সাজানো হয়েছে পোশাকের পসরা। তেহট্টে। নিজস্ব চিত্র
গরিব মানুষদের পাশে দাঁড়াতে পুরনো পোশাক বিলি করার রীতি বেশ কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে গ্রামের প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে। মূলত, অল্পবয়সী কলেজ পড়ুয়া বা ক্লাবের ছেলেমেয়েদের উদ্যোগে প্রতি বার শীতের শুরুতে কম্বল বা পুরনো পোশাক বিলি করা হয় দুঃস্থ, গরিব মানুষজনের মধ্যে।
কিন্তু নিজের ইচ্ছেমতো পোশাক বেছে নেওয়া, তা-ও আবার পুরনো পোশাকের ক্ষেত্রে— এমনটা সচরাচর দেখা যায় না। এ বার তেমনটাই দেখা গেল তেহট্টে। তেহট্ট লোটাস ক্লাবের পক্ষ থেকে পুরনো-ব্যবহারযোগ্য জামাকাপড়ের ব্যাঙ্ক গড়ে তোলার ভাবনা নেওয়া হয়েছে, যেখানে কোনও মানুষ এসে নিজের পছন্দমতো এবং প্রয়োজন মাফিক পোশাক নিয়ে যেতে পারবেন।
এর আগে এই ধরনের ব্যবহৃত, পুরনো পোশাকের ব্যাঙ্ক গড়ে গরিব মানুষজনকে সাহায্য করার নিদর্শন দেখা গিয়েছে কলকাতার বেশ কয়েকটি জায়গায়। এ বার সেই তালিকায় নাম লেখাল তেহট্ট। এর নাম দেওয়া হয়েছে বস্ত্রবাজার। যদিও গরিব মানুষেরা তা পাবেন বিনামূল্যে। ক্লাবের সামনেই দোকান খোলা হচ্ছে।
ক্লাবের সহ-সম্পাদক অনিন্দ্য রায় বলেন, ‘‘আমরা বহু দিন ধরেই এই মানবিক কাজের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। অনেক মাস ধরেই এলাকার বিভিন্ন বাড়ি বাড়ি গিয়ে ব্যবহারযোগ্য পুরনো জামাকাপড় সংগ্রহ করেছি। সপ্তাহে দু’দিন শুক্রবার ও রবিবার আমরা বস্ত্র বাজারের দোকান খুলব। গরিব পরিবারকে তা দেওয়া হবে।’’
তিনি আরও জানিয়েছেন যে, শুধুমাত্র দোকানের মধ্যেই এই উদ্যোগ সীমাবদ্ধ থাকবে না। প্রতি মাসে এক থেকে দু’বার এলাকার বাইরের প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতেও পৌঁছে যাবেন তাঁরা, গরিব-দুঃস্থ পরিবারকে সাহায্য করতে।
তেহট্ট এলাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাধারণ মানুষ ব্যবহারযোগ্য পুরনো জামাকাপড় দিচ্ছেন ওই ক্লাবের সদস্যদের। তাঁদেরই এক জন শিক্ষক বাসুদেব হালদার। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘এই ক্লাবের কাজে আমরা সাহায্য করতে চাই। আলমারির মধ্যে অনেক জামাকাপড় আছে, যেগুলো পরা হয়ে ওঠে না। সেগুলো যদি কাউকে দেওয়া যায়, তাঁরা অন্তত ব্যবহার করতে পারবেন।। তাই আমিও বেশ কিছু শীতবস্ত্র দিয়েছি ওই ক্লাবকে।’’
ক্লাব সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৪ নভেম্বর, শিশুদিবসের দিন এই উদ্যোগের কথা ভাবেন ক্লাব সদস্যদের একাংশ। আলমারিতে পড়ে থাকা ব্যবহারযোগ্য পুরনো জামাকাপড়, যা আর ব্যবহার করা হয়ে ওঠে না, তা প্রত্যেক বাড়ি থেকে সংগ্রহ করে নিয়ে একটি বস্ত্রবাজার করার কথা চিন্তাভাবনা করা হয়। ঠিক হয়, সপ্তাহে দু’দিন ওই ক্লাবের সামনেই বস্ত্রবাজারে পুরনো জামাকাপড়ের দোকান খোলা হবে। যেখান থেকে গরিব মানুষ স্বচ্ছন্দে নিজের পছন্দমতো পোশাক নিয়ে যেতে পারবেন। একইসঙ্গে এলাকার সাধারণ মানুষজনও যে কোনও সময়ে পুরনো ব্যবহারযোগ্য পোশাক দিয়ে ওই দোকানের ভাঁড়ার ভরতে পারবেন।
১৪ নভেম্বর দুপুরেই ওই বস্ত্রবাজারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয় এলাকার দশটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গরিব শিশুদের নতুন শীতবস্ত্র দেওয়ার মাধ্যমে। এই বস্ত্রবাজারের উদ্বোধনে এসেছিলেন তেহট্ট নাটনা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের বিএসএফ জওয়ানেরা।
ক্লাব সম্পাদক দেবাশিস গোস্বামী বলেন, ‘‘ক্লাবের সব সদস্য এই উদ্যোগের জন্য খুবই পরিশ্রম করেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy