রঙিন খোলকে বোমা। — নিজস্ব চিত্র।
মাটিতে পুঁতেই রাখা হোক, কিংবা বালতিতে, সুতলি বোমা খোলা ফেলে না রেখে প্লাস্টিকের বলের মধ্যে ঢুকিয়ে রাখার চল শুরু হয়েছে জেলায়। আগে কান্দিতে পাওয়া গিয়েছে, এ বার মিলল ফরাক্কায়। ফরাক্কায় নির্মীয়মাণ একটি বাড়ি থেকে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী যৌথ অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করল রঙচঙে ৩০টি তাজা বোমা। সবগুলিই প্রচণ্ড শক্তিশালী। এই বোমাগুলি রাখা ছিল ওই বাড়ির লিনটেলের সেডের উপরে একটি বালতিতে। এই ঘটনায় এলাকার কংগ্রেস নেতা লুতফল হক, তাঁর ভাই নুর ইসলাম শেখ এবং লুতফলের দুই ছেলেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নুর ইসলামের ছেলে সদ্য নির্বাচিত কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য মহম্মদ ওয়াসিম আক্রাম সহ আরও তিন জন এই ঘটনায় জড়িত বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। পুলিশের দাবি, মাটিতে পুঁতে রাখলে সুতলি বোমা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তার উপরে বর্ষাকাল। তাই প্লাস্টিকের বল কেটে তার পেটে বোমা ঢুকিয়ে মুখ সেলোটেপ দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।
তবে কংগ্রেসের অভিযোগ এই পুরো ঘটনাটিই পঞ্চায়েত দখলের জন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি আব্দুল বাসির বলেন, “মহেশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে সিপিএম-কংগ্রেস জোট ১০ ও তৃণমূল ৮ জন সদস্যের সমর্থন পেয়েছে। তার পরে মুস্কিনগরের কংগ্রেস নেতা লুতফল হক ও তাঁর পরিবারের ৩ জনকে গ্রেফতার করা হল। ওই পরিবারেরই ছেলে ওয়াসিম আক্রাম এ বার মহেশপুরে কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী হয়েছে। আসলে ওয়াসিমকে তৃণমূল দলে টানতে চেয়েছিল। তা হলে তৃণমূলের ৯ জন সদস্য হত। বাম-কংগ্রেস জোটের সমান হয়ে যেত শাসক দল। কিন্তু তা করতে না পেরে পুলিশকে কাজে লাগিয়ে বোমার মামলা সাজিয়ে চাপ দিয়ে ওয়াসিম আক্রামকে তৃণমূলে ভেড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে।’’ তৃণমূলের ব্লক সভাপতি অরুণময় দাসের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটের দিন প্রচুর সংখ্যায় বোমাবাজি হয়েছিল ওই এলাকায়। সেই সব বোমা লুকিয়ে রাখলে পুলিশ তো তা উদ্ধার করবেই।পুলিশের সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল। কেন্দ্রীয় বাহিনী তো আর রাজ্য সরকারের নয়। মহেশপুরে পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। এর সঙ্গে তৃণমূল কোনও ভাবেই জড়িত নয়।এটা সম্পূর্ণ ভাবে পুলিশের তদন্তের বিষয়।”
বাসিরের দাবি, ‘‘ওই ঘর তৈরি হচ্ছে। সেখানে বাড়ির দরজা, জানালা, ছাদ এখনও কিছুই নেই। তাই রাতের অন্ধকারে সেই খোলা ঘরে বোমা রেখে এসে পরিকল্পনা মতো এই কাজ করেছে শাসক দল ও পুলিশ।”
পুলিশ জানায়, গোপন সূত্রে খবর পেয়েই ওই নির্মীয়মাণ বাড়িটিতে হানা দেওয়া হয় রবিবার রাতে।বালতি বোঝাই রঙিন বোমা মেলে ৩০টি। পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, বাড়িটি লুতফল হক বলে এক জন তৈরি করছেন। সামান্য দূরে আর একটি বাড়িতে তিনি বসবাস করেন। লুতফল পুলিশকে জানান, বাড়িটি তিনি ছেলেদের থাকার জন্য তৈরি করছেন। বাড়ির নথিও দেখান। এর পরই লুতফল সহ ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ফরাক্কা থানার আই সি দেবব্রত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বোমাগুলি সাধারণ সুতলি বোমা। বর্ষাকালে বোমা বৃষ্টিতে জলে ভিজে যেতে পারে। তাই ছোটদের খেলার জন্য যে সব প্লাস্টিকের শক্ত বল কিনতে পাওয়া যায়, সেই বল কেটে তার পেটে বোমাগুলি ভরে ফের জোড়া লাগিয়ে সেলোটেপ দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছে যাতে তা ভিজে না যায়। এগুলি ‘কালারড বোমা’ হিসেবে জেলায় পরিচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy