বাধ্য হই। সেই ময়লা কুকুরে টানাটানি করায় রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে। ফলে এলাকা দূষিত হয়।’’
শহরের কলেজস্ট্রিটের বাসিন্দা বীথিকা সরকার বলেন, “আমাদের এলাকাতেও পুরসভার কর্মীরা বাড়ি থেকে ময়লা সংগ্রহ করে না। ফলে বাড়ির কাছে থাকা ভ্যাটে ময়লা ফেলতে হয়। সেই ভ্যাটও নিয়মিত পরিষ্কার না হওয়ায় দূষণ ছড়ায়।”
কৃষ্ণনগর পুরসভার ২৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে অর্ধেক ওয়ার্ডে বাড়ি থেকে ময়লা সংগ্রহ করে পুরকর্মীরা। বাকি ওয়ার্ডে ভ্যাটে বা ফাঁকা জায়গায় ময়লা ফেলেন বাসিন্দারা। কৃষ্ণনগর পুরসভার সাফাই বিভাগের চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলর স্বপন সাহা বলেন, “কর্মী সংখ্যা কম হওয়ায় সব ওয়ার্ডে বাড়ি থেকে ময়লা সংগ্রহ করা যায় না। তবে আগামী দিনে যাতে সব ওয়ার্ডে বাড়ি থেকে ময়লা সংগ্রহ করা যায় তার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’’ একই সঙ্গে তাঁর দাবি এ বিষয়ে বাসিন্দাদেরও সচেতন হওয়া দরকার। যে সব ওয়ার্ডে বাড়ি থেকে ময়লা সংগ্রহ সম্ভব হয় না সেই সব ওয়ার্ডে ভ্যাট কিংবা কন্টেনার রয়েছে। মানুষে সে সব জায়গায় ময়লা না ফেলে অনেক সময় ফাঁকা জায়গায় ময়লা ফেলেন। যার ফলেও এলাকায় দূষণ ছড়ায়। এ বিষয়ে মানুষকেও সচেতন হতে হবে।
কৃষ্ণনগর পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুমিতা বিশ্বাস অবশ্য জানান, “আমাদের ওয়ার্ডে প্রায় ১৪০০ বাড়ি রয়েছে। তার জন্য সাফাই কর্মী মাত্র ৫ জন। এই সামান্য কর্মী দিয়ে বাড়ি বাড়ি ময়লা সংগ্রহ করা খুব কঠিন। তবে পুরসভা থেকে আমাদের ওয়ার্ডে কর্মী সংখ্যা বাড়ালে বাড়ি বাড়ি ময়লা সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
শহরে ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অয়ন দত্ত বলেন, “অধিকাংশ বাড়ি থেকে ময়লা সংগ্রহ করা হয়। তবে কর্মী সংখ্যা কম থাকায় সব বাড়ি থেকে ময়লা সংগ্রহ করা যায় না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy