গত বছর রাসে সাং। ডান দিকে, এ ভাবে ঘেরাটোপে দেখতে হবে চাষাপাড়া বুড়িমার প্রতিমা। নিজস্ব চিত্র।
করোনা বহু মানুষকে শারীরিক ও সামাজিক ভাবে অত্যন্ত অসহায় করে তুলেছে। অনেক মানুষ রোগীক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন। চিকিৎসা করাতে গিয়ে অনেকে অত্যন্ত সমস্যায় পড়ছেন। অনেক টাকাও খরচ হচ্ছে। হোটা বিশ্ব লড়াই করছে অস্বাভাবিক একটা পরিস্থিতির সঙ্গে। এই রকম অবস্থায় কোনও কিছুর তোয়াক্কা না করে কৃষ্ণনগরের কিছু মানুষ জগদ্ধাত্রীর সাঙের ব্যাপারে অনড় মনোভাব দেখানোয় অনেকেই বিস্মিত এবং আহত।
যেখানে দুর্গাপুজো, কালীপুজো, ছটের মতো বড় উৎসবে অত্যন্ত সংযমের সঙ্গে পালিত হয়েছে, বাজি প্রায় সম্পূর্ণ বর্জন করা হয়েছে সেখানে সাঙ বাদ দিতে এত আপত্তি কেন তা দায়িত্বশীল নাগরিকদর বোধগম্য হচ্ছে না।
এখন অনেকেই করোনার মতো উপসর্গ দেখা দিলে পরীক্ষা না-করিয়ে নিজেরাই ওষুধ কিনে খেয়ে নিচ্ছেন। মৃদু, মাঝারি বা উপসর্গহীন রোগীদের অনেকে ১৪ দিন ঘরে থাকার নিয়ম না মেনে প্যারাসিটামল খেয়ে দিব্যি রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অবিবেচক কিছু মানুষ আবার মাস্ক বর্জন করতে চেয়ে আন্দোলন শুরু করেছেন জেলায়। এই সব কিছুর সঙ্গে জুড়়েছে সাঙের দাবি।
সদ্য করোনামুক্ত স্কুলশিক্ষক প্রদ্যুম্ন খাঁ বলেন, ‘‘অবাক লাগছে এঁদের দাবি শুনে। মনে হয় এঁরা কেউই এই কঠিন পরিস্থিতি কাছ থেকে দেখেননি। দোতলায় আমি গৃহবন্দি। বয়স্ক বাবা-মা এক তলায়। সব সময় ভয়ে থাকতাম, এই বুঝি তাঁদের কিছু হয়ে যায়। আরও বেশি ভয় হতো এই কারণে যে, সেই মুহূর্তে তাঁদের কিছু হলে আমি কাছে যেতে পারবো না। বাইরের কেউও আসবেন না সাহায্যের জন্য।’’ তাঁর বাবা প্রদীপ খাঁ বলেন, ‘‘কোভিড হাসপাতালে অক্সিজেন নেই, রোগী আর বাড়়লে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভেঙে পড়়বে, সে সব নিয়ে কোনও আন্দোলন নেই। অথচ সাঙ নিয়ে আন্দোলন চলছে।’’
লেখক তমাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘যুব সমাজ আজ দিশাহীন। তাঁরা অবদমিত আবেগের বহিঃপ্রকাশ খুঁজছে তাৎক্ষণিক উত্তেজনার মধ্যে। তাই হয়তো সাঙ নিয়ে এত উদগ্রীব তাঁরা।’’ আবার মনোবিদ মোহিত রণদীপ মনে করেন, ‘‘বর্তমান প্রজন্ম কে সর্বস্তরে আত্মকেন্দ্রিক ভাবে বড়় হয়ে ওঠার যে শিক্ষা আমরা দিচ্ছি তার একটা বড় ভূমিকা এ ক্ষেত্রে আছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy