Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Murshidabad

‘পড়াশোনা বন্ধ, কাল বিয়ে’! মেয়ের বইখাতা পোড়ালেন বাবা-মা, মুর্শিদাবাদের নাবালিকা থানায়

বৃহস্পতিবার নাবালিকার অভিযোগ পেয়ে সেই রাতেই তার বাড়িতে যায় ভগবানগোলা থানার পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের মুখে বিয়ের কথা স্বীকার করা হলেও বইখাতা পোড়ানোর কথা অস্বীকার করেছেন নাবালিকার বাবা-মা।

—প্রতীকী ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
ভগবানগোলা শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯:৪৯
Share: Save:

সামনেই স্কুলে ইউনিট টেস্ট। বাড়িতে পড়াশোনা করছিল মেয়েটি। সেই সময়েই বইখাতা কেড়ে নিয়ে ‘ফতোয়া’ দেওয়া হল— ‘আজ থেকে পড়াশোনা বন্ধ’। মা-বাবা মেয়েকে বলে দিলেন, ‘‘আগামিকাল তোমার বিয়ে।’’ শুনেই কান্নায় ভেঙে পড়ে বছর পনেরোর নাবালিকা। কিন্ত স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, পড়াশোনা শেষ না করে কোনও ভাবেই বিয়ে করবে না সে। তাতে রেগে আগুন মা-বাবা! মেয়ের হাত থেকে বইখাতা কেড়ে নিয়ে পুড়িয়ে দিলেন তাঁরা। এর পরেই থানায় ছোটে নবম শ্রেণির ওই ছাত্রী। পুলিশের কাছে গিয়ে পরিবারের বিরুদ্ধে জোর করে বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তোলে সে। মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলার ঘটনা।

বৃহস্পতিবার নাবালিকার অভিযোগ পেয়ে সেই রাতেই তার বাড়িতে যায় ভগবানগোলা থানার পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের মুখে বিয়ের কথা স্বীকার করা হলেও বইখাতা পোড়ানোর কথা অস্বীকার করেছেন নাবালিকার বাবা-মা। পরিবার ছেড়ে সরকারি হোমে থাকার জন্য পুলিশের কাছে আর্জিও জানিয়েছে নাবালিকা। ঘটনা খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন।

পুলিশ সূত্রে খবর, নাবালিকা জানিয়েছে, তাকে বেশ কয়েক বার পাত্রপক্ষের সামনে হাজির করানো হয়েছে ইতিমধ্যেই। কিছু জিজ্ঞেস করলেই বাবা-মা বলতেন, ‘‘কেউ দেখতে এলেই কি আর বিয়ে হয়?’’ তাকে ঘুণাক্ষরেও জানতে না দিয়ে বিয়ের দিন পর্যন্ত ঠিক করে ফেলে পরিবার। নাবালিকার অভিযোগ, বিয়ের আগের দিন রাতে মা-বাবা তার বইখাতা পুড়িয়ে দিয়েছেন। বাধা দিতে গেলে বেধড়ক মারধরও করেন। নাবালিকা পুলিশের কাছে বলেছে, ‘‘আমি আরও পড়তে চাই। নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই। আমাকে না জানিয়ে বিয়ে ঠিক করা হয়েছে। রাজি না হওয়ায় বইখাতা পুড়িয়ে মারধর করা হয়। এ বাড়িতে থাকলে ওরা আমাকে জোর করে বিয়ে দিয়ে দেবে। আমি হোমে থাকব।’’

অন্য দিকে, বাবা-মায়ের বক্তব্য, তাঁদের অভাবের সংসার। মেয়ের বয়স বাড়ছে। ভাল পাত্র পেয়েছেন বলেই বিয়েতে না করতে পারেননি। তবে বইখাতা পোড়ানোর কথা অস্বীকার করেছেন তাঁরা। নাবালিকার মা বলেন, ‘‘গরিবের মেয়ে। যত তাড়াতাড়ি বিয়ে দেওয়া যায়, তত ভাল। অত আইন বুঝি না। দায়িত্ব কে নেবে?’’

পুলিশ জানিয়েছে, মেয়েটির বয়ান সংগ্রহ করা হয়েছে। রেকর্ড করা হয় মা-বাবার বয়ানও। পাশাপাশি, প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগে নাবালিকার বিয়ে দেওয়া আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ জানিয়ে পরিবারকে সচেতন করা হয়। মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার সুপার সুরিন্দর সিংহ বলেন, ‘‘নাবালিকার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ পৌঁছেছে। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Murshidabad Marriage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy